ব্রিটেনের রানী দ্বিতীয় এলিজাভেদ এর প্রতি মানুষের শ্রদ্ধা ও ভালোবাসা।

মোঃ রেজাউল করিম মৃধা।
ব্রিটেনের রানী এলিজাভেদ কতটা জনপ্রিয় ছিলেন। আজ ১৪ই সেপ্টেম্বর তার কফিন বাকিংহাম প্যালেস থেকে ওয়েস্টমিনিস্টারের সিটি হলে দেওয়ার ব্যাবস্থা থেকে দেখা যায়।জীবিত রানীর চেয়ে মৃত্যু রানীই যেন বেশী জনপ্রিয়।
ওয়েস্টমিনিস্টার থেকে হাইড পার্ক সহ সমগ্র সেন্টার লন্ডন লক্ষ লক্ষ মানুষের উপস্থিতি।সেন্টার লন্ডনে গাড়ি নিয়ে চলাচলে বর্তমানে চলছে বিধিনিষেধ। আন্ডার গ্রাউন্ড ই একমাত্র ভরসা। কিন্তু হাজার হাজার যাত্রী ধারন করা বেশ বেগ পেতে হয়েছে।
চ্যানেল এস নিউজ কভারেজ করতে কারেন্ট এফিয়ার্স এডিটর তানভির ভাই সহ মাইল এ্যান্ড থেকে আন্ডার করে ওয়েস্টামিনিস্টারে নেমে দেখি ওয়েস্টমিনিস্টার এবির রাস্তা বন্ধ। বিশাল ওয়াল দেওয়া হয়েছে। এখানের কিছু ফুটেজ নিয়ে হাঁটতে হাঁটতে সিটি হলের দিকে রওয়ানা হলাম। সিটি হলের সামনে ও হাজার হাজার মানুষ সেখানে রাস্তা বেরিকেড দেওয়া কিন্তু লোকের যেন কমতি নেই।
এরপর এমবার্কমেন্ট থেকে আন্ডার গ্রাউন্ডেড ডিস্ট্রিক লাইনে আবার ওয়েস্টমিনিস্টার হয়ে জুবলি লাইনে গ্রীন পার্কে নামলাম কিন্তু সেখানেও পুরো গ্রীন পার্ক বড় ওয়াল দিয়ে আটকানো পুলিশ এবং সিকিউরিটি সবাইকে হেঁটে হেঁটে হাইড পার্কে যেতে বলছেন। হাইড পার্কে বড় পর্দায় রানী কফিন নেওয়ার দৃশ্য সরাসরি সমপ্রচার করা হবে।
আপনারা জানেন হাইড ব্রিটেনের একটি বৃহৎ এবং ঐতিহাসিক পার্ক। লক্ষ লক্ষ মানুষ এখানে একসাথে সমবেত হতে পারে। রানীর কফিন দেখার জন্য লক্ষাধিক মানুষের উপস্থিতি বলে দেয় রানী কতটা জনপ্রিয়।
রানীর শেষ বিদায় হবে আগামী ১৯শে সেপ্টেম্বর। ওয়েস্টমিনিস্টার এ্যাবিতে সেখানে বিশ্বের অন্যান্য দেশের রাস্ট্র প্রধানরা সহ ৫০০ শত ভিআইপি অতিথি উপস্থিত থাকবেন। বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও উপস্থিত থাকার কথা রয়েছে।
ইতিমধ্যে বিশ্বের অধিকাংশ দেশের রাষ্ট্রপ্রধানকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। যুক্তরাজ্যের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক রয়েছে, এমন সব দেশের নেতাকে আমন্ত্রণ জানানো হচ্ছে। এ অনুষ্ঠানে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ও তার স্ত্রী ফার্স্ট লেডি জিল বাইডেন এবং কানাডা, অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রীরা অনুষ্ঠানে উপস্থিতির বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। এর মধ্য দিয়ে রানির শেষকৃত্য ঘিরে দেশটিতে অন্যতম বৃহৎ কূটনৈতিক জমায়েত হতে যাচ্ছে।
গত বৃহস্পতিবার স্কটল্যান্ডের বালমোরাল প্রাসাদে মারা যান রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথ। তার বয়স হয়েছিল ৯৬ বছর। আনুষ্ঠানিক ভাবে শেষ বিদায়ের পর উনসর ক্যাসেলে তাকে সমাহিত করা হবে।
রানীর ছিলেন মানবতার রানী। এজন্য তার মৃত্যুর খবরের পর থেকে বৃটেন সহ সারা বিশ্বে নেমে আসে শোকের ছায়া। স্কটল্যান্ড থেকে ইংল্যান্ড সব স্থানেই রানী প্রতি ভালোবাসার নির্দর্শ হিসেবে ফুলে ফুলে ভরে উঠেছে। রানীর কফিন বা তার মুখ দেখতে না পারলেও তার প্রতি শ্রদ্ধা এবং ভালোবাসার কমতি নেই। নিরাপত্তার কারনে বাকিংহাম প্যালেসে প্রবেশ করতে না পারলেও গ্রীন পার্কে ফুল দিয়ে ভালোবাসা এবং শ্রদ্ধা নিবেদন করে হাজার হাজার মানুষ।