ইংল্যান্ডে সেইফটি ইসুতে বিক্রী হচ্ছে না ব্লক টাওয়ারের হাজার হাজার ফ্ল্যাট।

মো: রেজাউল করিম মৃধা।
ইংল্যান্ডে স্থায়ী ভাবে বসবাসের জন্য একটি বাড়ি অথবা ফ্ল্যাট সবার প্রত্যাশা। সেই প্রত্যাশা বা স্বপ্ন পূরনের জন্য জীবনের সব পরিশ্রমের অর্থ দিয়ে কেনা ফ্ল্যাটটি যখন সেইফটি ইসুতে বসবাসের অযোগ্য হয়ে যায় তখন হতাশ হয়ে দূ:ক্ষে, কস্টে কান্না ছাড়া আর কিছুই করার থাকে না।
২০১৭ সালের ১৪ই জুন রাতে গ্রেনফিল্ড টাওয়ারে ভয়াবহ অগ্নিকান্ডের ঘটনা ঘটে।অগ্নিকান্ডে নারী, পুরুষ শিশু সহ মোট ৭২ জন আগুনে পুরে মৃত্যু বরন করেন। আরো ৭০ জন প্রানে বেঁচে গেলেও আগুনে পোড়ার দাগ বহন করে বেড়াচ্ছেন।এবং আরো যারা অগ্নিকান্ড থেকে বেঁচে গেছেন। কিন্তু সেই রাতের অগ্নকান্ডের দৃশ্য মন থেকে মুছে ফেলতে পারেন না কখনো।লন্ডনের কেন্জিন্টন বারার গ্রেন ফিল টাওয়ারের অগ্নকান্ড ইংল্যান্ড এ যাবত কালের সব চেয়ে ভয়াবহ অগ্নিকান্ড।
এরপর থেকে সুউচ্চ ব্লক টাওয়ার গুলির সেইফটি নিয়ে কাজ শুরু করে সরকারের হাউজিং ডিপার্টমেন্ট। গবেষনায় উঠে এসেছে গ্লাডিং এর ফলে টাওয়ারে কোথাও আগুন লাগলে অতি দ্রুত ছড়িয়ে পরে। এর পর সরকার টাওয়ার বিল্ডিং গুলির সেইফটি ইসু নিয়ে কাজ করছে।
৮ই নভেম্বর সোমবার সরকারের একজন মুখপাত্র বলেন,” সরকারের দায়িত্ব হচ্ছে জনসাধারনকে নিরাপদ বাসস্থান দেওয়া। জেনেশুনে কখনো জীবনকে ঝুঁকির মধ্যে ফেলে দিতে পারে না। যেসব ব্লক বা সুউচ্চ বিল্ডিং সেইফটি নিরাপদ নয় সেখান থেকে জনসাধারন বা বাসিন্দাদেরকে অন্যত্র সরিয়ে নেওয়া,”।
ইতিমধ্যেই এই ধরনের উঁচু বহুতল ভবন বা ব্লক টাওয়ার থেকে বাসিন্দাদের সরিয়ে ফেলা হচ্ছে। বাসিন্দাদের নিরাপত্তার জন্য অনেক বিল্ডিং ক্লাডিং সরিয়ে অন্য ধাতু ব্যাবহার করা হচ্ছে। বিল্ডিং মেরামত করা হচ্ছে। আবার কিছু বিল্ডিং পুরোপুরি ভেংগে ফেলেছে।
সম্প্রতি সেইফটি ইসুতে মাত্র তিনদিনের নোটিশে সুউচ্চ বিল্ডিং এর ফ্ল্যাট ছেঁড়ে অন্যত্র চলে যেতে হচ্ছে। টাওয়ার হ্যামলেটস কাউন্সিলের বে এলাকার ই-৩ রোমান রোড পাশে বহুতল আবাসিক ভবন ‘ক্লেয়ার হাউস’ এর সকল বাসিন্দাদেরকে।এখানে বসবাসরত ১২০টিপরিবার বসবাস করছিলেন। এর মধ্যে অধিক সংখ্যক বাংলাদেশী পরিবার রয়েছেন।ভবন কর্তৃপক্ষ বলা হয়েছে ভবনটি ভেঙ্গে পড়ার ঝুঁকিতে রয়েছে সেই সাথে সেইফটি ইসু আছে। তাই সবাইকে আসবাবপত্র ছাড়া শুধু মাত্র প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র নিয়ে বাসা ছেড়ে যেতে বলা হয়। এতে বিপাকে পরে শতশত মানুষ।
“ আজো গ্রেন ফিল টাওয়ারের অগ্নিকান্ডের মূল সুত্রপাত , কি ভাবে অগ্নিকান্ড ঘটলো সেই কারন খুঁজে বের করা হয় নাই। এলামাব্যাল ক্লাডিং যদি অগ্নিকান্ডের জন্য সহায়ক হয়ে থাকে তবে এখনো প্রায় ৫৬০০০ মানুষ এই সব বিল্ডিং এ বসবাস করছেন”। এদের কি হবে? এবং এই সব বিল্ডিং যা কিনেছেন সেই সব মালিকদের কি হবে? এর কোন সঠিক উত্তর কি কখনো পাওয়া যাবে?
১৯৭৪ সালে লন্ডনের নর্থ কেন্জিংটন বারার রেসিডেন্টদের জন্য ২৪ তলার এই টাওয়ার নির্মান করা হয়। সেই থেকে এখানে বারার লোকেরা এখানে বসবাস করে আসছিলেন। কিন্তু দু:খ জনক ভাবে ২০১৭ সালের ১৪ই জুন রাতে অগ্নিকান্ডের পর থেকে সরকারের টনক নড়েছ।
সরকারের মূখপাত্র আরে বলেন,” এই সব ঝুঁকিপূর্ন ফ্লাট বিক্রী না করতে। তবে বিক্রী করার ক্ষেত্রে বিধিনিষেধ না হলেও বিক্রী করতে পারছেন না।এর ফলে বিপাকে পরেছে মর্গেজ নিয়ে যারা ফ্ল্যাট কিনেছেন সেই সব ফ্ল্যাটের মালিকরা। না পারছেন নিজে বসবাস করতে না পারছেন ভাড়া দিতে কিন্তু মর্গেজ দিতে হচ্ছে। এই সব ফ্ল্যাটের মালিকরা আছেন মহাবিপদে।তাদের স্বপ্ন এখন শুধুই দু:স্বপ্ন।