| |

অবশেষে যুক্তরাজ্য এবং ইইউ ব্রেক্সিট বাণিজ্য চুক্তি।
নতুন এক বিজয় প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসনের।


মো: রেজাউল করিম মৃধা।

২০১৬ সালের ২৪শে জুনের গণভোটে যুক্তরাজ্য ইউরোপীয় ইউনিয়ন ত্যাগের পক্ষে ভোট দেওয়ার পরে এবং আলোচনায় কয়েক সপ্তাহের মিসড ডেডলাইন এবং আপাত বিচ্ছেদের ঠিক পূর্ব মূহুর্তে দীর্ঘ চার বছরেরও বেশি সময় পরে অনেক আলোচনা সমালোচনা, উত্তেজনা, চাওয়া পাওয়া , লাভ ক্ষতি হিসেবের পর আসে এই কাংক্ষিত ব্রেক্সি চুক্তি ২৪শে ডিসেম্বর ২০২০।

অবশেষে যুক্তরাজ্য এবং ইইউ ব্রেক্সিট বাণিজ্য চুক্তিতে সম্মত হয়েছে। দশ নম্বর ডাউনিং স্ট্রিট থেকে বলা হয়েছে, ‘আমরা নিয়ন্ত্রণ ফিরিয়ে নিয়েছি কিন্তু দুই পক্ষের স্বার্থ রক্ষা করে বছরের পর বছর ধরে কঠোর আলোচনা শেষ হওয়ার পরে ঐতিহাসিক  এই শুল্কমুক্ত  পণ্য বাণিজ্য  চুক্তি মঞ্জুর হয় ।

ইউরোপীয় ইউনিয়নের সাথে যুক্তরাজ্যের ভবিষ্যতের বাণিজ্য ও সুরক্ষা সম্পর্কের বিষয়ে একটি ঐতিহাসিক চুক্তি ক্রিসমাসের আগের দিন, ব্রেক্সিট ট্রানজিশন সময় শেষ হওয়ার এক সপ্তাহ আগে ডাউনিং স্ট্রিট থেকে একটি বিজয়ের ক্ষণনের প্রতিচ্ছবি ছড়িয়ে পড়ে।

৩১ ডিসেম্বর দেশটি একক বাজার ও শুল্ক ইউনিয়ন ছেড়ে যাওয়ার সাথে সাথে পণ্যগুলিতে শুল্কমুক্ত বাণিজ্য এবং পুলিশ ও বিচার বিভাগীয় সহযোগিতা বন্ধ করার নতুন ব্যবস্থা কার্যকর হবে।.

এই ঘোষণার পরে ডাউনিং স্ট্রিটের বরিস জনসন এবং ইউরোপীয় কমিশনের সভাপতি উরসুলা ভন ডের লেইনের মধ্যে ব্রাসেলসে তার বার্লেমন্ট সদর দফতরে চূড়ান্ত আহ্বান জানানো হয়েছিল।

গত ২৪ ঘন্টায়  অন্তত এটি পঞ্চম কল। নাগরিক পারমাণবিক সহযোগিতা এবং মাছ ধরা ও বিমান চলাচলের ক্ষেত্রে জ্বালানি আন্তঃসংযোগ থেকে শুরু করে বিভিন্ন বিষয়ে বিধান সম্বলিত বাণিজ্য চুক্তি – ২ হাজার পৃষ্ঠায় চলমান – সুযোগের ক্ষেত্রে নজিরবিহীন।

প্রধানমন্ত্রীর দপ্তর থেকে একজন মুখপাত্র বলেছেন: “চুক্তি হয়েছে।২০১৬ সালের গণভোটের সময় এবং গত বছরের সাধারণ নির্বাচনে ব্রিটিশ জনগণের যে প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছিল তা এই চুক্তির মাধ্যমে সরবরাহ করা হয়েছে।

ব্রেক্সিট চুক্তির ফলে ইউরোপ ও যুক্তরাজ্য বানিজ্যি ভাবে উভয় পক্ষেই লাভোবান হবে। নো ডিল বা চুক্তিবিহীন ব্রেক্সিট হলে সেটা সবার জন্যই হতো এক মরণ ফাঁদ।

ইইউ এবং ইউকে ব্রেক্সিটের চুক্তিতে একমত না হলে ২০২১ সালের ১লা জানুয়ারী থেকে ওয়াল্ড ট্রেড অরগানাইজেশন (WTO) এর নিয়ম অনুযায়ী পরিচালিত হতো।

এখন এই চুক্তির ফলে ইউরোপ এবং যুক্তরাজ্য তাদের সুবিধামত বানিজ্যিক সহ অন্যান্য চুক্তি করতে পারবে। এখানে (WTO) কোন কর্তৃত্ব থাকবেনা।

২০১৬ সালের ২৩শে জুন গণভোটের মাধ্যমে ৫১,৯ বেক্সিটের পক্ষে ভোট দিয় জনগণ । জনগণ পরিস্কার ভাবে জানিয়ে দিলো আমরা ই ইউ থাকবো না । এবার ঠেলা সামলাও। ভয় পেয়ে ডেভিড ক্যামেরন পালিয়ে গেলে এর দায়ভার পরে দলের অন্যতম কান্ডারী তেরেসা মের ঘাড়ে।সে ভাঁড়ে । সে ভারে তেরেসা মে একেবারে নতজানু ।যা কেই বেক্সিট্র দায়িত্ব দেওয়া হয় কিছুদিন যেতে না যেতেই পদত্যাগ করেন। কি বঝে করেন কি না বুঝে করেন কে জানে। প্রধানমন্ত্রী বার বার ব্রাসেলসে ই ইউ সাথে বৈঠক করেন। অনেক সময় তেরেসা মে ব্রেক্সিটকে কেন্দ্র করে পদত্যাগ করতে বাধ্য হন।

দায়িত্ব পরে সরকারি দল কন্জার্ভেটিভ দলের উপর। দলের মধ্যে নেতৃত্বের দৌড় শুরু হয়। দলের সমর্থকদের ভোটে প্রধান দলের প্রধান হন বরিস জনসন। বিরোধী দলের সমালোচনা ঠেকাতে এবং সরাসরি জনগনের রায় নিয়ে ২০১৯ সালের ডিসেম্বরে নির্বাচনে কন্জেরভেটিভ পার্টি ব্রেক্সিট সমর্থনে আরো বেশী সংখ্যক আসন পেয়ে প্রধান মন্ত্রীর দায়িত্ব নেন বরিস জনসন।

শুরু হয় ব্রেক্সিট আলোচনা অনেক ঝড় ঝাপটার পর ৩১শে ডিসেম্বর ২০২০ সালের শেষ মুহূর্ত এসে বারবার চেস্টা করে ব্যার্থ হয়েছেন কিন্তু হাল ছাড়েননি। কঠোর মনেবল এবং দেশের জনগনের রায় কে এবং নিজ দেশের স্বার্থ রক্ষা করে শেষ সময় এসে ব্রেক্সিটের এই চুক্তি এক নতুন বিজয় বরিস জনসনের।

ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন এবং ইইউ কমিশনের প্রেসিডেন্ট উরসুলা ফন ডার লেইন আলোচনার অবরুদ্ধকরণের প্রচেষ্টায় ফোনে ফোনে কথা বলে ক্রমশ আলোচনার দিকে ঝুঁকছেন। প্রধানমন্ত্রী শীঘ্রই জাতিকে সম্বোধন করবেন। তবে চুক্তি সত্ত্বেও, কাস্টমস চেক এবং আরও কিছু বাধা রয়েছে ১লা জানুয়ারির মধ্যে আলোচনার মাধ্যমে সমাধান হবে বলে আশা করা হচ্ছে।

ব্রেক্সিট চুক্তি এটি দুই পক্ষের জন্যই স্বাক্ষরিত সবচেয়ে বড় দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য চুক্তি৷ ২০১৯ সালে এই অঞ্চলে বাণিজ্যের পরিমাণ ছিল ৭৪৭ বিলিয়ন ইউরো৷ইইউ-এর প্রধান উরসুলা ভন ডার লিয়েন বলেছেন, “যুক্তরাজ্যের সঙ্গে তাদের একটি ‘ন্যায্য ও ভারসাম্যপূর্ণ’ চুক্তি হয়েছে”।

ব্রাসেলসে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, ‘“এটি ছিল একটি দীর্ঘ ও ঝড়-ঝঞ্ঝাপূর্ণ পথ। কিন্তু আমরা একটি ভালো চুক্তিই পেয়েছি”।

এদিকে বরিস বলেছেন, ‘আমরা ব্রেক্সিট সম্পন্ন করেছি। এটাই সবচেয়ে বড় অর্জন এবং যেসব সুযোগ আমাদের জন্য অপেক্ষা করছে তার পুরো সুবিধা তা জনগন ভোগ করবে।


Similar Posts