১৫ই আগস্ট, একই সাথে কালো অধ্যায় এবং বিশ্বাসের অমর্যাদা।
মো: রেজাউল করিম মৃধা ।
১৫ই আগস্ট নাম শুনলেই আৎকে উঠতে হয়। চোখে ভেঁসে উঠে বর্বরতার নির্মম ইতিহাস।এই নির্মমতার ইতিহাসে আমরা বিশ্বাসের মর্যাদ ধরে রাখতে পারি নাই।বংগবন্ধু বিশ্বস করতেন বাংলাদেশের কোন মানুষ তাকে হত্যা করতে পারবেনা। কিন্তু সেই বিশ্বাসের মর্যাদা আমরা কি রাখতে পেরেছি?
মৃত্যু সব সময়ই বেদনাদায়ক।মৃত্যু শোক ছায়ায় আপ্লুত করে প্রত্যেকেই। শোকের বার্তায় ব্যাথিত আমরা সবাই।আর সেই মৃত্যু বা হত্যা করা হয় কোন মহান ব্যাক্তিকে তাও আবার স্বপরিবারে।১৯৭৫ সালের ১৫ই আগস্ট এক মহান ব্যাক্তি ও তার পরিবারের মৃত্যু আমাদের সবাইকে স্মরন করিয়ে দেয় কালো এক রাতের। বিশ্বাস নিয়ে ঘুমিয়ে থাকলেও অবিশ্বাস্য ভাবে স্বপরিবারে নিসংশ হত্যা।
যদিও তর্কের খাতিরে ধরে নিলাম রাজনৈতিক আদর্শ অথবা ব্যাক্তি হিংসার পরিপ্রেক্ষিতে আমরা সহজ ভাবে মেনে নিতে পারিনা। কিন্তু তাই বলে স্বপরিবার হত্যা।যদি বংগবন্ধু অন্যায় করে থাকেন তার বিচার করতে পারতেন তাকে সাজা দিতে পারতেন কিন্তু স্বপরিবারকে করা শুধুই হত্যা নয় একটি গভীর ষড়যন্ত্র। সেই ষড়যন্ত্র এখন বিদ্যমান ।
আমরা সবাই জানি ১৯৭৫ সালের ১৫ই আগস্ট বাংলার ইতিহাসের এক কলংকময় দিন। এই দিনে বাংলার কিছু স্বার্থান্বেষী ঘাতক সুপরিকল্পিত ভাবে স্বপরিবার হত্যা করেছে বাংলাদেশের জাতীর জনক শেখ মজিবুর রহমান ও তার পরিবারকে।এই বাস্তব সত্যটা আমরা মেনে নিতে চাইনা কেন?
জাতির জনকের মৃত্যুতে জাতীয় শোক দিবস বাংলাদেশে পালিত একটি জাতীয় দিবস। প্রতিবছর এদিনটি জাতীয় ও রাষ্ট্রীয়ভাবে এ দিবসটি শোকের সাথে পালন করা হয়। এ দিবসে কালো পতাকা উত্তোলন ও বাংলাদেশের জাতীয় পতাকা অর্ধনিমিত রাখা হয়। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট তারিখে ।
এখানে প্রতিয়মান হয় ঘাতক গোস্ঠী কখনো বাংলাদেশ স্বাধীনতা বা বংবন্ধুকে মেনে নিতে পারেন।তাই বারবার অপপ্রচার করে এবং বাকশাল গঠন প্রকৃয়া নিয়ে বিভ্রান্তি সৃস্টি করে হত্যা কান্ডকে অন্য দিকে প্রভাবিত করার চেস্টা করেছিলো কিন্তু সেই চেস্টা কতটুকু সফল হয়েছে? নাকি কালের বিবর্তনে তারা নিজেরাই কলংকিত হচ্ছেন?
ইতিহাসের মহানায়ক, হাজার বছরের
শ্রেষ্ঠতম বাঙালি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের শাহাদাতবার্ষিকী।
১৯৭৫-এর এই কালো দিনটিতেই জাতি হারিয়েছে। বাংলার গর্ব, আবহমান বাংলা ও বাঙালির আরাধ্য পুরুষ, স্বাধীন বাংলাদেশের স্থপতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে। রক্তঝরা এই দিনটিতে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্রের শিকার হয়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান পরিবার-পরিজনসহ নৃশংসভাবে শহীদ হন।
ধানমণ্ডির ঐতিহাসিক ৩২ নম্বর সড়কের নিজ বাসভবনে। কিছু বিশ্বাসঘাতক রাজনীতিকের চক্রান্ত এবং সেনাবাহিনীর একদল বিপথগামী সদস্যের নির্মম বুলেটের আঘাতে বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে সেদিন প্রাণ হারান তার প্রিয় সহধর্মিণী বেগম শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব, তিন ছেলে মুক্তিযোদ্ধা শেখ কামাল, সেনা কর্মকর্তা শেখ জামাল ও দশ বছরের শিশুপুত্র শেখ রাসেল এবং নবপরিণীতা দুই পুত্রবধূ সুলতানা কামাল ও রোজী জামাল।
প্রবাসে থাকায় ভাগ্য গুনে সেদিন প্রাণে রক্ষা পান বঙ্গবন্ধুর দুই মেয়ে বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানা।
১৫ই আগস্টের সেই হত্যাকান্ডে আরও প্রাণ হারান বঙ্গবন্ধুর ছোট ভাই পঙ্গু মুক্তিযোদ্ধা শেখ আবু নাসের, ভগ্নিপতি আবদুর রব সেরনিয়াবাত, তার ছেলে আরিফ সেরনিয়াবাত, মেয়ে বেবী সেরনিয়াবাত, শিশুপৌত্র সুকান্ত বাবু, বঙ্গবন্ধুর ভাগ্নে শেখ ফজলুল হক মনি, তার অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী আরজু মনি, নিকটাত্মীয় শহীদ সেরনিয়াবাত, আবদুল নঈম খান রিন্টু এবং বঙ্গবন্ধুর জীবন বাঁচাতে ছুটে আসা রাষ্ট্রপতির ব্যক্তিগত নিরাপত্তা কর্মকর্তা কর্নেল জামিল উদ্দিন আহমেদসহ কয়েকজন নিরাপত্তা কমকর্তা ও কর্মচারী।
১৫ই আগস্ট আমাদের জন্য একটি স্মরনীয় দিন। বাংলাদেশ সহ বহিরবিশ্বের যেখানেই বসবাস করছেন বাংলাদেশীরা সেখানেই দিনটিকে বিশেষ গুরুত্বের সাথে পালন করা হয়।বাংলাদেশ আওয়ামীলীগ শুধু ১৫ই আগস্ট নয় পুরো আগস্ট মাস শোকের মাস হিসেবে পালন করে।সেই সাথে বিশ্বের বিভিন্ন দেশেও বংগবন্ধুর আদর্শের সৈনিকরা এবং আওয়ামীলীগ এর বিভিন্ন সংগঠন যথাযথো মর্যাদায় ১৫ই আগস্ট পালন করে বিভিন্ন কর্মসূচীর মাধ্যমে।
প্রিয়জন এবং স্বজন হারানোর বেদনা যেমন আছে সেই সাথে শোককে শক্তিতে রুপান্তরিক করে চলতে হবে আগামী পথ। শেখ মজিবুর রহমান সহ সেই দিনের হত্যা কান্ডে যারা জরিত থাকা ১১ জন আসামীকেই আইনের আওতায় এনে বিচার করা হয়েছে । এপর্যন্ত ৫ জনের ফাঁসি কার্যকর করা হয়েছে একজন স্বাভাবিক মৃত্যু হয়েছে বাকী ৫ জন বিভিন্ন দেশে পলাতক আছেন এদের রায় কার্যকর হলে তাদের আত্বা শান্তি পাবে। দেশে ন্যায় বিচার প্রতিস্ঠিত হবে।
১৫ই আগস্টের শোক কে শক্তিতে রুপান্তরিত করে বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশেকে উন্নতির দিকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন।গড়ে তুলতে যাচ্ছে জাতির পিতা বংগবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্নের সোনার বাংলা।