| |

ব্রিটেনে ভ্যাকসিন থেকে বন্চিত ৮০০,০০০ বৈধ কাগজপত্রহীন প্রবাসী।


মো: রেজাউল করিম মৃধা।

কভিড-১৯ বা করোনাভাইরস মোকাবেলায় ব্রিটেন ভ্যাকসিন কে বেশী দূরুত্ব দিয়ে সবার জন্য ফ্রি ভ্যাকসিন দেওয়ার পরিকল্পনা গ্রহন করলে আইনি জটিলতায় ভ্যাকসিন দেওয়া থেকে বন্চিত হচ্ছেন ৮০০,০০০ বৈধ কাগজপত্রহীন প্রবাসী বা আন ডকুমেন্ট ইমিগ্রেন্টস।

ভ্যাকসিন মিনিস্টার নাদিম জাওয়ারি বলেন,” ব্রিটেনের সকল নাগরিকদের জন্য ভ্যাকসিন ফ্রি এবং উন্মুক্ত । বয়স , পেশা এবং শারীরিক কন্ডিশন উপর ভিত্তি করে ড্যাটা অনুযায়ী এনএইচএসের মাধ্যমে সবাইকে পর্যায়ক্রমে ভ্যাকসিন দেওয়া হবে। তবে বৈধ কাগজপত্রহীন প্রবাসী বা আনডকুমেন্ট ইমিগ্রেনটসরা এই আওতার বাহিরে থাকবে,”।

মর্নিং স্টারের সাথে স্বাক্ষাৎকারে দি রেগুলারাইজ এর ফাউন্ডার মুনিয়া রাডজি বলেন,” বৈধ কাগজপত্রহীন ইমিগ্রেন্টরা সরকারি তালিকা ভুক্ত হতে চায় না। এবং ভ্যাকসিন নিতেও আগ্রহ নেই। তারা চায় শুধু কিভাবে করোনাভাইরস থেকে রক্ষা পাবে।এজন্য বিশাল সমস্যা সৃস্টি হচ্ছে,”।

আইনি বাধ্যবাধকতা থাকায় বৈধ কাগজপত্রহীন ইমিগ্রেন্টরা জিপি তে রেজিস্টার হতে না পারায় অনেকেই শুধু ভ্যাকসিনই নয় তাদের স্বাভাবিক চিকিৎসা সেবা থেকেও বন্চিত হচ্ছেন।

অবশ্য গত বছর রিফিউজি চ্যারিটির অধীনে নর্থ লন্ডনের হ্যারেন্জি কাউন্সিলে বৈধ কাগজপত্রহীন ইমিগ্রেন্টদের অনেকেই জিপিতে রেজিস্টার করে তালিকা ভুক্ত হয়েছেন। সেখানে কোন আইডি বা ডকুমেন্ট ছাড়া শুধু প্রভ অফ অ্যাড্রেস দেখিয়েই জিপির তালিকায় রেজিস্টার হয়েছেন।

ব্রিটেনে সবার জন্য স্বাস্হ্য সেবা ফ্রি হলেও আনডকুমেন্ট ইমিগ্রেন্টদের ক্ষেত্রে এই বৈশম্য প্রতিবাদে পাবলিক হেল্থকে মাইগ্রেন্টস রাইট্স গ্রুপ এবং হেল্ফ ফর হেল্ফলেস সংগঠন সরকারকে পরামর্শ দিয়ে আসছে। এই সংগঠনের সাথে অন্যান্য সংগঠন গুলি জোড় দাবী জানাচ্ছে বৈধ কাগজপত্রহীন দের ও ভ্যাকসিন দেওয়ার ক্ষেত্রে সমান সুযোগ দিতে হবে।তা না হলে তাদের আন্দোলন এবং দাবী অব্যহত থাকবে।

ডক্টরস অফ দি ওয়াল্ড এর হেড অফ পলিসি অ্যান্ড এডভোকেসি কর্মকর্তা -আন্না মিলার বলেন,” সরকার বলছে আনডকুমেন্ট ইমিগ্রেন্টদের ফ্রি ভ্যাকসিন দেওয়া সম্ভব নয়। কিন্তু আমরা বলতে চাই এনএইচএস হোম অফিসের নিকট চার্চ করতে পারে কারন হোম অফিসের নিকট সবার ড্যাটা সংরক্ষিত আছে। অর্থ সংগ্রহ করবে হোম অফিস আর স্বাস্হ্য সেবা দিবে এনএইচএস ।আমরা চাই সবার জন্য করোনা ভ্যাকসিন। তানাহলে ৮০০,০০০ আনডকুমেন্ট ইমিগ্রেন্ট এই ভ্যাকসিন সেবা থেকে বন্চিত হবে”।

বৈধ ভাবে ব্রিটেনে প্রবেশ করে যারা সময়মত বৈধ হতে পারেন নাই বিভিন্ন সময় তাদের কাজের স্থান থেকে অথবা থাকার স্থান থেকে সরকারে প্রশাসক বাহিনী বা পুলিশ রেড দিয়ে ধরে এনে ডিটেনশন সেন্টারে অন্য ক্রিমিনাল দের সাথে রেখে তাদের জীবনকে ধংস করে দিয়েছে এমন অনেক অভিযোগ আছে।সেল্টার সেন্টার বা ডিটেনশন সেন্টারে অমানবিক নির্যাতন, অবহেলা, স্বাস্থ্যকর খাবার না দেওয়া,অস্বাস্থ্যকর নোংরাপরিবেশ এবং বিনা চিকিৎসার কারনে অনেকেই মানুষিক ভারসাম্য হারিয়ে ফেলেছেন। অনেকের মৃত্যু পর্যন্ত হয়েছে। এসব বিবেচনায় এদের ভ্যাকসিন দেওয়া জরুরি।

ব্রিটেনে দীর্ঘদিন বৈধ কাগজপত্রহীন অভিবাসীরা অবস্থান করছেন।আবার অনেকে হয়তোবা সাগর পারি দিয়ে এসেছেন তারাও ব্রিটেনে অবস্থান করছেন।কভিড-১৯ বা করোনাভাইরস মহামারির দুর্যোগের মুহুর্তে ভ্যাকসিন দিয়ে তাদের সুস্থ্য রাখা এবং বিশেষ ক্ষমায় অপেক্ষার প্রহর থেকে ডকুমেন্ট দেওয়ার তাদের জন্য বিশেষ সুযোগ দেওয়া সরকারের অত্যাবশ্যক ।

কভিড-১৯ বা করোনাভাইরস মহামারিতে সরকারের প্রধান লক্ষ হওয়া উচিত জীবন বাঁচানো। তারপর অপরাধের বিচার। জীবন রক্ষা না হলে বিচার কার হবে। অনেক মানবিক সংগঠন, চ্যারিটি সংগঠন এবং সেবামুলক সংগঠন মনে করেন বৈধ কাগজপত্রহীন প্রবাসীদের বা আনডকুমেন্ট ইমিগ্রেন্টদের শুধু ভ্যাকসিন নয় তাদের বৈধকরন করা হোক। এতে আনডকুমেন্ট ইমিগ্রেন্টদের ডকুমেন্ট দিলে সরকারের অর্থনৈতিক সহ সব দিকে লাভোবান হবে।


Similar Posts