স্টুডেন্ট ভিসায় ব্রিটেনে আসার নিয়ম সহজ হচ্ছে।
আবেদন শুরু ১লা জুলাই থেকে ।
মো: রেজাউল করিম মৃধা।
২০২১ সালের প্রথম থেকেই ব্রিটেনে দ্বার উন্মুক্ত হচ্ছে সারা বিশ্বের মেধাবী স্টুডেন্টদের জন্য। কেননা ৩১শে ডিসেম্বর ব্রেক্সিট কার্যকর প্রকৃয়া শেষ হয়েছে। এতদিন ইউরোপীয় ছাত্রছাত্রীদের অবাধে ব্রিটেনে এসে লেখাপড়ার সুযোগ থাকলেও ব্রেক্সিটের পর সারা বিশ্বের সবার জন্য সমান অধিকার প্রতিস্ঠিত হয়েছে।
ব্রিটেনের শিক্ষা ব্যাবস্থা সারা বিশ্বে সমার্দ্রিত। বিদেশি শিক্ষার্থীদের আকৃষ্ট করতে সহজ নিয়ম করছে ব্রিটেন।নতুন নিয়ম অনুযায়ী, দেশটিতে পড়তে আসা শিক্ষার্থীরা তাদের কোর্স শেষ করার পর কমপক্ষে দুই বছর স্বাধীনভাবে কাজ ও পরিবারসহ বসবাসের সুযোগ পাবেন।
আগামী ১লা জুলাই থেকে এ নিয়ম কার্যকর হবে। ব্রিটেনে যারা পিএইচডি বা ডক্টরাল সমমানের কোর্স করবেন তাদের ক্ষেত্রে এ ভিসার মেয়াদ হবে ৩ বছর।
আর গ্রাজুয়েশন শেষ করলে মিলবে আরো ২ বছরের ভিসা। ব্রিটিশ ইমিগ্রেশনের নতুন এ নিয়ম ২০২১ সালের ১ জুলাই থেকে বাংলাদেশিসহ দেশটিতে বসবাসরত বিদেশি শিক্ষার্থীদের জন্য আবেদনযোগ্য হবে।
সে জন্য পয়েন্ট ভিত্তিতে লেখাপড়ার সুযোগে বিশ্বের অন্যন্য দেশ থেকে ছাত্রছাত্রী ব্রিটেনে আসার রাস্তা সহজ করা হচ্ছে।
সহজ নিয়মে ভিসার জন্য আবেদন শুরু হবে আগামী ১লা জুলাই ২০২১ থেকে।
স্টুডেন্ট ভিসায় আসতে হলে অবশ্যই ৭০ পয়েন্ট অর্জন করতে হবে।
৭০ পয়েন্ট যেভাবে পয়েন্ট গুলি পাবেন।-
যেমন:
১/ ৫০ পয়েন্ট,স্পন্সর প্রতিষ্ঠান থেকে ভর্তি পত্র।
২/ ১০ পয়েন্ট পাবেন আর্থিক সক্ষমতার সার্টিফিকেট।
৩/ ১০ পয়েন্ট পাবেন ইংরেজী টেস্ট পাশ করে।
যারা বিলেতে পড়াশুনা করতে আসতে চান তাদের অবশ্যই ইংরেজি ভাষায় উপযুক্ত দক্ষতা থাকতে হবে। ইংরেজি ভাষায় যারা খুবই দুর্বল বা ভাষার ব্যাপারে ন্যূনতম রিকোয়ারমেন্ট যারা পূরণ করতে অক্ষম তাদের বিলেতে পড়াশুনা করতে আসার কথা চিন্তা না করাই ভালো।
এলপিসি ও শিক্ষকতায় পিজিসিই-র মতো পেশাদার কোর্স সম্পন্নকারীরাও এ সুযোগ পাবেন। এর আগে ২০০৮ থেকে ২০১২ সাল পর্যন্ত দেশটিতে পোস্ট স্টাডি ওয়ার্ক ভিসা চালু ছিল।করোনাভাইরাস মহামারি ও ব্রেক্সিটের পর শিক্ষার্থীদের আকৃষ্ট করতেই এ সুযোগের ঘোষণা দিয়েছেব্রিটিশ সরকার।
ব্রেক্সিটের পর ফি বেড়ে যাওয়ায় ব্রিটেনে ইউরোপ থেকে শিক্ষার্থী আসা কমবে। সে কারণে বাংলাদেশ ভারত সহ বিশ্বের অন্যান্য দেশের শিক্ষার্থীদের আকৃষ্ট করতেই এ উদ্যোগ।
কোর্স চলাকালীন সময়ে শিক্ষার্থীর স্বামী বা স্ত্রী’ এবং সন্তান ব্রিটেনে থাকলে তারাও দুই বা তিন বছরের করে ভিসা পাবেন। স্পাউজ এক্ষেত্রে ফুলটাইম কাজের অনুমতি পাবেন। তবে এ ভিসার মাধ্যমে কোনও শিক্ষার্থী নিজের দেশসহ ব্রিটেনের বাইরে থেকে কোনও স্পাউজ ব্রিটেনে আনতে পারবেন না।
বাংলাদেশ থেকে যেকোনো শিক্ষার্থী এ সুবিধায় আবেদন করতে পারবেন। আবেদনকারী শিক্ষার্থীকে প্রথমে স্পনসর শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে একটি ভর্তির নিশ্চয়তাপত্র বা কাস রেফারেন্স নম্বর সংগ্রহ করতে হবে। এর জন্য শিক্ষার্থী পাবেন ৫০ নম্বর।
সংশ্লিষ্ট শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে আবেদনের পর শিক্ষার্থীর কাগজপত্র যেমন সার্টিফিকেট, মার্কশিট ইত্যাদি যাচাইয়ের পর স্পনসর শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান কাজ ইস্যু করবে। কিছু শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে আবেদনপত্রের সঙ্গে আপনি কেন সেখানে পড়তে চান, তা বর্ণনা করে একটি রচনা লিখে জমা দিতে হয়।
এ ছাড়া দুটি রেফারেন্স লেটারও লাগতে পারে আপনার পুরোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষকদের কাছ থেকে। এটা অবশ্য স্পনসরকারী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের নীতিমালা অনুযায়ী প্রযোজ্য। শিক্ষার্থীর আর্থিক সক্ষমতা প্রমাণের জন্য মিলবে ১০ পয়েন্ট।
ব্রিটেনে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সংশ্লিষ্ট কোর্সের সম্পূর্ণ টিউশন ফি প্রদান এবং প্রতি মাসে থাকা-খাওয়ার ব্যয়ভার বহন করার জন্য প্রয়োজনীয় অর্থ প্রস্তুত আছে, এটা শিক্ষার্থীকে প্রমাণ করতে হবে। কোর্স ফিতে সাধারণত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও সংশ্লিষ্ট কোর্স অনুযায়ী তারতম্য লক্ষ করা যায়।
অনেক মধ্যবিত্ত ও নিম্নমধ্যবিত্ত পরিবার তদের শেষ সম্বলটুকু বিক্রি করে তাদের ছেলেমেয়েদেরকে বিলেত পাঠিয়েছিল উচ্চশিক্ষা লাভের আশায়। কিন্তু বিলেতে এসে কঠিন ও বৈপরিত পরিবেশে, একদিকে হোম অফিসের ঘনঘন নিয়ম-পদ্ধতি ও আইন পরিবর্তনের কারণে এবং অপরদিকে কলেজগুলো তাদের আকাশচুম্বি ফিস নিয়ে বন্ধ হয়ে যাওয়া বা উধাও হয়ে যাবার ফলে ঐসব ছাত্র/ছাত্রীরা পড়েছে মহাবিপাকে।
এখানে কিছু তথ্য দেওয়া হয়েছে গাইড হিসাবে। ক্রম পরিবর্তনশীল ইমিগ্রেশন–সংক্রান্ত নিয়মের তথ্যাবলিতে কিছুটা তারতম্য হতে পারে। এ বিষয়ে বিস্তারিত নিয়মাবলি যুক্তরাজ্যের সরকারি ওয়েবসাইটে দেওয়া আছে। আগ্রহীরা সেখান থেকে প্রয়োজনীয় তথ্যাবলি সংগ্রহ করতে পারবেন।