|

সংকট থেকেই সম্ভবনা।
এবং একটি সোনালী দিনের অপেক্ষা ।


মো: রেজাউল করিম মৃধা। লন্ডন।

রাত যত গভীর হয়, নেমে আসে ঘোর অন্ধকার।

ঘোর অন্ধকারের পর অপেক্ষা করে ভোরের সূর্য।

রাত যত গভীর হবে , ভোর তত কাছে আসবে।

বিপদ যত বড় , বিপদ শেষে তার ফল অনেক বড়।ভয় কে জয় করাই হচ্চে আমাদের অন্যতম কাজ।

ইসমলামের দৃস্টিতে বিপদ বা বালামসিবত দিয়ে আল্লাহ বান্দার ইমানের পরীক্ষা করেন। বিপদে ধর্য্য ধারনের কথা হাদিসে বহুবার উল্লেখ্য করা হয়েছে। বিজ্ঞানী ম্যাথিউ সহ অনেকেই বলেছেন। পৃথিবী ভারসাম্য রক্ষার জন্য, বিভিন্ন সময় বিভিন্ন মহামারি আসবে। এটা মেনে নিতে হবে। ক্ষয়ক্ষতি, প্রান হানি এবং বিপর্যয়ের পর সুফলতা ভোগ করবে পরবর্তীতে।

কবি বলেছেন,

ধ্বংস দেখে ভয় কেন তোর?

প্রলয় নূতন সৃজন বেদন!

আসছ নবীন জীবন হারা

অসুন্দরে করতে ছেদন!

ভেজ্ঞে আবার গড়তে জানে সে চির সুন্দর।

মহামারিকে আমরা ভয় পেলেও ,মহামারি ঠেকাতে বিশ্ব ব্যাপী চলছে নানা উদ্যোগ। একই সঙ্গে চলছে মহামারি–পরবর্তী বিশ্বের রূপটি কেমন হবে? একটা বিষয় নিশ্চিত, ভালো বা মন্দ—যেমনই হোক, এই সংকট অভাবনীয়ভাবে বদলে দেবে সামাজিক বিন্যাস।করোনা মহামারি আমাদের গোটা ব্যবস্থার ওপর এক ভয়ানক অভিঘাত সৃষ্টি করেছে। এর ফলে দীর্ঘ সময় ধরে রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক মেরুকরণের যে ধারা তা থেকে আমাদের বের হয়ে আসার সম্ভাবনা সৃষ্টি হয়েছে। এটি আমাদের বৃহত্তর জাতীয় সংহতিতে সহযোগিতা করবে।

আত্মতুষ্টি ও নিষ্পাপ মনোভাবের ক্ষয়ই এখন বিশ্বে বেঁচে থাকবার কৌশল, যা আমাদের যাবতীয় কাজকেই বদলে দিতে পারে।কোনো কিছু স্পর্শ করা ঝুঁকি পূর্ণ।কারও সঙ্গে থাকা বা আবদ্ধ কোনো জায়গায় শ্বাস নেওয়াটা ঝুঁকিপূর্ণ।কিন্তু যারা এই সময়ের মধ্য দিয়ে যাচ্ছেন,তাদের মন থেকে এসব কখনোই পুরোপুরি মুছবে না। বাড়িয়ে দেওয়া হাত না ধরে বা মুখ স্পর্শ না করে পিছিয়ে আসাই আমাদের স্বভাবজাত হয়ে উঠতে পারে। দূর থেকে থেকে সালাম বিনিময়।আমরা সবাই আচ্ছন্ন হতে পারি বিভিন্ন সংস্কারে, কেউই হয়তো আর বারবার হাত ধোয়ার অভ্যাস ছাড়তেই পারব না।

রাজনৈতিক ভাবে হয়তো কোন দেশ বিশ্ব অর্থনীতির দাপট চালাবে বা বিশ্ব ক্ষমতাবান হবে সেটা এখন বলার সময় আসেনি। তবে চীন বা আমেরিকার চির প্রতিদ্বন্দ্বীতা হয়তো অতিরেই প্রকাশ পাবে। তবে এই মহামারিতে একটি বিষয় পরিস্কার ধনীরা হবেআরো ধনী আর গরীবরা হবে আরো গরীব।আর শাসক মোড়লেরা প্রমান করবে কে কার চেয়ে বেশী শক্তিশালী।

মহামারির ফলে যদি আমরা বুঝতে পারি যে, বৈশ্বিক ইস্যুগুলো মোকাবিলায় রাষ্ট্রসমূহ পরস্পর সহযোগিতার প্রয়োজন, তবে তা এক মহৎ উদ্দেশ্য বাস্তবায়ন করবে।করোনা-পরবর্তী সময়ে কেমন হবে বিশ্ব, তা নিয়ে গবেষকরা দিচ্ছেন নানা মত। অনেকে মনে করছেন ভবিষ্যতে নাগরিকদের কেন্দ্রীয়ভাবে মনিটরিং করা হতে পারে। শুধু আপনি কী করছেন তা-ই নয়। এমনকি আপনার শারীরিক অবস্থার সম্পূর্ণ তথ্য থাকবে সরকারের কাছে।

আমাদের এই ঘরে থাকার মধ্যে ভালো ও মন্দ দুদিক ই পরিলক্ষিত হয়েছে, আমার কাছে মনে হয় ঘরে বলে

অনেক সময় হাতে পাচ্ছেন, এতে অনেকেই নিয়মিত নামাজ আদায় করছেন।বেশী বেশী কোরয়ান পড়ছেন।আমার এক বন্ধু মোখলেছুর রহমান, সেদিন ফোন করে সমাচার জিজ্ঞাসা করলেন। সাথে বললেন তার যাপিত জীবন, তিনি যখন বললেন ,” আমি প্রতিদিন কোরয়ান শরীফ পড়ি “। তখন মনটা আনন্দে ভরে গেল । মনে হলো এ লকডাউন স্বার্থক হয়েছে। মোখলেছ ভাইর মতো অনেকেই হয়তো কোরয়ান পড়ছেন। না পড়লে ও সবাই দোওয়া দরুদ পড়ছেন।

সবার জন্য দোওয়া করছেন এবং দোওয়া চাচ্ছেন।এতেই বুঝা যায় আমরা সবাই আল্লাহর প্রতি বেশী আগ্রহী হচ্ছি। এ মহামারি থেকে তার কাছে পানা ও রহমত চাচ্ছি।

অবশ্য ঘরে থাকতে থাকতে অনেকে অসুস্থ্যি ফিল করছেন। মাঝে মধ্যে যে ঝগড়া ঝাটি হচ্ছে না তা নয়। তবে শিশুরা কিন্তু আনন্দেই আছে বাবা মা কে কাছে পাচ্ছেন। একটু যারা বড় ছাত্র/ছাত্রী ঘরে অঢেল সময় অন লাইনে লেখাপডা এর পর কম্পিউটারে গেইমস অথবা ভাই বোন দের সাথে অথবা বাবা মার সাথে লুডু, দাবা সহ পারিবারিক ভাবে খেলা ধূলা করছে। আর যাদের গার্ডেন আছে তাদের জন্য একটু বাড়তি আনন্দ আর কি? বাড়ীর সামনে বের হতে না পারলেও গার্ডেনে খেলাধূলা সহ গার্ডেনিং এ সব্জি বাগান করে মহা আনন্দে সময় কাটাচ্ছেন।

ছেলে-মেয়েরা বাসায় বসে থাকতে থাকতে হাপিয়ে উঠছে।অনেক সময় জিজ্ঞেস করে “বাবা স্কুল কবে খুলবে? বাহিরে কবে যেতে পারবো? “ উত্তর দেয়ার মতো কিছুই নাই, কারণ উত্তর আমারই জানা নাই। বলি বাবা ধৈর্য্য ধরো ইনশাল্লাহ শীঘ্রই সব কিছু ঠিকক হয়ে যাবে। অবশ্যই একদিন সব ঠিকক হয়ে যাব। তখন এই দিন গুলির কথা বেশী মনে পড়বে।

করোনাভাইরস আতঙ্ক নয়, বরং সাধারণ স্বাস্থ্যবিধি মেনে চললেই অনেক সহজে করোনার সংক্রমণ ঠেকানো সম্ভব।এ রোগে আক্রান্তের সংখ্যা বেশি হলেও মৃত্যুর হার কম। কম বয়সীরা সাধারণ অসুস্থতায় দু-চার দিন থাকার পর সুস্থ হয়ে যায়। শুধু বয়স্ক ও রোগ প্রতিরোধের ক্ষমতা যাঁদের কম, তাঁদেরই ভয় বেশি। সুতরাং করোনাভাইরাস থেকে বাঁচার জন্য একটু সাবধানতাই এখন সবচেয়ে বেশি দরকার। কারও জ্বর-কাশি হলে নিজ উদ্যোগে বাসায় সাবধানে থাকা। অন্যদের সঙ্গে ছোঁয়াছুঁয়ি না করা।

অনেকে অবশ্য অসুস্থ রোগী কিম্বা বৃদ্ধ বাবা মা কে নিয়ে কিছুটা বিপাকে আছেন। আল্লাহ আপনাদের কে ধর্য্যের করার শক্তি দান করুন।মনে রাখবেন বাবা মা হচ্ছেন সব চেয়ে বড় নিয়ামত। ভরসা ও আস্থার শেষ স্থান। থাকতে মর্ম বুঝিনা। চলে গেলে কান্দি।

অনেকে আবার মহা দু:স্বচিন্তায় আছেন তাদের ব্যাবস্যা বানিজ্য বন্ধ কি হবে ভবিষ্যতে। সরকারের যেমন স্বদিচ্ছা আছে সকল ব্যাবসায়ীদের সহযোগিতার ও সকল জনসাধারনের দেখ ভাল করার সরকারে উপর যেমন আস্তা রাখতে হবে তেমনি আল্লাহর উপর পূ্র্ন বিশ্বাস রাখতে হবে। আল্লাহই এই মহামারি থেকে আমাদের হেফাজত করবেন।

এই মহামারির ঘোর অন্ধকার কেঁটে যাবে।

আসবে নতুন সোনালী দিন।

সেই প্রত্যাশায় আমরা।


Similar Posts