মহান বিজয় দিবস এবং প্রবাসীদের ভাবনা।
মো: রেজাউল করিম মৃধা।
মহান বিজয় দিবস ২০২০ সাল। এক ক্লান্তি কালের মধ্য দিয়ে অতিবাহিত হচ্ছে।করোনাভাইরস মহামারির তান্ডবে লন্ডভন্ড বাংলাদেশ সহ সারা বিশ্ব।আতংকিত, শংকিত আমরা সবাই তারপরও বিজয় দিবস এলে আমরা হয়ে উঠি উজ্জিবিত , অনুপ্রানিত এবং উচ্ছাসিত।
১৬ ডিসেম্বর মহান বিজয় দিবস বাঙালি জাতির শ্রেষ্ঠ অর্জন। আর এ অর্জন একদিনে সম্ভব হয়নি। এর জন্য বাঙালি জাতির ছিল সুদীর্ঘ তপস্যা ,সাধনা,চেস্টা ,ঐক্যবন্ধ সংগ্রাম এবং মুক্তিযাদ্ধ।
৭ মার্চ ১৯৭১ সালে জাকির পিতা বঙ্গবন্ধুর শেখ মজিবুর রহমানের সেই ঐতিহাসিক ভাষণের পর পাকিস্তানিরা আরও সোচ্চার হতে থাকে। ফল স্বরূপ ২৫ মার্চ মধ্যরাতে পাকবাহিনী নিরস্ত্র বাঙালির ওপর আক্রমণ চালায়। “
২৬ শে মার্চ কালুর ঘাট স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্র থেকে এম এ হান্নান স্বাধীনতার ঘোষনা পত্র পাঠ করেন।এবং পরের দিন
২৭শে মার্চ মেজর জিয়াউর রহমান স্বাধীনতার ঘোষনা পত্র পাঠ করেন। তিনি প্রথমে বি হাব অফ বংবন্ধু বলেননি। পরে উপস্থিত সকলের প্রতিবাদের মুখে দ্বিতীয় বার বি হাব অফ বংবন্ধু বলে স্বাধীনতা ঘোষনা পত্র পাঠ করেন। মেজর জিয়াউর রহমান স্বাধীনতার ঘোষক বা ঘোষনা পত্র পাঠকারি”।
মক্তিবাহিনী যখন আস্তে আস্তে সুগঠিত হতে থাকে তখন পাকবাহিনীর অত্যাচারের মাত্রা আরও বেড়ে যায়। গ্রামে-গঞ্জে ঘুমন্ত মানুষের বাড়িঘর জ্বালিয়ে দেয়, বেছে বেছে যুবকদের ধরে এনে গুলি করে হত্যা করে ও পৈশাচিক নির্যাতন চালায়।
বাংলার সাধারণ মানুষ এক সময় সম্মিলিত প্রয়াসে মুক্তিযাদ্ধে নেমে পড়ে। এখানে ছাত্র-শিক্ষক, কৃষক, কামার-কুমার, বুদ্ধিজীবী, শিক্ষিত-অশিক্ষিত, শিশু-কিশোর, নারী সবাই অংশগ্রহণ করে এবং দেশকে শত্রুমুক্ত করার আকাঙ্ক্ষায় তীব্র সংগ্রাম চালিয়ে যায়। দীর্ঘ নয় মাসের যুদ্ধের পর বাংলার মানুষের এ আকাঙ্ক্ষা পূরণ হয় ১৬ ডিসেম্বরে।
১৬ ডিসেম্বরের বিজয় কোনো সাধারণ বিজয় নয়, এটি আমাদের রক্তে রঞ্জিত চেতনার বিজয়, আমাদের জাতীয় আত্মপরিচয়ের বিজয়। এ বিজয় আমাদের কাছে তাই একইসঙ্গে প্রেরণার ও গৌরবের।
স্বাধীনতা বা বিজয়ের পর আমাদের দেশ অনেক দুর এগিয়েছে।
যোগাযোগ ব্যবস্থা তারমধ্যে অন্যতম।বাংলাদেশ মূলত গ্রামভিত্তিক দেশ। এ দেশের যোগাযোগ ব্যবস্থাও তাই উন্নত দেশের মতো হওয়ার কথা নয়। কিন্তু অবিশ্বাস্য সাফল্যের সঙ্গে বর্তমান সরকার আমাদের যোগাযোগ ব্যবস্থায়ও এনেছে যুগান্তকারী পরিবর্তন। কী গ্রাম, কী শহর, দেশের সামগ্রিক যোগাযোগ ব্যবস্থার দিকে তাকালে আমরা দেখি, আমাদের অবস্থার উন্নতি হচ্ছে। বিশেষ করে, যমুনা নদীর ওপর বঙ্গবন্ধু সেতু উত্তরবঙ্গের সঙ্গে রাজধানী ঢাকার যোগাযোগ স্থাপনে যে কী কার্যকরী ভূমিকা পালন করছে তা সবার জানা।
তথ্যপ্রযুক্তি ক্ষেত্রে অনেক সফলতা এনেছে।তথ্যপ্রযুক্তিতে বাংলাদেশ এখন আর পিছিয়ে নেই। শেখ হাসিনার ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ’-এর স্বপ্ন বাস্তবায়নের জন্য দেশে তথ্যপ্রযুক্তিগত নানাবিধ সুযোগ-সুবিধা সৃষ্টি করা হয়েছে।
দেশের সার্বিক উন্নয়নের জন্য যেসব পরিকল্পনা গ্রহণ করা হচ্ছে, তাতে অবকাঠামোগত উন্নয়ন বিশেষ গুরুত্বের। এক সময় বাংলাদেশ নামটির সঙ্গে যেভাবে দারিদ্র্য, অশিক্ষা, দুর্নীতি ইত্যাদি যুক্ত হয়ে পড়েছিল, তা বর্তমানে আর নেই বললেই চলে।
১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বরের বিজয় শুধু রাজনৈতিক বিজয়ের মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়। এ বিজয় এখন আমাদের আর্থ-সামাজিক-সাংস্কৃতিক অবস্থার ওপরও বিশেষ ভূমিকা রাখছে।
আমরা প্রবাসী আমাদের টাওয়ার চেয়ে দেওয়ার পালাই বেশী তারপরও একজন প্রবাসী হিসেবে চাইবো।
১/ ন্যায় বিচার। দেশে ন্যায় বিচারের বড়ই অভাব। দেশ যেভাবে এগিয়ে যাচ্ছে সেই সাথে যদি বিচার ব্যাবস্থা মজবুত হয় তবে তা হবে আরো মজবুত।
২/ভোটার আইডি বা স্মার্ট কার্ড। প্রবাসে বসে দূতাবাস বা এ্যাম্বাসীর মাধ্যমে পাসপোর্ট এর সাথে যেন স্মার্ট আইডি কার্ড দেওয়া হয়।
৩/ প্রবাসীদের হয়রানী বন্ধ করা। প্রবাসীর দেশে গিয়ে এয়ারপোর্ট থেকে শুরু করে পদে পদে হয়রানী স্বীকার হন। সেই সব হয়রানী বন্ধ করতে হবে।
৪/ প্রবাসীদের জমিজমা নিয়েও সব সময় হয়রানীর স্বীকার হন সেই সব হয়রানী বন্ধ করতে হবে।
৫/ বিনিয়গের জন্য উপযুক্ত পরিবেশ সৃস্টি করতে হবে। যাতে প্রবাসীরা দেশে গিয়ে বিনিয়োগ করতে পারেন।
৬/ নতুন এন্টারপেনার বা নতুন প্রজন্মকে বাংলা দেশে যেতে উৎসাহিত করা। এবং যোগ্যতা অনুযায়ী কাজ করার সুযোগ দেওয়া।
৭/ পর্যটন কেন্দ্র বা পর্যটকদের আকৃষ্ট করতে আইন শৃংখলা বাহির প্রতি আরো আস্থা অর্জন করা। যাতে বিদেশী পর্যটক সহ নতুন প্রজন্মের মানুষের হলি ডে করতে বাংলাদেশে যেতে উৎসাহিত হন।
৮/ নিরাপত্তা ব্যাবস্থা নিশ্চিত করা।নিরাপত্তার যদি ভালো হয় তবে দেশ এগিয়ে যাবে অতি দ্রুত। নিরাপত্তা হীনতায় প্রতিটি নাগরিক।আইন শৃংখলা বাহিনীকে দূরনীতি মুক্ত হতে হবে।তবেই নিরাপত্তা আরো জোরদার হবে।
৯/ প্রবাসী সেল গঠন করা। যার মাধ্যমে সঠিক বিচার নিশ্চিত করা।প্রবাসীদের অভিযোগ গ্রহন করা হবে। তদন্তের মাধ্যমে দোষীদের বিচারের মুখামুখি করতে হবে।
১০/ পাসপোর্ট এর মেয়াদ ১০ বছর করা।যার ফলে প্রবাসীরা অনেক উপকৃত হবেন। বারবার এম্বাসী বাস দূতাবাসে দৌড়াতে হবে না।
১১/ শক্তিশালী বিরোধী দল থাকলে দেশ সরকারের জবাবদিহিতা তেমনি বিরোধী দল ও শুধু বিরোধিতা না করে গঠন মুলুক সমালোচনা করে সরকারকে সহযোগিতা করবে।
মহান বিজয় দিবসে জাতির জনক বংবন্ধু শেখ মজিবুর রহমান, মুক্তিবাহিনীর সর্বাধিনায়ক এমএজি উসমানী, স্বাধীনতার ঘোষক বা পাঠকারী মেজর জেনারেল জিয়াউর রহমান, জাতীয় চার নেতা, ত্রিশ লক্ষ মানুষের আত্মদান, অগুনতি মা-বোনের সম্ভ্রম হারিয়েছেন তাদের এবং সকল শহীদদের প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা ।