| |

ব্রেক্সিটের পর লরি ড্রাইভার ও শ্রমিক সংকটে,
সুপারমার্কেটে খাদ্য সংকটের আশংকা।


মো: রেজাউল করিম মৃধা।

ব্রিটেন এক ক্লান্তিকাল অতিবাহিত করছে। একদিকে ব্রেক্সিট অন্যদিকে করোনা মহামারি। দিনের পর দিন সমস্যা বেড়েই চলছে।

প্রথমত:-

ব্রেক্সিটের কারনে ইউরোপের লরি ড্রাইভারের বিশাল এক সংকট। আগের মত সহজ ভাবে লরি বা ট্রাক ড্রাইভাররা ব্রিটেনে আসতে এবং যেতে পারছে না। এর ফলে ব্রিটেনে খাদ্য সংকট দেখা দিয়েছে।

দ্বিতীয়ত:-

করোনার কারনে অনেক শ্রমিক করোনায় আক্রান্ত হয়ে সেল্ফ আইসোলেশনে আছেন। এর ফলে

শ্রমিকদের অনুপস্থিতিতে সংকট ইতোমধ্যে আঁচ করা গেছে। এমন আশঙ্কায় পণ্য এবং জ্বালানি মজুত করে রাখতে শুরু করেছে ব্রিটেন বাসী।

ব্রিটেনের সুপার মার্কেট, পাইকারি বিক্রেতা ও হোলিয়াররা স্থায়ী খাদ্য ও জ্বালানির সরবরাহ নিশ্চিত করতে সরকারের পক্ষ থেকে প্রচেষ্টা শুরু করেছে। কিন্তু দোকানগুলোতে সাধারণ মানুষ অতিরিক্ত পণ্য ক্রয়ে এবং খাদ্য মজুত করায় খাদ্যে ঘাটতি দেখা দেয়।

বোতলজাত পানি, কোমল পানীয়, সালাদ এবং মাংস জাতীয় পণ্যের সংকট লক্ষ করা গেছে। যদিও লন্ডনের দোকানগুলোতে অন্যান্য খাবারের দাম কম ছিল। অনেক ব্যবসায়ীর মতে পরিস্থিতি খারাপের দিকে যাচ্ছে।

মাংস শিল্প সংস্থা জানিয়েছে, ব্রিটেনের খাদ্য সরবরাহের চেইনগুলো ‘ব্যর্থতার প্রান্তে’। কারণ, করোনা সংক্রমণের কারণে তীব্র শ্রমের সংকট দেখা দিয়েছে। কর্মী সংকটের কারণে অনেক দোকান বন্ধ রাখতে দেখা গেছে ব্যবসায়ীদের।

সুপারমার্কেটে পণ্য ঘাটতি দেখা গেছে এমন ধারণা থেকে অনেকেই অতিরিক্ত পণ্য ক্রয় করে জমা করে রাখার চেষ্টা করছেন। তবে সুপারমার্কেট থেকে অতিরিক্ত পণ্য ক্রয় না করতে ক্রেতাদের প্রতি আহ্বান জানানো হয়েছে।

ক্রেতাদের অভিযোগের ভিত্তিতে মুখ খুলেছে টেসকো, সেইনসবারি এবং লিডলের মতো কিছু দোকানও। জানানো হয়েছে, পণ্য ঘাটতির পেছনে মূলত একাধিক কারণ রয়েছে।

একটি হচ্ছে এইচজিভি চালকের চাহিদা।

টেসকো জানিয়েছে, এর ফলে প্রতি সপ্তাহে ৪৮ টন খাবার নষ্ট হচ্ছে। কারণ যেসব খাবার দোকানে আসার কথা ছিল তা নষ্ট হওয়ার জন্য পরে থাকছে।

এছাড়া কিছু সুপারমার্কেট বর্তমান কোভিড পরিস্থিতি ও ব্রেক্সিটের কারণে ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে।ব্রিটিশ রিটেইল কনসোর্টিয়ামও সমস্যাটি চিহ্নিত করেছে। তবে তারা জানিয়েছে, সুপারমার্কেটগুলো এখন সরবরাহকারকদের সঙ্গে মিলে কাজ করছে যাতে করে ক্রেতাদের চাহিদা মেটানো যায়।

বর্তমানে প্রায় ১ লাখ লরি ড্রাইভারের সংকট রয়েছে ব্রিটেনে। মূলত কোভিড ও ব্রেক্সিটের কারণেই এটি হচ্ছে। কোভিডের কারণে পরিবহনে ব্যাপক বাধানিষেধ আরোপ করা হয়েছে। হাউলেজ কোম্পানিগুলো জানিয়েছে, “ইউরোপীয় ড্রাইভাররা সিদ্ধান্ত নিয়েছে তারা ব্রেক্সিট ও কোভিডের কারণে ব্রিটেনে ফিরে আসবে না”।

লরি ড্রাইভার এবং শ্রমিকদের সেল্ফ আইসোলেশন শেষ হলে হয়তো সমস্যার উন্নতি হতে পারে। তবে অনেক ক্রেতা আতংকে খাদ্য মজুদ করছেন। এর ফলেও খাদ্য সংকট দেখা দিয়েছে।

প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন বলেন,” লরি ড্রাইভার ও দক্ষ শ্রমিকদের জন্য বিশেষ ভিসা পদ্ধতি চালু করা হবে। যাতে লরি ড্রাইভার ও দক্ষ শ্রমিক সংকট সমাধান হয় এবং ক্রেতাদের খাদ্য মজুত বা পেনিং বাই না করার আহ্বান জানান’”।


Similar Posts