ব্রিটেনের পাব এবং রেস্টুরেন্ট থেকেই ৩০ শতাংশ করোনা ছড়াচ্ছে

ব্রিটেনের ইনিউস্টিটিউড অফ ইকোনোমি এফিয়ার্সের গবেষনা রিপোর্টে বলা হয়েছে, ব্রিটেনে করোনাভাইরাস সংক্রমনের মধ্যে পাব এবং রেস্টুরেন্ট সবচাইতে এগিয়ে । ৩০ শতাংশ করোনা ছডায় শুধু পাব এবং রেস্টুরেন্ট থেকেই।
এদিকে ব্রিটেনের চীফ মেডিক্যাল অফিসার ক্রীস হুইটি বলেছেন, যেখানে মানুষের বেশী আনাগোনা সেখান থেকেই এই করোনাভাইরাস সংক্রমিত হয়। মানুষের শ্বাসপ্রশ্বস ও কাশির মাধ্যমে এই রোগ একজন থেকে অন্য জনে ছড়িয়ে পরে। তাই সবাইকে সামাজিক দূরুত্ব বজায় রেখে চলতে হবে।
করোনাভাইরাসের সংক্রমন বৃদ্ধি পাওয়ায় ইংল্যান্ডে রাত ১০টার পর রেস্টুরেন্ট, টেইকওয়ে, পাব বন্ধ করার ঘোষনা করে সরকার। এ নিয়ম যথাযথভাবে পালনের জন্য আইন শৃংখলা বাহিনী কাজ করে যাচ্ছে। চলমান নিয়ম ভেঙ্গে মাত্র ৪ মিনিট দেরিতে সার্ভিস করায় ইস্ট লন্ডনের একটি টেইওয়েকে ১০০০ পাউন্ড জরিমানা করেছে পুলিশ।
করোনা মহামারি আবারো বাড়তে থাকায় সেন্ট্রাল স্কটল্যান্ডের সকল পাব ও রেস্তোরা বন্ধের ঘোষণা দিয়েছেন স্কটিশ প্রধানমন্ত্রী নিকোলা স্টারজন।
নতুন নিয়ম শুক্রবার বিকাল ৬টা থেকে ২৫ অক্টোবর পর্যন্ত কার্যকর থাকবে। ফলে গ্লাসগো এবং এডিনবারার কেন্দ্রীয় অংশের সকল পাব ও রেস্টুরেন্ট বন্ধ রাখতে হবে। তবে স্কটল্যান্ডের অন্যান্য অংশের এসকল প্রতিষ্ঠান শুধুমাত্র আউটডোর এলকোহল বিক্রি করা যাবে। ।
যেসকল এলাকায় নিষেজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে, সেসকল শহরের মধ্যে রয়েছে গ্রেটার গ্লাসগো এন্ড ক্লাইড, ল্যানার্কশায়ার, ফোর্থ ভ্যালি, লোথিয়ান এন্ড আয়ারশায়ার এবং আরান হেলথ বোর্ড এরিয়া।
ফার্স্ট মিনিস্টার নিকোলা স্টারজন বলেছেন, এই উদ্যোগ নেয়া ছাড়া আর কোন পথ ছিলনা। অন্যতায় মাস শেষে সংক্রমন আরো বাড়ার ঝুঁকি রয়েছে।
ইংল্যান্ডের পরিস্থিতি আরো ভয়াবহ। বিশেষ করে নর্থ ইংল্যান্ডে করোনা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনের বাইরে চলে যাচ্ছে। এই পরিস্থিতিতে সরকারের উপদেষ্টা এবং মন্ত্রীদের চাপে আগামী সোমবার থেকে ম্যানচেস্টা, লিভারপুল, নিউক্যাসলসহ বেশ কিছু এলাকার পাব (পানসালা), রেস্তোরা বন্ধ রাখার ঘোষনা দেয়া হবে। এব্যাপারে বিকেলে অথবা স্বল্প নোটিশে ঘোষণা আসতে পারে বলে বিবিসি নিশ্চিত করেছে।
৩ স্থরের নতুন বিধি নিষিধের মধ্যে পাব রেস্টুরেন্ট বন্ধের পাশাপাশি সারা রাতে বাড়ির বাইরে থাকা নিষিদ্ধ হচ্ছে, বাড়ীর বাইরের করো সাথে দেখা করা যাবে না বা অন্য বাড়ীর লোকজন নিজের বাড়ীতে আনা যাবে না ( হাউজহোল্ড মিক্সিং নিষিদ্ধ)। এছাড়া একেক এলাকায় একেক ধরনের বিধি নিষেধ আরোপ করা হতে পারে।
ব্রিটেনে মহামারী করোনা মোকাবেলায় লোকাল বা জাতীয়ভাবে লকডাউনে যে সব প্রতিষ্ঠান বিশেষ করে হসপিটালিটি ইন্ড্রাস্ট্রির ব্যবসা অনাগত ভাবে বন্ধ করতে হবে অথবা ব্যবসা মন্দার কারনে যেসব প্রতিষ্ঠান বন্ধ হবে যাবে সেই প্রতিষ্ঠানের কর্মিরা পরবর্তি চাকরি পাওয়ার আগ পর্যন্ত তাদের বেতনের দুই তৃতীয়াংশ পাবেন ।
বৃটিশ চ্যানচেলর ঋশি সুনাক বলেন, “করোনাভাইরাস বিধিনিষেধের কারণে যুক্তরাজ্যের যে সকল ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখতে হবে, সেই সমস্ত প্রতিষ্ঠানের কর্মচারীদের তাদের বেতনের দুই-তৃতীয়াংশ ভর্তুকী দিবে সরকার’”।
সংবাদ মাধ্যম বিবিসি জানিয়েছে, আগামী প্রহেলা নভেম্বর থেকে এই স্কিম চালু হবে এবং এটি ছয় মাস পর্যন্ত চালু থাকবে। ট্রেজারির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, এই স্কিমটি চালু রাখতে প্রতি মাসে শত শত মিলিয়ন খরচ হবে।
সরকারি বিধিনিষেধ মেনে পাব এবং রেস্টুরেন্ট পরিচালনার প্রতি জোড় দিয়েছেন গবেষকরা।তা না হলে করোনাভাইরস মহামারি পরিস্থিতি হতে পারে আরো ভয়াবহ।