ফেলে আসা ইতালী, স্মৃতির পাতায় রংগীন দিন। (পর্ব-৫)
এর মধ্যে নদীর পানি গড়িয়েছে অনেক দূর।আব্দুল মোতালেব মোল্লা ভাই ভিক্টরিয়ার খোলা মার্কেটে একটি মুদি দোকান বা আলিমেন্টারি নিয়েছেন। লুৎফর রহমান সহ আরো কয়েক জন মিলে “সোনার বাংলা”নামে একটি আলিমেন্টারী দিলেন। শুরু হলো বাংলাদেশীদের ব্যাবসায়ীদের জীবন যাত্রা । একে একে স্মরনীকা, রুপসী বাংলা, ইউরো বাংলা , রাজধানী, প্রিন্স ভিডিও ,রোজ ভিডিও অন্যান্য দোকান পাট।বদলে গেল বাংলাদেশীদের জীবন যাপনের চিত্র।ভিয়া ফিলিপ্পেও আহমেদীয় সহ ভিক্টোরিয়ার আশেপাশের দোকান গুলি বাংলাদেশীদের দোকান হতে শুরু করলো।
দেশে টাকা পাঠানো ছিলো মহা সমস্যা । ব্যাংকের মাধ্যমে পাঠানো ছিলো ব্যায় সাপেক্ষ এবং সব জায়গায় পাঠানো যেতো না। বেশীর ভাগ সময় মানুষ দেশে যাওয়ার সময় টাকা নিয়ে যেতো এবং বন্ধু বান্ধবদের টাকা নিয়ে যেতে হতো। এর পর এলো হুন্ডি । গুন্ডির মাধ্যমে সবাই টাকা পাঠাতেন। অনেক সময় হুন্ডীর মাধ্যমে অনেকেই অনেক সমস্যায় পরতেন। ঠি ক মত টাকা পায় নাই । এ নিয়ে অনেক সময় বিচার শালিশ ও হয়েছে। বন্ধুর কাছে টাকা পাঠিয়ে ও অনেকে ঝামেলায় পরেছেন।তার পর এলো জনতা ব্যাংকের শাখা। কিন্তু মানুষের চাহিদা পুরনে তেমন গুরুত্ব পূর্ন ভূমিকা রাখতে না পারলেও ন্যাশনাল এক্সেন্জ এসে বাংলাদেশীদের আস্থা অর্জন করে। বর্তমানে ইতালীর প্রায় সব শহরেই রয়েছে ন্যাশনাল এক্সেন্জের শাখা। ন্যাশনাল এক্সেন্জের মাধ্যমে সবাই উপকৃত হচ্ছেন।
দেশে যেতে হলে একমাত্র বিমানের অফিসে যেয়ে টিকি ট কাটতে হতো। এর পর এক এক করে পিয়াচ্ছা ভিক্টরিয়ার আঁশে পাশে অনেক গুলি ট্রাভেলএজেন্সি ট্রাভেল টিকি ট বিক্রী করে বাংলাদেশীদের দেশে যাওয়া আসাকে আরো সহজ ও আরাম দায়ক করে দেয় । এরই পথ ধরে ইতালীর প্রায় প্রতিটি শহরেই টিকি ট ক্রয় করে যায়। আর বর্তমানে অন লাইনেই সহযে সব কিছু করা যাচ্ছে ।তবে সেই সময় পথ ছিল অনেকটা দূর্গম।
এক সময় সুমুদ্র পারের বিজুটেরিয়ার ব্যাবসার জন্য পাইকেরী ও খুচরা বিক্রির বিজুটেরিয়ার দোকান পিছাচ্ছা ভিক্টোরিয়ার আসে পাশে বহু দোকান হলো ব্যাবসা করে দোকানের মালিকরা লাভোবান হতে লাগলেন সেই সাথে মারের পারে ব্যাবসা করেও বহু লোক জীবনের মোড় ঘুরিয়ে দিলেন ।চায়নারা ক্যাস নিয়ে ঘুরে বেড়াতে দোকান নেওয়ার জন্য। কিন্তু ইতালীয়ানদের নিকট বাংলাদেশীরা ছিল প্রথম পছন্দের। বাংলাদেশীদের কাছেই ইতালীয়ানরা দোকান বিক্রী করে অথবা ভাড়া দেয়। ইতালীয়ান দের কাছে এক বিশ্বাসের নাম বাংলাদেশী ।যেখানে দোকান সেখানেই বাংলাদেশীরা টাকা কোন সমস্যাই না। বাসা নিতে হবে দাম যাইহোক।
আস্তে আস্তে স্টেশনের আড্ডা এখন পিয়াচ্ছা ভিক্টোরিয়ার আশেপাশে । এর পর বিস্তার লাভ করতে লাগলো তরপিনাত্তারা এখানেও একের পর এক বাংলাদেশীদের অবস্থান । বাসা এবং দোকান।এর পর বিস্তার লাভ করতে লাগলো সমগ্র রোম জুরে যেখানে বাসা ভাড়া পাওয়া যায় মানুষ সেখানে ছুটে যায়। কখনো একা আবার কখনো কয়েক জন মিলে শেয়ারে তবে বাসা এবং দোকান বাংলাদেশী দের চাইই চাই।
এখন কি নেই ছোট ,বড় , শপ থেকে কাপড়ের দোকান , জুয়েলারী, বার, রেস্টুরেন্ট , জুতার দোকান। আর বাঙ্কার গুলিতো বাংলাদেশীদের অধীনে । রোমে যত খোলা মার্কেট দোকান আছে তার বেশীর ভাগই বাংলাদেশীদের অধীনে অথবা বাংলাদেশীরা কাজ করেন। এই সব ব্যাবসায়ীদের যে কোন সমস্যা অথবা দাবী আদায় কিম্বা একত্রে মিলিত হওয়ার জন্য রয়েছে ব্যাংকারেল্লা এসোসিয়েশন । রোম শহর এক টুকরো বাংলাদেশ ।এখন বাংলাদেশীদের অধীন পুরো রোম শহর । অবশ্য যারা পুরাতন ছিলেন তাদের রয়েছে অনেক অবদান। তাদের ছিল মানবিকতা রয়েছিল আন্তরিকতা। সহযোগিতা এবং পথ দিক নির্দেশনা। রয়েছে সামাজিক দায় বদ্ধতা। সবচেয়ে বড় দেশের প্রতি ভালোবাসা।সেই সব অগ্রজোগদের প্রতি বিন্ম্র শ্রদ্ধা । আর যারা চলে গেছেন আমাদের ছেড়ে তাদের জন্য দোওয়া করি। আল্লাহ যেন তাদের বেহেস্ত নসীব দান করেন । আমিন।