ফেলে আসা ইতালী,স্মৃতির পাতায়, রংগীন দিন ।(পর্ব-১৭)


১৯৮৯ সালে মনোনিত কার্যকরি পরিষদ হলে ব্যাপক ভাবে পরিচিতি লাভ করে বাংলাদেশ সমিতি রোম, ইতালী। ১৯৯০ সালে ইতালীতে সরকারি ভাবে অবৈধদের বৈধতা ঘোষনার পর বাংলাদেশ সমিতি ইতালী যে কার্যক্রম পরিচালনা করেছেন তা ইতালীর ইতিহাসে বাংলাদেশী কমিউনিটির মাঝে স্বর্নাক্ষরে লেখা থাকবে। আমি ১৯৯০ সালের জানুয়ারী মাসের প্রথম সপ্তাহে রোমে এসেছি। তখন থেকেই দেখেছি সংগঠনের প্রতিটি কর্মকর্তা নিরলস ভাবে মানুষের উপকার করেছেন। বিভিন্ন দেশ থেকে আসা নতুন দের যে ভাবে সাহায্য সহযোগিতা করেছেন বর্তমানে সেটা স্বপ্নের মত। তখনকার আন্তরিকতা এখন অপ্রতুল। যে যে ভাবে পেরেছেন সেই ভাবে সহযোগিতা করেছেন। সেই দৃশ্য কখনো ভুলার নয়। এর আর একটি কারন হতে পারে সেই বছরই ছিলো সংগঠনের সাধারন নির্বাচন ৯০।

সম্ভবত ১৯৯০ সালের ডিসেম্বরে নির্বাচন সম্পন্ন হয়ে ছিলো। দুটি প্যানেলে নির্বাচন অনুস্ঠিত হয়ে ছিলো। প্রতিটি প্যানেল তাদের কার্যকর্ম ও পরবর্তী কার্যকর্ম ও প্রতিশ্রুতি নিয়ে পোস্টার হাতে গ্রুপ গ্রুপ করে প্রতিটি ভোটারের কাছে পৌঁছেছেন । ভোটার শুধু রোম বাসী নয় সমগ্র ইতালী ব্যাপী ছিলো ভোটার তাই প্রচার করাটা বেশ কঠিন ছিলো। তখন প্রচার মাধ্যমও সহজ ছিলো না। এমনকি মোবাইল ও ছিলোনা তাই পোস্টার বা মেনুফেস্টু নিয়েই ভোটারদের দ্বারে দ্বারে যেতে হতো। তখন আর একটি সুবিধা ছিলো পান্থানেল্লার বিল্ডিং আগেই বলেছি এই বিল্ডিং পরিত্যক্ত ছিলো তাই সবাই মিলে দখল করে ছিলো কিন্তু বেশী দিন স্থায়ী হয় নাই তার পর যে কয়েক মাস ছিলো সেখানে বিভিন্ন দেশের লোক থাকলেও বাংলাদেশীদের ও বহু লোক এই বিল্ডিং এ বাস করতেন। এই জন্য সেই সময়ের বাংলাদেশ সমিতি ইতালীর নির্বাচনে সব প্রার্থীকে এখানে আসতেন। দিনের চেয়ে রাতেই জমে উঠতো নির্বাচনী প্রচারনা। ৯০ এর সেই নির্বাচন মনে হয়েছিলো এক খন্ড বাংলাদেশ ।

বাংলাদেশের কোন নির্বাচন। এমনকি বাংলাদেশের নির্বাচনকে ও হার মানিয়েছিলো। হাতে হাতে মোবাইল ফোন নেই কিন্তু প্রার্থী এবং সমর্থকদের হাতে হাতে তাদের প্যানেলের মেনু ফেস্টুন ছিলো । ইতালীর রাজধানী রোমের এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্ত পর্যন্ত নির্বাচনী প্রচারনা করছিলেন। নির্বাচনে ছিলো এক আনন্দ ঘন দিন। ৯০ এর নির্বাচনে কার্যকরী পরিষদের নির্বাচিত কর্মকর্তারা হলেন।যথাক্রম :

সভাপতি—— কে এম লোকমান হোসেন,

সহ সভাপতি- শামসুল ইসলাম দুদু,

সহ সভাপতি – নুরুজ্জামান লাকী,

সাধারন সম্পাদক- হেনরী ডি কস্তা,সহ “ “ – হাবিবুর রায়হান শহীদ,

সাংগঠনিক সম্পাদক – মহিউদ্দিন মিন্টু,

সহ “ “ – আব্দুর রহমান,

কোষাধক্ষ্য “ – জসিম উদ্দিন,

সাংস্কৃতিক সম্পাদক – আবু সাঈদ,

আন্তর্জাতিক সম্পাদক – চন্চল দেব,

ক্রীড়া সম্পাদক ——— সালাউদ্দিন খোকন,

প্রচার সম্পাদক ——— ছাদেক আলী,

মহিলা সম্পাদিকা —— ঝর্ণা ইসলাম,

দপ্তর সম্পাদক ——— আশফাকুর রহমান পলাশ,

সহ দপ্তর সম্পাদক —- সাইদুর রহমান শাহীন,

১৯৯০ এর নির্বাচন কমিশন

প্রধান নির্বাচন কমিশনার – আজমল আলী উকিল ,

সহ নির্বাচন কমিশনার —- শফিকুর রহমান,

সহ নির্বাচন কমিশনার —- আব্দুল হামিদ,

সহ নির্বাচন কমিশনার —- বাবুল কান্তি দাস,

সহ নির্বাচন কমিশনার —- আব্দুল হাকিম।

উপদেস্টা পরিষদ:

১/ আব্দুল কাদের বাবুল,

২/ রফিকুর ইসলাম,

৩/ গাজী মশিউর রহমান,

৪/ আব্দুল মোতালেব মোল্লা,

৫/ দেলোয়ার হোসেন,

৬/ খোরশেদ আলম,

৭/ আজহার আলিম কাশেম,

৮/ খন্দকার আব্দুল জব্বার দুলাল,

৯/ ফারুক হোসেন,

১০/ নাসরিন মাহতাব।১

৯৯০ থেকে ১৯৯৫ সাল পর্যন্ত লোকমান- হেনরী দায়িত্ব পালন করলে ও সাথে সাথে জি এম কিবরিয়া প্যানেল ও বিভিন্ন কার্যকর্মে অনন্য গুরুত্ব পূর্ন দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছিলেন।এজন্য ১৯৯৫ সালের নির্বাচনে ফলাফল চলে আসে জি এম কিবরিয়ার পক্ষে। নির্বাচিত কার্যকরি পরিষদ নিম্ন রুপ।

সভাপতি ———— জি এম কিবরিয়া,

সহ সভাপতি ——- মোক্তার হোসেন,উদ্দিন খোকন,

সহ সাংগঠনিক সম্পাদক- আনোয়ার হোসেন,

কোষাধক্ষ্য —————- দেলোয়ার হোসেন,

সাংস্কৃতিক সম্পাদক ——আব্দুল মান্নান,

আন্তর্জাতিক সম্পাদক—- শাহজাহান ফিরোজ,

প্রচার সম্পাদক ———— বকুল,

ক্রীড়া সম্পাদক ———— সোয়েব আলম,

মহিলা সম্পাদিকা———- রাজিয়া সুলতানা,

দপ্তর সম্পাদক ———— মিজানুর রহমান লিটন,

সহ দপ্তর সম্পাদক ——— গাজী আবু তাহের


Similar Posts