| |

নিজের প্রয়োজনেই বাংলা ভাষা শেখা উচিত।বললেন-মেয়র।


মো: রেজাউল করিম মৃধা।

ভাষার মাসে বাংলা ভাষা নিয়েই আমাদের কথা বলা, আলোচনা, সমালোচনা, প্রয়োজনীয়তা, দরকার,কোথায় দূর্বলতা? বাংলা ভাষা শেখার বেনিফিট সহ বাংলা ভাষা শেখার সমস্যা এবং সমাধানের পথ খুঁজতেই এমএএইচ অন লাইন টিভির “মৃধা শো” র প্রতি শনিবার থাকে বিশেষ আয়োজন।

১৩ই ফেব্রুয়ারি “মৃধা শো” বিশেষ আয়োজনে অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, টাওয়ার হ্যামলেটস কাউন্সিলের প্রথম বাংলাদেশী মেয়ের সাবেক কাউন্সিল মো: গোলাম মুর্তুজা এবং শিক্ষক ও কালেক্টিফ অফ স্কুল গভের্নরের চেয়ার শাহনুর আহমেদ খান।

ব্রিটেনে বাংলা ভাষার প্রসার, বিস্তার , চর্চা এবং শিক্ষার প্রয়োজনীয়তা সম্পর্কে সাবেক মেয়র বলেন,” নিজের প্রয়োজনেই বাংলা ভাষা শেখার দরকার। বাংলা ভাষা শিখলে পরবর্তীতে কাজের ক্ষেত্রে তার নিজেরই বিশাল উপকার হয়”। উদাহর সরূপ বলেন, ডাক্তার হলেও বিলেতে বেশীর ভাগ রোগীই বাংগালী, একই ভাবে, আইনজীবি, একাউন্টেন্ট, শিক্ষক এমনকি ব্যাবসার ক্ষেত্রে ও অর্থাৎ প্রতিটি পেশাতেই যেহেতু বেশীর ভাগ বাঙ্গালী এই বাংলা ভাষা শিখলে আপনার জীবনেই বিশেষ উপকার পাবেন অর্থনৈতিক ভাবেও সহজে হবেন লাভোবান। তাই আপনার প্রয়োজনেই বাংলা ভাষা শিক্ষা গ্রহন করা প্রয়োজন,”।

শিক্ষক শাহনুর আহমেদ খান বলেন,”২০১৪ সালে সরকারি ভাবে প্রাইমার স্কুল থেকে ব্রিটেনে মর্ডান লেন্গুয়েজ নেওয়ার বিধান আছে। কিন্তু প্রাইমারি স্কুল গুলিতে বেশীর ভাগ ছাত্র/ ছাত্রী বাংলাদেশী হওয়া সত্যেও আমাদের অভিবাবকদের অবহেলা এবং প্রশাসনের গাফিলতির কারনেই বাংলা ভাষা মর্ডান লেন্গুয়েজ হিসেবে নেওয়া হচ্ছে না। অথচ এই মর্ডান লেন্গুয়েজ বাংলা হলে আপনাদের সন্তানরাই বেশী উপকৃত হবেন।আধুনিক গ্লোবাল এবং ডিজিটাল যুগে কাজের পরিধি বাড়বে। হেল্থ ডিমেশন থেকে রেহায় পাবেন। ফোনেটিক্স,ফোনলজি, সোসাল আ্যাক্টিভিটি বাড়বে এবং কাজের ক্ষেত্র ছড়িয়ে পরবে সারা বিশ্বময়,”।

বিশ্বে প্রায় ২১০ মিলিয়ন মানুষ বাংলা ভাষায় কথা বলেন।ব্রিটেনে প্রায় ৩৭ মিলিয়ন মানুষ বাংলা ভাষায় কথা বলেন। কথা বলার সংখ্যার দিক দিয়ে লন্ডনে দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে বাংলা ভাষা। কিন্তু দু:ক্ষের বিষয়। বাংলা ভাষা মর্ডান লেন্গুয়েজ হিসেবে স্বীকৃতি পায় নাই।

প্রাইমার স্কুল গুলিতে বাংলা ভাষা মর্ডান ল্যান্গুয়েজ হিসেবে স্বীকৃতির জন্য ব্রিটেনে বসবাস রত সকল বাংলাদেশীদের সাথে সাথে স্থানীয় কাউন্সিলের কাউন্সিলার দের এবং বাংলাদেশ হাইকমিশন সহ বাংলাদেশ সরকারকেও এগিয়ে আসতে হবে।

প্রথম বাংলাদেশী মেয়র বলেন,” ৮০ দশকে টাওয়ার হ্যামলেটস কাউন্সিলে আমরা মাত্র ৫ জন কাউন্সিলার ছিলাম। সেই ৫ জন কাউন্সিলার টাওয়ার হ্যামলেটস কাউন্সিলের কমিউনিটির জন্য যত কাজ করেছি আলতাব আলি শহীদ মিনার থেকে শুরু করে বিভিন্ন স্কুল ও প্রতিস্ঠানে এমন কি রাস্তার নাম সহ বাংলাদেশীদের নাম দেওয়া হয়েছে। তা সবার জানা এবং তার বেনিফিট এখনো মানুষ পাচ্ছেন। অথচ এখন সংখ্যা মেজরিটি কাউন্সিল হলেও দু:ক্ষের সাথে বলতে হয়। কোন কাজ তো দূরের কথা ল্যান্গুয়েজ সার্ভিস কাট করা হচ্ছে। অথচ কথা বলার কেই নেই,”।

কমিউনিটির জন্য বর্তমান কাউন্সিলদের দায় দায়িত্ব কতটুকু পালন করছেন? কাউন্সিলারদের কমিউনিটির জন্য কাজ করার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন “ন্যায্য দাবী আদায়ে আরো গুরুত্ব পূর্ন ভূমিকা পালন করা উচিত। এটা আপনার চাকরি নয় যে শুধু মাসে মাসে বেতন নিবেন। এটা আপনার সামাজিক দায় বদ্ধতা,”।

বাংলা ভাষা এবং বাংলা সংস্কৃতি বহু পুরাতন এ তথ্য নিশ্চিত করেছে লন্ডনের সোয়াস ইউনিভার্সিটির ভাষা গবেষকরা তুলে ধরেছেন ১৯১১ সাল থেকেই ব্রিটেনে ইন্ডিয়ান সংস্কৃতি বা কালচার শুরু হয় এবং কবি গুরু রবীন্দ্র নাথ ঠাকুরের নভেল পুরুস্কার তার অন্যতম উদাহরণ।

SOAS ইউনিভার্সিটির লযান্গুয়েজ সেন্টার থেকে মেথর্ড,ম্যাটেরিয়াল ও ইন্সট্রাকচার সহ গবেষনায় বাংলা ভাষার ইতিহাস তুলে ধরে নতুন মাইল ফলক সৃস্টি করেছে।

ডারহ্যাম ইউনিভার্সিটিতেও বাংলা ভাষা এবং বাংলা সংস্কৃতির উপর চর্চার বিশেষ সুযোগ রয়েছে। বাংলা ভাষায় “আমার সোনার বাংলা আমি তোমায় ভালোবাসি” এই গানটি বিশ্বের সর্বাধিক মানুষের মুখে মুখে।

ব্রিটেনের জিসিএসি ও এ লেভেল পরীক্ষায় বাংলা ভাষায় পরীক্ষা দেওয়ার সুযোগ ছিলো কিন্তু বাংলা ভাষা শেখার জন্য তেমন প্রাতিস্ঠানিক প্রতিস্ঠান ছিলো না আর বর্তমানে বাজেট কাট সহ বিভিন্ন অজুহাতে সেই সুযোগ সংকুচিত হয়েছে।

লন্ডন হচ্ছে মাল্টি ল্যান্গুয়েজ সিটি। ৩০০ টির ও বেশী ভাষার মানুষ বসবাস করলে বা কথা বললেও।

যে সব ভাষা গুলি ব্রিটেনে বেশী ব্যাবহার হয় এবং মানুষ কথা বলেন।

যেমন:-

আরবিক, বেন্গলি, চাইনিজ , ডাস, ফ্রান্স, জার্মান, ইতালীয়ান ,গ্রীক, জাপানিজ, কোরেয়ান, নরোউজিয়ান, পারশিয়ান, পর্তুগীজ , রাশিয়ান, স্পেনিশ, সুইডিশ, তুর্কীস, পলিশ সহ আরো অনেক ভাষা।

বাংলা ভাষাকে ব্রিটেনের মর্ডান ল্যান্গুয়েজ ভাষা করার সুবর্ন সুযোগ কাজে লাগাতে দল মত পদ সব কিছুর উর্ধে উঠে এক সাথে কাজ করতে হবে। তবেই ব্রিটেনে বাংলা ভাষা সুপ্রতিস্ঠিত হবে।


Similar Posts