| | |

নতুন ভোটার আইডি কার্ড এনআইডি কার্ড জমা দেওয়া ও আমার তীক্ত অভিজ্ঞতা।


মোঃ রেজাউল করিম মৃধা।

আমরা যারা প্রবাসী দেশের জন্য সবসময় প্রাণ কাঁদে। দেশে আসতে মন চায় কিন্তু বিশেষ কারন ছাড়া আশা সম্ভব নয়। বাবা মা বেঁচে না থাকলে মনটা যেমন টানে। বাবা মা না থাকলে মনটা তেমন টানে কিনা আপনারাই জানেন? যখন বাবা মা বেঁচে ছিলেন তখন ঘন ঘন দেশে আসতাম। যখন স্ত্রী সন্তান দেশে ছিলো তখননো ঘনঘন দেশে আসা হত কিন্তু এখন স্ত্রী সন্তান সবাই লন্ডনে। মা বাবা চলে গেছেন আমাদের ছেড়ে বেশ কয়েক বছর।তাই এখন দেশে আসা হয়ে উঠে না তারপরও এক বছর পর না হলে ২/৩ বছর পর পর আসি দেশের টানে ভাইবোন আত্বীয় স্বজন বন্ধুবান্ধবদের এক নজর দেখার জন্য।অথবা পরিবারের কোন বৃহত পারিবারিক অনুস্ঠানে অংশগ্রহন করতে। অর্থাৎ যে কোন উপলক্ষে।

এই বার লন্ডন থেকে দেশে আসার ৩/৪ টি উদ্দ্যেশ্য নিয়েই মূলত আসা। জমিজমা নিয়ে কিছু ঝামেলা তো থাকেই শুধু আমার একার নয় প্রতিটি প্রবাসীরই থাকে। কখনো বেশী সময় নিয়ে আসা হয় না। হয় দুই সপ্তাহ না হয় তিন সপ্তাহ কিন্তু এবার নিয়ত করেছি এবং এক সপ্তাহ বেশী সময় নিয়েই এসেছি। যে কাজই করি না কেন? ভোটার আইডি কার্ড করবো। বা প্রসেস করে জমা দেবো ইন্সা আল্লাহ।

দেশে আসলে আমার এক ভাগ্নে সব সময় আমাকে সহযোগিতা করে ডাক নাম সুজন। সে সব সময় সাথে সাথে থাকে। আইডি কার্ড।এখন প্রশ্ন হচ্ছে কোন ঠিকানায় করবো? ঢাকার বাড়ীর ঠিকানায় নাকি দেশের ঠিকানায়? দেশের বাড়ীতে এখন শুধু মসজিদের হুজুর থাকেন নিকট আত্বীয় কেউ থাকেনা কিন্তু গ্রামের বাড়ীর যাতায়াত অনেক ভালো তারপরও যেতে আসতে গেলে দিন শেষ।কাই সিদ্ধান্ত নিলাম ঢাকার বাড়ীর ঠিকানাই করবো।

এবার বলি কি কি লাগবে?

১/ এস এস সি বা সমমানের সার্টিফিকেট

২/ ডিজিটাল বার্থ সার্টিফিকেট

৩/ পাসপোর্ট , ড্রাইভিং লাইসেন্স বা ফোটো আইডি

৪/ ফোটো কপি পিতা, মাতা কিম্বা স্ত্রী বা স্বামীর।

৫/ পানি, কারেন্ট, হোল্ডিং ট্যাক্স যে কোন বিলের কপি বা প্রভ অফ এ্যাড্রেস।

৬/ সিটিজেনশীপ সার্টিফিকেট

৭/ অজ্ঞিকার নামা।

প্রথম ধাঁপের সব আছে শুধুমাত্র ৪ নাম্বারে বাবা মা কারোরই আইডি নেই বা সেই সময় আইডির প্রচলনও ছিলো না। আমার স্ত্রী ও এখন ও এনআইডি করে নাই। কবে এখন লাগবে ডেথ সার্টিফিকেট।আমি এবার কার্ড জমা দিতে বা করতে পারলে পরের বার তাঁকেও নিয়ে আসবো।

আপনারা জানেন এনআইডি কার্ড খুবই জরুরী। বাধ্যতামূলক। এই কার্ডছাডা বাংলাদেশে বর্তমানে ব্যাংক একাউন্ড, জমি বেচাকেনা তো দূরের কথা টেলিফোনের একটি সিম কার্ডও কিন্তে পারবেন না।

যে ভাবে এনআইডি কার্ডের কাজ শুরু করি।

দেশে এসেই সকালে উঠেই মিরপুর ২ নম্বর মিউনিসিপাল অফিসে গেলাম হোল্ডিং ট্যাক্স দিতে। অফিসের ঠিকানা পরিবর্তন করেছে। জিএনজি নিয়ে পুরাতন অফিসের সামনে নেমে পরি। কিন্তু দেখে গেইটের সামনে নতুন ঠিকানা দেওয়া । গেইটে সামনে নামতে দেখেই ভিতর থেকে একজন মুখ বের করে হাত দিয়ে ইশারায় নতুন ঠিকানায় যেতে বললেন।

সামনে থেকে রিক্সা করে সোজা চলে গেলাম নতুন অফিসে। খুবই ভালো সার্ভিস যা কল্পনাতীত। রিক্সা ভাড়া দিয়ে সিঁডি দিয়ে উপরে উঠতেই এক ভদ্র লোক বসে আছেন মুখে সুন্দর দাড়ি। বললেন কি কাজে এসেছেন? বললাম বোল্ডিং ট্যাক্স দিবো।বললেন সোজা যেয়ে হাতের বামে ব্যাংক কাউন্টার। চলে গেলাম দুটি কাউন্টার । আমার সামনে এক কাউন্টারে একজন এবং অপর কাউন্টারে ২/৩ জন লাইনে আছেন।

বললেন আপনার রিছিপ্ট দেন। আমি পুরাতন রিছিপ্ট দিলাম।বললেন ২৯০০ টাকা আমি এক হাজার ত্রে তিনটি নোট দিলাম। ৩০০০ টাকা একশত টাকা ফেরত দিয়ে নতুন রিছিপ্ট দিয়ে দিলেন। অবশ্য আমি বাড়ীর দলিল সহ সব কাগজপত্রই সাথে নিয়ে এসেছি।বের হয়েই নতুন অফিসের সামনে দাডিয়ে ভিডিও করলাম। কেননা প্রতিদিনের আপডেট দিচ্ছি। যেহেতু আমার এই মোবাই সেট এ ইন্টার নেট নেই। শুধু মাত্র ওয়াইফাই দিয়ে চলে যায় বাংলাদেশের জন্য একটি হ্যান্ড সেট নিয়েছি সেই সেটের মাধ্যমে সবার সাথে যোগাযোগ এবং হুয়াট্স আপ, ম্যাসেন্জার কিম্বা অন লাইন ওয়াই ফাই পেলেই চালু হয়ে যায়।

অফিস থেকে বের হয়ে আমার ছোট বোনের ছোট ছেলে নাহিদ হাসান শান্তকে ফোন দিলাম। ও জানে দেশে আসছি কিন্ত সকাল বেলাই যে ওর ওখানে যাবো কা জানেনা। গত কভিড-১৯ এ আমার ছোট বোন নার্গিস। আমাদের সবার ছোট কিন্তু সেই আমাদের সবাইকে ছেড়ে সবার আগে চলে গেছে পৃথিবী ছেড়ে।(ইন্নাহ- রাজিউন)

আমার ছোট বোন আদরের ছোট-বোন । দেশে আসলে সবসময় আমার সাথে সাথে থাকতো।অন্য কোথাও বেড়াতে গেলে সবার আগে ও রেডি থাকতো। দুই ভাগিনা কিন্তু বলতো আমার ভাই আসবে আমি ভাইর বাসায় থাকবো। ভাইয়ের সাথে থাকবো। আজ ও বেঁচে নেই ওর কথা বেশী মনে পরে। ওর বাসায় গেলে কি খাওয়াবে ব্যাস্ততার শেষ ছিলো না। আজ ওর বাসায় গেলে সব স্মৃতি মনে ভেঁসে উঠে। আপনারা সবাই দোওয়া করবেন যেনো আমার ছোট বোন সহ বাবা মা আত্বীয় স্বজন যারা কবর বাসী হয়েছেন তাদের রে যেনো বেহেস্ত নসীব দান করেন আমিন।

দুপুরে শান্তর বাসায় খাওয়া দাওয়া করে একটু রেস্ট নিতেই আছরের আজান দিয়ে দিয়েছে। ঘরেই নামাজ পরে বিদায় নিয়ে এলাম শান্তর ছোট মেয়ে। খুই লক্ষি। শান্ত আমার সাথে রাস্তা পর্যন্ত এলো ওর কাছ থেকে বিদায় নিয়ে মানিকদীর উদ্দ্যশে রওয়ানা দিলাম।

মানিকদী সুজন অপেক্ষা করছে। ১০ নম্বর থেকে ১২ নম্বর পর্যন্ত প্রচন্ড ট্রাফিক। গাড়ীর চাকা যেনো ঘুরে না। অবশেষ মানিকদী ইসিবি চত্তরে এলাম। সুজন কে নিয়ে এবার চললাম ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন এর ১৫ নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলারের অফিসের দিকে। পথিমধ্যে দুইবার রিক্সা বদলাতে হচ্ছে ক্যান্টলমেন্টের ভিতরে এক পাশের রিক্সা অন্য দিকে যেতে পারে না।

অবশেষ কাউন্সিলার অফিসে গেলাম। সামনে সিটি কর্পোরেশনের মনোগ্রাম সহ নতু অফিস এক সময় এই মাটিকাঁটা এলাকা ডুবা ও ধানি জমি ছিলো আজ চেহারা পাল্টে গেছে। নতুন নতুন বিল্ডিং হচ্ছে। সেই ধান ক্ষেত আজ স্বর্নের চেয়ে ও দামী।অফিসে ডুকতে পরিবেশ খুব পরিপাটি হাসপাতাল কিম্বা মসজিদের মতো জুতা বাহিরে রেখে ডুকতে হয়।

অফিসে ঢুকে আরো অবাগ হবেন। কাউন্সিলারের দেখা পেতে কমপক্ষে ১০থেকে ১২ টি ধাঁপ অতিক্রম করতে হবে।এল প্রেটনের চেয়ার টেবিল সাজানো । ডুকতেই জিগায় কি কাজে এসেছি। বললাম এনআইডি কার্ড করতে। কি কি লাগবে একজন বললেন অপর জন বললেন এতো দিন কেন করি নাই। তবে একজন বললেন আপনার কি কি আছে আমি বললাম আমার প্রায় সবই আছে। এখন আপনি কিভাবে সহযোগিতা করতে পারেন। দুইটি দেশের দুইটি পাসপোর্ট , এস এস সি সমমানের পরীক্ষার সার্টিফিকেট , বোল্ডিং নাম্বার এবং ডিজিটাল বাথ সার্টিফিকেটের কথা বললাম।

তখন পাশের এক ভদ্র লোক তার পাশে কম্পিউটার নিয়ে বসে থাকা লোকটিকে বললেন চেক করে দেখো? যে কথা সেই কাজ। ডিজিটাল বাথ সার্টিফিকেট দিলাম চেক করে বললেন। সব ঠিক আছে তবে আমার ইংরেজী নামে Md থাকলেও বাংলায় মোঃ নেই অনুরুপ ভাবে বাবার নামে ইংরেজীতে সব ঠিক আছে কিন্তু বাংলায় মোঃ নেই সেই সাথে বাছের এর পরিবর্তে বশির লিখেছে।

যাইহোক

পাশের লোকটি একটি ভিজিটিং কার্ড ধরিয়ে দিয়ে বললেন। এই কম্পিউটারের দোকানে যেয়ে অন লাইনে আবেদন করুন।আমি আর সুজন আবার রিক্সা করে মোড়ের দিকে গেলাম। কম্পিউটারের দোকানে লাইন রয়েছে। মনে হচ্ছে খুবই ব্যাস্ত। পিছনে বসে অপেক্ষা করলাম একজনের কাজ শেষ হওয়ার সাথে সাথে আমি কম্পিউটারের পাশে নির্দিষ্ট চেয়ারে বসলাম। দুই ঘর পূর্ন করতেই চলে এলো রক্তের গ্রুপ। আমি আমতা আমতা করতেই তিনি বললেন পাশেই একটি ক্লিনিকের ঠিকানা দিয়ে বললেন আপনি রক্ত গ্রুপ চেক করে আসেন। ভূল হলে আপনার অনেক সমস্যা হবে।

কি আর করা চলে গেলাম সেই ক্লিনিকে সেখানেও রোগীদের দীর্ঘ লাইন। রিছিপশনে খুবই সুন্দরী একজন রিসিপ্টশনিস্ট। যে কোন বিদেশীকে ফেল করে দিবে। মুখে মাক্স পরা অবস্থায় ও বেশ সুন্দরী লাগছে। হাসি মুখে বলার পরও বললেন ১ ঘন্টা অপেক্ষা করতে হবে। তখন মন টা খারাপ হয়ে গেলো এর মাঝে ছোট ছোট বাচ্চাদের কান্না, প্রচন্ড গরম যদিও উপরে ফ্যান ভো ভো করে ঘুরছে।

আমি বলার জন্য চেয়ারের অপেক্ষায় আছি এরই মাঝে সুজন পাশের রুমে গেছে এবং বেডিয়ে আসার সাথে সাথে রিসিপ্টশনিস্ট ডাক দিলেন বললেন ১৫০ টাকা দেন । ২টি দুইশত টাকা দিলাম। একটু পরেই পাশের রুমে ডাক দিয়ে নিয়ে সিরিন্জ দিয়ে রক্ত নিলো। খুই অল্প বয়সের নার্স মনে মনে ভাবলাম এ আর কি করবে কিন্তু না দেখি ঠিকই রক্ত নিলো। ততক্ষনে আমার শরীর গিয়ে অঝঁরে ঘাম ঝরছে।

রক্ত দিয়ে ফ্যানের নিচে একটি চেয়ার খালি পেয়ে বসে পরলাম। সুজন খালি হাঁটাহাটি করছে। কেননা পাত হয়ে যাচ্ছে। ততক্ষনে ঘড়ির কাঁটা প্রায় ১০টা বাঁজে। এরই মধ্য রিপোর্ট এসেছে রক্তের গ্রুপ ও পজেটিভ।

রিপোর্ট নিয়ে কমপিউটারের দোকানে গেলাম। ততক্ষনে আগের সেই লোক চলে গেছেন। নতুন এক লোক বসে আছেন। এরই মধ্যে এক ভদ্র মহিলা এসে একটি সার্টিফিকেট ফেরত দিয়ে রাগারাগি শুরু করলে। আমি আর সুজন নিরব স্বাক্ষী। অনেকক্ষন পর ঠান্ডা হলো কিন্তু কেউ কারো অবস্থান থেকে এক চুল পরিমান সরে দাঁড়ানি। এক দায় হায় নাম্বার ৮৫ এর স্থলে ৮৮ হয়েছে এই টা কম্পিউটার ভূল স্বীকার করছে কিন্তু সাবজেক্টের জায়গায় মহিলার ভূল ছিলো। অবশেষে ঠিক করে দিলেন। মাঝখানে অনেক সময় পার হলো ঠিক করা শেষে মহিলা বললেন আপনাকে কি আবার পয়সা দিতে হবে। ভদ্র লোক এতো সুন্দর ভাবে জবাব দিলেন সবাই হো হো করে হেঁসে উঠলাম।

এবার আমার অন লাইলে আবেদনের পালা আমি মনে হয় আজকের মতো শেষ কিন্তু না এর মাঝেই আরো দুই একজন আসছেন বাড়ী ভাড়া টাংগানো সহ অন্যান্য পিন্ট করতে। আমার পাস্ওয়ার্ড কিছুই বলে নাই ফাইল খুলতে গিয়ে মহা সমস্যা তিনি আবার সেই পূর্বের লোককে ফোন করে পাসওয়ার্ড নিলেন। শেষ পর্যন্ত অন লাইনে এনআইডি আবেদন জমা দিয়ে অনেক রাতেই বাড্ডায় ফরে আসি।

পর্ব -২

শক্রবার শনিবার অফিস বন্ধ তবে আমার কার্যক্রম অব্যহত ভাবে চলছে।ধারাবাহিক ভাবে আত্বীয়স্বজনের বাড়ীতে দাওয়াৎ । কোথাও দুপুরে কোথাও সন্ধ্যায়। আপনারা জানেন আগে ছিলো কেউ দেশে আসলে আত্বীয় স্বজন বন্ধুবান্ধব সবাই দেখা করতে আসতো এখন একেবারেই উল্টো নিজের যেয়ে দেখা করতে হয়। আমি সব সময় ভাই বোন এবং একেবারে নিকট আত্বীয় সেই সাথে যেখানে মুরুব্বী আছেন সেখানে সবার আগেই আমি গিয়ে হাজির।

রবিবার দুপুর মানিকদী কবরস্থানে বাবা মার মৃত্যু সার্টিফিকেটের জন্য গেলাম। অফিসে তখন কর্মকর্তা কেউ নেই। একজন বসে আছেন তিনি লম্বা একটি লিস্ট বললেন। কি কি লাগবে সবার আগেই ভোটার আইডি লাগবে দুই জন স্বাক্ষী ইত্যাদি।

সুজন বললো মামা বাদল মামা হচ্ছে কবরস্থান কমিটির জেনারেল সেক্রেটারি আমি বললাম বাদল? হ মামা আপনার বন্ধু বাবুর ভাই বাদল। ওরা দুই ভাই বাবা ছিলেন আর্মীর অফিসার আব্দল মান্নান। আমাকে অনেক আদর করতেন দেশের বাড়ী বরিশাল কিন্তু দীর্ঘদিন এই মানিকদী থাকেন বাড়ীঘর ব্যাবসা সবই এইখানে।

দুপুরে বা জহুরের নামাজের পর একটি লাশ দাফন করা হয়েছে। সুজনের সাথে কবরস্থানে গেলাম এই কবরেই ঘুমিয়ে আছেন আমার বাব এবং মা। দীর্ঘ দিন পর বাদলের সাথে দেখা কুশল বিনিময় হলো কেমন আছি ? কোথায় আছি? এরপর বললাম ভোটার আইডি করার জন্য বাবা মার ডেথ সার্টিফিকেট লাগবে। বাদল বন্ধু হলেও কাকা বলে ডাকে কেননা বাদলের বাবা আর আমার বড় ভাই ক্যাপ্টেন ইরফান মৃধা আর্মীতে চাকুরী করতেন সেই সুবাদে মান্নান সাহেবকে ভাই বলে ডাকতাম। আমাদের সাথে একেবারে পারিবারিক সম্পর্ক। আমার বিয়ের অনুস্ঠান সহ সব অনুস্ঠানে বাদলদের পরিবার আমন্ত্রিণ থাকে সবসময়।

বললাম বাবা মার ডেথ সার্টিফিকেট লাগবে। ও আমার বাবা মা কে দাদা এবং দাদী বলতো। বললো কেবল জানাজা শেষে দাফন সম্পন্ন হলো। সন্ধ্যায় আসেন। এরই মাঝে খবর নিতে চলে গেলাম ইব্রাহিম পুর স্থানীয় লোকাল ভোটার আইডি অফিসে। বড বিল্ডিং এর লিফটে ৩য় তলায়। যাওয়ার পরই বলললেন এতো দিন কেন করেনি এজন হেড অফিস থেকে একটি সার্টিফিকেট লাগবে। সাথে একটি ফর্ম ধরিয়ে দিলেন ততক্ষনে তিনটা বেঁজে গেছে সুজন বললো মামা আজ হবে না কাল যেতে হবে আমি বললাম জিএনজি দেখ! ঐ খানে টেম্পু চলে রিক্সা চলে কিন্তু সিএনজি কম মেইন রাস্তা থেকে একটি সিএনজি নিয়ে সোজা নির্বাচন কমিশনের হেড অফিসের সামনে । আমরা সামনের গেইটে গেলাম গেইট থেকে একজন বললেন পাশের বিল্ডিং আমরা হেঁটে পাশের বিল্ডিং এ গেলাম। দুইটি বিল্ডিং ই খুবই সুন্দর । গেইটের ভিতরে এবং আশেপাশে পুলিশ আর পুলিশ। প্রতিটি মোডেই পুলিশ।

গেইট দিয়ে ডুকতেই তথ্য কেন্দ্র। লাইনে দাঁড়ালাম আমার ঠিক আগের জন ভিতরে ডুকতে চাচ্ছেন কিন্তু তথ্য কেন্দ্র থেকে বলা হচ্ছে আজ হবে না তিনি বলছেন এখনো ১৫ মিনিট সময় আছে। অবশেষে বাধ্য হয়ে তাকে ছেড়ে দিলেন। আমি যাওয়ার সাথে সাথে কি কাজ ? বললেন আমি লোকাল অফিসের ফর্ম টি দিলাম তিনি বললেন ১০১ নং রুমে যান তখন আমরা দ্রুত ছুটে চললাম অফিসের দিকে কিন্তু ১০১ নং রুন ছেড়ে ই চলে গেছি। পুলিশ কে জিজ্ঞাসা করতেই দেখিয়ে দিলেন।

রুমে যাওয়ার গেইটে একজন একটি রঙীন বড ছাতার নিচে দাঁড়ানো তিনি বললেন কি কাজ সুজন বললো তথ্য কেন্দ্র থেকে পাঠিয়েছে। সুজনকে থামিয়ে দিলো আমি বললাম কোন সমস্যা ভাইজান? সে আমার দিকে তাঁকিয়ে কি দেখলেন জানিনা বলতে চান? একটু দেখেই বললেন যান। ভিতরে গেলাম দুইটি টেবিল একেবারে শেষ সময়। আমি অন লাইনের ফর্ম এবং লোকাল অফিসের ফর্ম দিলাম তিনি আমার দিকে তাকিয়ে বললেন এতো দিন করেননি কেনো? আমি বললাম বাইরে থাকি। কোথায় থাকেন? বললাম লন্ডন। বললেন ফিন্জ্ঞার প্রিন্ট দেন প্রথম ডান হাতের বৃদ্ধা আংগুল এবং শাহাদাত আংগুল এব পর বাম হাতের দুই আংগুলের ছাপ নিয়ে ফর্মে সিল দিয়ে দিলেন। ফুরফুরে আমেজ নিয়ে অফিস থেকে বের হলাম। বাইরে এলে দুই একটি সেলফি না হলে কি হয়?

আমি এর পরপরই যমুনা ফিউচার পার্কের কাছেই জোয়ার সাহারা বাজার এলাকায় বড় ভাইয়ের বাসায় গেলাম। সেখানে অনেকক্ষন ছিলাম এরপর আবার মানিকদী এলাম। আসার সাথে সাথেই বাবা মা দুই জনের মৃত্যুর তারিখ ও নাম লিখে দুইটি রিছিপ্ট দিয়ে দিলেন বাদল। অনেক ধন্যবাদ বাদলকে।

পর্ব-৩

পরদিন বাবা মার দুইজনের দুইটি কবরস্থানের রিছিপ্ট বুক থেকে ডেথ সার্টিফিকেটের দুইটি রিছিপ্ট সহ অন্যান্য সব কাগজ পত্র নিয়ে ঢাকা উত্তরের ১৫নং কাউন্সিলার আলহাজ মোহাম্মদ জহির কাউন্সিলার এর কার্যালয়ে গেলাম কিছুক্ষন অপেক্ষার পর কাগজ দেখে আলমগীর হোসেন ভাই প্রথম দিনই উনার সাথে পরিচয় তিনি বললেন”এই রিছিপ্টের সাথে ডেথ সার্টিফিকেট লিখে নিয়ে আসতে হবে”। একটি কম্পিউটার এর ঠিকানা ধরিয়ে দিলেন। সেই খানে গেলাম এলাহী কান্ড প্রচুর লোক রুমে ডুকার কোন অবস্থা নেই।দুইটি কম্পিউটারের দুইজন কাজ করছেন। কথা বলার ফুসরত নাই। একজন আছেন শুধু ফোটকপি করে দেন তিনজনই এত ব্যাস্ত নিজ চোখে না দেখলে বুঝানো যাবেনা।

অপেক্ষা দাড়িয়ে রইলাম। কিছুক্ষন পর একজন বের হলো তারপর আমরা দুইজন। সুজন সব সময়ই আমার সাথে আছে। অবশ্য এই কাজে তারা দুইজনই বেশ অভিজ্ঞ। কাউন্সিলারদের প্যাড তাদের এখানে দেওয়া আছে। ফরমেট করা আছে শুধু নাম এবং তারিখ পরিবর্তন করে খুব দ্রুত দুইটি সার্টিফিকেট দিয়ে দিলো মুজুরি ও খুব কম প্রতিটি সার্টিফিকেট মাত্র ৩০ টাকা করে।

ডেথ সার্টিফিকেট নিয়ে কাউন্সিলারদের অফিসে আবার গেলাম ততক্ষনে কাউন্সিলার চলে গেছেন। এবার বললেন কাল আসতে হবে। সব কাগজ গুলি একসাথে পিন আপ করে রেখে দিলেন। কি আর করা বাসায় চলে এলাম।

পরদিন সোজা কাউন্সিলারের অফিসে যেয়ে কাউন্সিলারের স্বক্ষর করা কাগজ পত্র নিয়ে রিক্সায় করে সেই ইব্রাহিমপুর লোকাল নির্বাচন কমিশনের অফিসে। লিফটের তিন তলায় এর দুইদিন আগেও একবার এসেছিলাম। রিছিপ্টশনে যিনি বসেন তিনি খুবই অমায়িক তার ব্যাবহারে সবাই সন্তুষ্ট কিন্তু ভিতরে যিনি বসেন আবেদ সাহেব ইয়াং অফিসার। কথাবার্তা কাঁটকাঁট। করবেনই না কেন আমি যতক্ষন ছিলাম শুধু অভিযোগ আর অভিযোগ। এর জন্ম তারিখ ভূল এর বাবার নাম ভূল। ঠিকানা ভূল তো অহরহ। নিত্যনৈমিত্য ব্যাপার। দশ জন এলে একজনও কাজ করে নিতে পারেন বলে মনে হয় না।

আমি কাগজপত্র নিয়ে তার কাছে জমা দিলাম তিনি দেখলেন একের পর এক পাতা উলটাচ্ছেন আমি বাংলাদেশের শিক্ষাগত সার্টিফিকেট না দিয়ে ল্ন্ডনের দুইটি সার্টিফিকেট দিয়েছি একবার বললেন বাংলাদেশের কোন সার্টিফিকেট নেই। আমি বললাম সার্টিফিকেট তোলা হয় নাই আবার এই সার্টিফিকেট তুলতে গেলে সময় চলে যাবে তাই ল্ন্ডনের শিক্ষাগত সার্টিফিকেট নিয়ে এসেছি। আর কিছু বললেন না। বললেন চলেন আমার সাথে তার সাথে বড় অফিসারের রুমে নিয়ে গেলেন। তিনিও সব কাগজপত্র গুলি উল্টেপাল্টে দেখলেন।

বললেন -ডুয়েল ন্যাশনাল সার্টিফিকেট আছে?

বললাম না।

বললেন যান এক কাজ করেন একটি প্রত্যায়নপত্র বা অঙিকার নামা সার্টিফিকেট নিয়ে আসেন।

মিস্টার আবেদ কে বললেন একটি নমুনা দিয়ে দেওয়ার জন্য নমুনাটি নিয়ে আবার চলে গেলাম সেই দীর্ঘ লাইনে অপেক্ষমান কম্পিউটারের দোকানে । সেই একই চিত্র দীর্ঘ লাইন। একজন বললেন একটু পরে আসেন আমি নমুনা রেখে বাইরে এসে পানি কিনে খেলাম।

পানি এবং ডাবের পানি ছাড়া বাইরের কোন খাবার এখনো খাইনাই। বাইরের কোন খাবার হয়তো সহ্য না ও হতে পারে সেই জন্য কস্ট হলেও বাইরের কোন খাবার এখনো খাইনাই।

অনেকক্ষন পরে ভিতরে গিয়ে বসলাম। এরপর নমুনা মত আমার নামে অধিকার নামা দুইশত টাকার স্ট্যাম্প কিন্তু স্টাম্প এদের কাছে নেই পাশের লাইব্রেরিতে আছে সুজন গিয়ে নিয়ে আসলো তারপর লিখে নিয়ে এলাম কতক্ষনে সন্ধ্যা গড়িয়ে রাত হয়েগেছে ।

১৮ই অক্টোবর ২০২৩ সাল সেই শুভক্ষন। বুক ভরা আশা ও সাহস নিয়ে আমি বাড্ডা থেকে রওয়ানা দিলাম আর সুজন আসবে মানিকদী থেকে। দুই জনে ফোনে ফোনে কন্ট্রাক দুই জনে ইসিবি চত্তরে একত্রিত হলাম। এবার সোজা নির্বচন কমিশনের লোকাল অফিসে। রিছিপ্টশনে যাওয়ার সাথেই অন্য এক ভদ্র মহিলা বসা। নিয়ম মত তিনি কাগজ দেখতে চাইলেন। আমি কাগজ দেখালাম। পরে ভিতরের রুমে যেতে বললেন। ভিতরের রুমে গেলাম দেখি আবেদ সাহেব নেই অন্য একজন বসা। তিনি বললেন আবেদ সাহেব ভিতরের রুমে আছেন।

রুমের অপর পাশে বসার জন্য এক দিকে একটি সোফা এবং অপর দিকে তিন চারটি চেয়ার উপরে ফ্যান ঘুরছে আর যে সব লোকজন এখানে আসছেন তারা সবাই ফ্যানের চেয়ে ও আরো বেশী জোড়ে ঘুরছেন। কারো চেহারার দিকে তাকানো যায় না হতাশা লেগেই আছে।হতাশা, কস্ট , বিরক্ত, গ্লানী না পাওয়ার বেদনা।

একটু পরে আবেদ সাহেব আমার কাগজ চাইলেন সব দেখলেন বারবার অঙিকার নামা দেখলেন। হঠাৎ চোখ পরলো ঠিকানার উপর।

বললেন পাসপোর্ট দেন।

বাংলাদেশী পাসপোর্ট দেন।

সাইট ব্যাগে ফাইলের মধ্যে সব আছে। বের করে দিলাম।

তিনি আবার রেগে গেলেন।

চেয়ার থেকে উঠে দাঁড়ালেন।

এমনিতেই গরম উনি আরো ঘেমে যাচ্ছেন।উনার মাথার উপর ফ্যান ঘুরছে কিন্তু মাথা হচ্ছে না

বললেন আপনার তিনটি ঠিকানা কি করবেন আপনিই বলেন?

পাসপোর্ট মানিকগন্জ গ্রামের বাড়ীর ঠিকানা। ডিজিটাল বাথ সার্কিট বাড্ডা ফ্লাটের ঠিকানা এবং এনআইডি বর্তমান ঠিকানা দিয়েছি মানিকদী। কি করবেন বলেন? মনে হচ্ছে আমি মহা অপরাধী।

আমি বললাম মানিকদী আমার নিজের বাড়ী বিল এবং হোল্ডিং ট্যাক্স সহ সব আছে। আপনার মূল সমস্যা কোথায়? আমি তো যত গুলি কায়টেরিয়া আছে কাগজপত্র ফুল ফিল করে দিয়েছি। যখন পাসপোর্ট করেছি গ্রামের ঠিকানা দিয়েছি জন্মস্থান মানিকগন্জ লেখা আছে।

তিনি এবার বসলেন । এবার বললেন আপনার স্ত্রী ও ছেলে মেয়ের পাসপোর্টের কপি কোথায়? আমি বললাম স্ত্রীর পাসপোর্টের ফোটকপি দেওয়া আছে।ফোটকপ মোবাইল থেকে তোলা ভালো বোঝা যাচ্ছে না। আমি বললাম আমি নিয়ে আসছি।

ততক্ষনে লান্চ টাইম হয়েছে। আমি নিচে নেমে এলাম। নামার সময় ঐ পূর্বের পিছিপ্টশনিস্ট বললেন ভাই ওর কথায় কান দিবেন না বললেন স্যারের সাথে দেখা করে যাবেন। তিনি আমাকে হেল্প করার জন্য আপ্রাণ চেস্টা করছেন তবে পদপদবী ছোট হওয়ার কারনে পারছেন না তবে বারবার বলছেন স্যারের সাথে দেখা করে যাবেন। আপনার কাজ হবে। ঐ লোকের ভরসা পেয়ে মনে সাহস হলো।

লন্ডনে আমার স্ত্রীকে ফোন দিলাম। ওয়াইফাই নাই বাংলাদেশের নতুন ছিম থেকে ডাইরেক্ট কল বললাম তোমার, এহসান, মারজান ও অররার পাসপোর্টের কপি পাঠাও। নিচে একটি কম্পিউটারের শপ খুঁজে বের করলাম। যেয়ে বললাম ভাই আপনাদের ওয়াইফাইটা দেন তিনি দিলেন। ইতিমধ্যেই চারটি পাসপোর্টের কপি পাঠিয়েছে। এবার রঙীন ফোটকপি করে নিলাম। দাম মাত্র ৬০টাকা।

ফোটকপি নিয়ে উপরে গেলাম আবেদ সাহেব তখনো লান্চে আছেন। কিছুক্ষন অপেক্ষা করছি। তিনি এলেন আসার সাথে সাথে এক মহিলার সাথে হ্যাভি তর্ক। ঐ মিহিলা যখন ভোটার হয়েছেন তখন বয়স ছিলো অনেক কম বাবার নামের ও মিল নেই বারবার ঘুরেও ঠিক করতে পারছে না। খুবই চিল্লাচিল্লী আমরা সব নিরব স্বাক্ষী। এক ভদ্র লোক দীর্ঘ শ্বাস নিয়ে বললেন কি আর করবো এই আইডি কার্ড ঠিক না থাকলে পাসপোর্ট বানাতে পারছি না। চিকিৎসার জন্যও বাহিরে যেতে পারছি না।

ঐ ভদ্র মহিলার করুন আর্তনাদ এবং এই ভদ্র লোকের দীর্ঘশ্বস আমি কি আর করবো? আল্লাহ উপর ভরসা নিয়ে বসে আছি। কিছুক্ষন পর বললেন আসেন সব কাগজ পত্র আবারো দেখলেন কাগজ পত্র গুলির স্টাব্লার পিন খুলে আবার আগে পিছে করে সাজান। আমি শুধু চেয়ে চেয়ে দেখি।

কি বললেন কি বলবেন না তিনি ও বুঝতেছেন না আমিও বুঝতেছ্না। হঠাৎ সব কাগজ গুলি পিন করলেন। বললেন সাতদিন পরে আসেন। আমি হতাশ হয়ে পাথরের মত নিস্বপ্রাণ হয়ে দাড়িয়ে রইলাম। কাউন্টার থেকে অন্য একজনের ফাইল এনে তার সাথে কথা বলতে লাগলেন। হঠাৎ আমার দিকে নজর কি হলো জানি না। বললেন বসেন। আমি আমার ফ্যানের নিচে চেয়ারে বসে রইলাম। আরো দুই তিনজনের কাজ শেষ করে বললেন আসেন। স্যারের রুমে নিয়ে গেলেন।

সালাম দিয়ে ডুকলাম। ওয়ালাইকুমাসসালাম বলে বললেন বললেন বসেন। স্যারের রুমে ডুকতেই শরীর ঠান্ডা হয়ে যায়। এসি রুম। বসলাম সাথে সাথে বললেন পাসপোর্ট দেন। দুইটি পাসপোর্ট দিলাম। স্যারের মনে আছে বললেন কাল তো এসেছিলেন?

আমি বললাম ইয়েস!

তিনি অঙিকার নামা দেখলেন।

আর কোন কথা না।

হঠাৎ সুজনের দিকে চেয়ে বললেন উনি কি হয়?

বললাম ভাগিনা।

আপন ভাগিনা?

তখন সুজন বললো চাচাতো ভাগিনা।

শুধু বললেন আর কাউকে পেলেন না!

এরপর বললেন অঙিকার নামার প্রথম পাতায় বললেন স্বাক্ষর করুন।

স্বাক্ষর করলাম।

এরপর বললেন ফিন্গার প্রিন্ট কখন দিলে ভালো হয়?

আজ দিলেই ভালো হয়।

কেমন ভালো হয়?

আমি বললাম আজ দিলে আমি আত্বীয় স্বজন বা বন্ধুবান্ধবদের বাসায় ফ্রি ঘুরতে বা বেড়াতে পারবো। আর না হলে আপনার অফিসেই ঘুরতে হবে।

উত্তর শুনে সহিদুল ইসলাম স্যার হেঁসে উঠলেন।সহিদুল ইসলাম স্যার হচ্ছেন এই অফিসের সর্বোচ্চ বস।

আবেদ সাহেব পাশে দাঁড়ানো।

আবেদ সাহেবকে বললেন প্রবাসী মানুষ এখনই ফিন্গার প্রিন্ট নিয়ে নেন।

ধন্যবাদ দিয়ে সহিদুল ইসলাম স্যারের রুম থেকে বের হয়ে এলাম এক শান্তির পরশ নিয়ে। ফিন্গার প্রিন্ট নেওয়ার আলাদা রুম। রুমের বাইরে একটি কাঁচের অপর পাশে যাঁদের ফিন্গার প্রিন্ট নেওয়া হবে তাদের বসানো হয় আর ভিতর থেকে কম্পিউটার করে দেখে এবং ফিন্গার প্রিন্ট ম্যাসিনে একের পর একটি করে প্রিন্ট নেওয়া হলো এর পর চোখের ম্যাশিন দিয়ে চোখেরটা নেওয়া হলো। ডিজিটাল স্বাক্ষর। এবার বললেন আপনি যেতে পারেন আপনার কাজ শেষ। এবার সেই আবেদ সাহেব এর রুমে এলাম তিনি ফর্মের নিচের অংশ কেঁটে একটি গোল সিল্ড দিয়ে রিছিপ্ট দিয়ে দিলেন। ধন্যবাদ জানিয়ে মিস্টি খাওয়াতে চেলাম। তিনি বললেন মিস্টি খাওয়াবেন? রিছিপ্টশন থেকে বের হয়ে আসার সময় পিছন পিছন বললেন।

না ভাই মিস্টি আনবেন না। স্যার রাগ করবেন।

তাই ইচ্ছা থাকা সত্যি ও মিস্টি খাওয়াবো হলো না।

আজ সত্যিই আমি অনেক খুশি। অল্প সময়ের মধ্যে যে এই ভাবে এনআইডি কার্ড জমা দিতে পারবো চিন্তাই করি নাই।

বাংলাদেশ নিয়ে অনেক নেগেটিভ ধারনা থাকলেও আমার এই বারের অভিজ্ঞতা সব ভূলধারনা দূর করে দিয়েছে। সাবাস বাংলাদেশ।


Similar Posts