গ্রেট ব্রিটেনে “খ্রিস্টমাসে”প্রিয়জনদের সাথে দেখা করার নতুন নিয়ম।
মো: রেজাউল করিম মৃধা।
খ্রিস্টান ধর্মের সবচেয়ে উৎসব খ্রিস্টমাস বা বড়দিন। এবং এর পর দিন বক্সিং ডে এক দিকে প্রিয়জন নিয়ে বছরের সবচেয়ে আনন্দের দিনটি পরিবার ,আত্বীয় এবং বন্ধুদের নিয়ে ধর্মীয় উৎসব পালন করা এবং গ্রেট ব্রিটেনে উপহার দেওয়ার রেওয়াজ চলে আসছে সেই যুগ যুগ ধরে কিন্তু ২০২০ সালে করোনাভাইরস মহামারিতে ম্লান করে দিয়েছে খ্রিস্টমাসের মহাউৎসব।
বড় দিনের ঠিক পরের দিন গ্রেট ব্রিটেনের সকল শপিং মল এবং দোকান গুলিতে সেইল বা ডিস্কাউন্ড দিয়ে থাকে সেই রেওয়াজটিও এবছর করতে পারছেনা।যেখানে ভোর থেকে অনেকে রাত জেগে দোকান গুলির সামনে বিশাল লাইনে কাস্টোমার অপেক্ষা করতো এবছর সেই দৃশ্য আর চোখে পরবে না।
করোনাভাইরস মহামারির ভারিয়েন্ট নতুন রুপটির পাদূর্ভাবে সমগ্র ব্রিটেন জুরে আক্রান্তের হার অনুযায়ী বিভিন্ন টিয়ারে এলাকা ভাগ করা হয়েছে। এর মধ্যে টিয়ার ৪ হচ্ছে সবচেয়ে শতর্ক বা ঝুঁকি পূর্ন এলাকা। সেই সব এলাকার লোকদের ঘর থেকে বের হওয়া নিষেধ সেই সাথে ট্রাভেলিং করে এক এলাকা থেকে অন্য এলাকায় গেলে জরিমান অথবা গ্রেফতার করা হতে পারে। এতেই বুঝা যাচ্ছে করোনার ঝুঁকি কত মারাত্বক।
এরপরও বড় দিনে প্রিয়জনদের সাথে দেখা করার অনুমতি দিয়েছে সরকার। তবে সরকারের নিয়ম অবশ্যই মেনে দেখা করতে হবে।
যেমন:-
১/ যেসব এলাকায় টিয়ার-১ থেকে টিয়া-৩ ঘোষনা করা হয়েছে। সেই সব এলাকায় এরমধ্যে ওয়েস্ট ইয়োরকশায়ার এখানে এক বাসায় বড় দিন পালনের জন্য তিন পরিবার একত্রিত হয়ে আনন্দ উৎসব করতে পারবেন।
২/ নর্দান আইয়ারল্যান্ড ২৩ থেকে ২৭ তারিখ পর্যন্ত মহা ধূমধামে পরিবার ও আত্বীয় স্বজন নিয়ে তিন পরিবার এক সাথে বড় দিন পালন করতে পারবেন। কিন্তু ইংল্যান্ড , ওয়েলস এবং স্কটল্যান্ড এই ভাবে বড় দিন পালন করতে পারবে না।
৩/ টিয়ার -৩ এলাকায়
বাসার ভিতরে প্রবেশ করতে পারবেন না তবে দরজার বাহিরে, খোলা জায়গায়, পার্কে, বা আপনার পছন্দমত জায়গায় ৬ জন একসাথে মিলিত হতে পারবেন তবে। সামাজিক গুরুত্ব বজায় রাখতে হবে।
৪/ টিয়ার -৪ এলাকার লোকদের ঘরে থাকতে বলা হয়েছে।নিজের চাকরী,এডুকেশন,ডাক্তারের এপোয়েন্টমেন্ট, শারীরিক ব্যায়াম, বাজার সদাই সহ শুধু জরুরী কাজে বাহিরে যেতে পারবেন। কাজ শেষে দ্রুত বাসায় চলে আসতে হবে।কোন রকম আড্ডা দেওয়া চলবে না।
৫/ একজন অন্য বাসার সামনে যেয়ে দেখা করতে পারবেন। গিফ্ট বা উপহার সামগ্রী দিতে পারবেন। কিন্তু ঘরে প্রবেশ করতে পারবেন না। এবং কথা বলার সময় দুই মিটার দূরুত্ব বজায় রাখতে হবে।
৬/ ৭০ বৎসরের উর্ধের লোক , অসুস্থ্য, এবং অন্যান্য রোগে আক্রান্ত দের সাথে দেখা না করাই উত্তম।প্রিয়জনের সাথে দেখা করলেও অতিরিক্ত শতর্কতা অবলম্বন করতে হবে।
৭/ কোভিড-১৯ টেস্টে নেগেটিভ হলে ও শিশু এবং বৃদ্ধদের থেকে যথা সম্ভব দূরুত্ব বজায় রাখতে বলা হয়েছে। বর্তমানের প্রেভেন্ট করোনাভাইরস শিশুদের জন্য বেশী মারাত্বক এবং বৃদ্ধারতো রয়েছেনই তাই পরিজনের সাথে আনন্দ ভাগাভাগি করতে যেয়ে করোনায় আক্রান্ত থেকে নিজেদের রক্ষা করতে হবে।
৮/ যদি কেউ একা এক বাসায় থাকেন সে ক্ষেত্রে ও অপর বন্ধু বা আত্বীয় বাসায় প্রবেশ করতে পারবেন না।মনে রাখতে হবে এই করোনা মহামারির বড় দিনে শুধু পরিবারের লোকদের দেখা করার জন্য নিয়ম কিছুটা শিথিল করা হয়েছে।
৯/ বিশেষ কারন ছাড়া টিয়ার ফোর এলাকার লোকদের ঘরের বাহিরে যাওয়া নিষেধ।যারা বিশেষ কারনে যেতেই হবে তাদের পাবলিক ট্রান্সপোর্ট ব্যাবহার না করার জন্য। যদি বাধ্য হয়েই যেতে হয় তবে বিশেষ শতর্কতা অবলম্বন করে যেতে হবে।
১০/ এই ভাইরাস এক মানুষ থেকে অন্য মানুষের মাঝে দ্রুত ছড়িয়ে পরে । সাথে সাথে এর রুপ পরিবর্তন হয়ে যা হয় ৭০ গুন শক্তিশালী। এ কারনেই এই ভাইরাস থেকে রক্ষার জন্য সরকারের বিধিনিষেধ মেনে চলা সবার কর্তব্য।
করোনাভাইরস মহামারিতে খ্রিস্টমাস উৎযাপনে প্রিয়জনদের দেখা করা বা উপহার দেওয়ার জন্য সরকারী নিয়ম মেনে চলুন, নিজে সুস্থ্য থাকুন, নিরাপদে থাকুন।সবাইকে খ্রিস্টমাসের শুভেচ্ছা।