করোনা এবং আমার যাপিত জীবন। (পর্ব-৯)
ঈদ কেটেছে অন্য রকম আনন্দে। প্রতি ঈদের মত সকালে ঘুম থেকে উঠে সাওয়ার শেষ রুমে এসে নতুন জামা পড়া হলো না। তবে মুটানুটি নতুন জামা মাত্র কয়েক মাস আগে বাংলাদেশ থেকে সালার দেওয়া উপহার পান্জাবি আর আমার কেনা ওয়াস কোর্ট বেশ নামিয়েছে । এবার ঈদে পরিবারের কারোর জন্যই নতুন জামা কেনা হয় নাই।
চিরাচরিত নিয়মে খেজুর আর পায়েস খেয়ে এবার নামাজের পালা। পরিবারের সবাইকেই আসতে আসতে নামাজে আসতে বললাম। ইমামতি আমি নিজেই করলাম। নামাজের আগে নামাজ শিক্ষা বইটি ভালো করে দেখে নিলাম। আল্লাহর উপর পূর্ন ভরসা নিয়ে নামাজ আদায় করলাম।
নামাজ শেষে আমার স্ত্রী রান্না করছেন। আর আমি ফেইসবুকে বন্ধু ও আত্বীয় স্বজনদের সাথে বেশ কিছু শুভেচ্ছা বিনিময় করলাম। এরই মাঝে দুপুরের খাবারের সময় হয়ে গেল । ঈদের দিনের বিশেষ খাবার খেয়ে আবার মোবাইলে ওয়াট্স আপ খুলতে শত শত ঈদ মোবারকের ম্যাসেজ দেখছি আর উত্তর দিচ্ছি এর মাঝে মোহাম্মদ জুবায়ের ভাইর ম্যাসেজ এলো কাজে যেতে হবে।
সন্তানদের ঈদের সামান্য বকশিস দিয়ে কাজে চলে গেলাম। এবারের ঈদ জামাত নেই তাই সকাল থেকে ঈদ জামাত কভার করার ব্যাস্ততাও নেই কিন্তু ডিউটি মাফ নেই। জামাত যে নেই । ঘরে ঘরে ঈদের জামাত কে কিভাবে ঈদ জামাত আদায় করছেন তেমনি কিছু ফুটেজ নিয়ে ঈদের নিউজের জন্য আমাদের ব্যাস্ততা।
একটি বাসায় ও গেলাম যদিও সামাজিক দূরুত্ব বজায় রেখে তাদের ইন্টারভিউ করা হলো । অনেকের বাসার সামনে থেকে ঈদের অভিজ্ঞতা। এর বিভিন্ন মসজিদের সামনে ফুটেজ। এর পর সোজা অফিসে। নিউজ বানিয়ে জোবায়ের ভাইকে বাসায় দিয়ে জুবায়ের ভাইর ছুটি হলেও আমার তো ছুটি নেই।নিউজ প্রেজেন্টার তানজিনা ভাবীকে বাসা থেকে আনতে হবে। আবার বাসায় দিয়ে আসতে হবে। ঈদের দিন পরিবারের সাথে বিশেষ করে স্ত্রীকে নিয়ে একটু ঘুরতে পারবোনা এটা কি হয়। তানজিনা ভাবীকে অফিসে নামিয়ে দিতে না দিতেই আহাদ আহমেদ ভাইর ফোন তাকে অফিসে আন্তে হবে। আহাদ ভাইকে অফিসে নামিয়ে দিয়ে সোজা ছুটে চললাম বাসার দিকে। বাসায় আমার স্ত্রীরে বলেছিলাম সন্ধ্যায় একটু ঘুরে বেড়াবো। আগেই বলেছি এবার আমার সময়কে সুন্দর ভাবে কাজে লাগিয়েছি। একদিকে নিউজ প্রেজেন্টার খবর পড়ছেন। আমি বাসায় গিয়ে আমার স্ত্রীকে নিয়ে আবার চ্যানেল এস অফিসের সামনে। ভাবী খবর পড়া শেষ করে বাইরে এসে আমার সাথে ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময় করলেন। ভাবীকে বাসায় নামিয়ে দিলাম অবশ্য ভাবী অনেক অনুরোধ করেছিলেন বাসায় যাওয়ার জন্য কিন্তু করোনার কারনে এখন আর কারো বাসায় যাওয়াটা সময়োচিত নয়। তাই বাসায় না গিয়ে আমরা দুজন দুজনার ছুটে চলা অজানা পথে। এখন আমি মুক্ত স্বাধীন।
আমি বললাম কোথায় যাবো? সে বললেন জানিনা? তোমার যেখানে খুঁসি নিয়ে চলো। কোথায় যাবো নিজেও ঠি ক জানিনা? মন চায় সাগরের পারে, অথবা নদীর ধারে। নির্জন , নির্মল , কোলাহলমুক্ত এক শান্ত এলাকা।