| | |

কমিউনিটির টাওয়ার হামলেটস কাউন্সিলের এন্ট্রি ক্রাইম টাস্কফোর্স চালু।


কমিউনিটির নিরাপত্তায় ৮ মিলিয়ন পাউন্ড বিনিয়োগ করছে টাওয়ার হ্যামলেটস এবং নতুন অ্যান্টি-ক্রাইম টাস্ক ফোর্স চালু

-লন্ডনের অন্য যেকোনো বারার তুলনায় সর্বাধিক॥ এনফোর্সমেন্ট অফিসারের সংখ্যা তিন গুণ বাড়িয়ে ৭১ জন

-২৬ জন পুলিশ অফিসারের সাথে কাজ করবে এনফোর্সমেন্ট টিম, পুলিশ অফিসার দ্বারা ৪১৫টি গ্রেপ্তার।

— অ্যান্টি-সোশ্যাল বিহেভিয়ার: ২০২৪ সালে মোট ২,৩৫৭টি জরিমানা ইস্যু

-২০২৪/২৫ সালের পুলিশের তথ্য অনুযায়ী যৌথ প্রচেষ্টার হিংস্রতা ২১% কমেছে, নাইফ ক্রাইম অর্থাৎ ছুরি/চাকু সম্পর্কিত অপরাধ ৮% কমেছে, ছিনতাই ১১% কমেছে, চুরি ৫% কমেছে, গাড়ি অপরাধ ৩% কমেছে।

০০০০
টাওয়ার হ্যামলেটস কাউন্সিল তার নতুন অ্যান্টি-ক্রাইম টাস্ক ফোর্স চালু করেছে, যা হচ্ছে অপরাধ ও বিশৃঙ্খলা থেকে কমিউনিটিকে নিরাপদ রাখতে একটি সম্মিলিত কমিউনিটি নিরাপত্তা মডেল, যেখানে টাওয়ার হ্যামলেটস এনফোর্সমেন্ট অফিসাররা (টিএইচইও বা থিও) পুলিশের সাথে একযোগে কাজ করবে।
১৩ ফেব্রুয়ারী বৃহস্পতিবার আনুষ্ঠানিকভাবে নতুন এই অ্যান্টি-ক্রাইম টাস্ক ফোর্স এর কার্যক্রম উদ্বোধন করা হয়।
২০২২ সাল থেকে এ পর্যন্ত টাওয়ার হ্যামলেটস এনফোর্সমেন্ট খাতে এরই মধ্যে ৪ মিলিয়ন পাউন্ডেরও বেশি বিনিয়োগ করেছে কাউন্সিল এবং ২০২৬ সালের মধ্যে আরও ৪ মিলিয়ন পাউন্ড বিনিয়োগ করা হবে। কমিউনিটির সার্বিক নিরাপত্তার ক্ষেত্রে সব মিলিয়ে ৮ মিলিয়ন পাউন্ডের বিশাল বরাদ্দ রাখা হয়েছে।

থিও অর্থাৎ টাওয়ার হ্যামলেটস এনফোর্সমেন্ট অফিসাররা বর্তমানে তাদের ১৫ বছর পূর্তি উদযাপন করছেন এবং ২০২২ সাল থেকে তাদের সংখ্যা প্রায় তিনগুণ বেড়েছে। বর্তমানে ৫৪ জন অফিসার কাজ করছেন এবং আরও ১০ জন নিয়োগ করা হচ্ছে, যার ফলে থিওদের মোট সংখ্যা হবে ৬৪ জন এবং ড্রাগ স্কোয়াড মিলিয়ে সংখ্যা ৭০ ছাড়িয়ে যাবে।
নতুন ৪ মিলিয়ন পাউন্ড বিনিয়োগে গড়ে তোলা অ্যান্টি-ক্রাইম টাস্ক ফোর্সের অংশ হিসেবে থিওরা কাউন্সিলের অর্থায়নে নিয়োগপ্রাপ্ত পুলিশ অফিসারদের সাথে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করেন। তারা রাস্তায় টহল দেন, অপরাধ ও অ্যান্টি-সোশ্যাল বিহেভিয়ার (এএসবি) মোকাবিলা করেন এবং কমিউনিটিকে নিরাপত্তার আশ্বাস দেন।
থিওদের কাজের ফলশ্রম্নতিতে অর্জনগুলোর মধ্যে রয়েছেঃ
— ২০২২ সালের এপ্রিল থেকে কাউন্সিলের অর্থায়নে নিয়োগপ্রাপ্ত পুলিশ অফিসার দ্বারা ৪১৫টি গ্রেপ্তার।
— ২০২৪ সালে ২৯ হাজার ৫০০ ঘণ্টার টহল।
— ইউনিফর্ম পরিহিত থিওদের টহলের সংখ্যা ২০২৪ সালের ডিসেম্বরে ২০২৩ সালের একই সময়ের তুলনায় ৭৩% বৃদ্ধি।
— অ্যান্টি-সোশ্যাল বিহেভিয়ার এর জন্য নির্ধারিত জরিমানার সংখ্যা ৯৬% বৃদ্ধি পেয়ে ২০২৪ সালে মোট ২,৩৫৭টি জরিমানা ইস্যু।
নতুন অ্যান্টি-ক্রাইম টাস্ক ফোর্সের লক্ষ্য হচ্ছে, টাওয়ার হ্যামলেটস জুড়ে দৃশ্যমান এনফোর্সমেন্ট উপস্থিতি বৃদ্ধি করা, অপরাধ ও সমাজ বিরোধী আচরণ জনিত কার্যকলাপ (এএসবি) মোকাবিলা করা এবং জনগণকে আরো আশ্বস্ত করা। এছাড়াও এর অন্তর্ভুক্ত রয়েছেঃ
— একটি নতুন ডগ স্কোয়াড টহল দল, যারা টিএইচইও বা থিও-দের সঙ্গে যুক্ত হয়ে পার্ক, উন্মুক্ত স্থান এবং আবাসিক এলাকায় অস্ত্র ও মাদকের তল্লাশি চালাবে। তারা যানবাহন পরীক্ষা করবে এবং মাদক সংশ্লিষ্ট অপরাধ ঠেকাতেও ভূমিকা রাখবে।
— ৮৯৫,০০০ পাউন্ড ব্যয়ে কাউন্সিলের সিসিটিভি কন্ট্রোল রুম আধুনিকীকরণ করা হয়েছে, যেখানে ৪২টি ক্যামেরা একসঙ্গে পর্যবেক্ষণ করা সম্ভব এমন উন্নতমানের এলইডি ভিডিও ওয়াল স্থাপন করা হয়েছে। এছাড়া, রাস্তার ৩৫০টি ক্যামেরা ডিজিটাল প্রযুক্তিতে উন্নীত করা হয়েছে।
— ২০২২ সাল থেকে, কাউন্সিলের সিসিটিভি অপারেটরদের তৎপরতায় ৫৮১ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে এবং ৪১ জন নিখোঁজ ব্যক্তিকে খুঁজে বের করা সম্ভব হয়েছে।
টাওয়ার হ্যামলেটসের নির্বাহী মেয়র লুৎফুর রহমান বলেছেন, “অনেক কাউন্সিল যেখানে অপরাধ দমনের বাজেট কমিয়ে দিচ্ছে, সেখানে আমরা ৮ মিলিয়ন পাউন্ড বিনিয়োগ করছি, যা লন্ডনের অন্য যেকোনো কাউন্সিলের চেয়ে অনেক বেশি। আমরা দেখাচ্ছি, কিভাবে স্থানীয় কর্তৃপক্ষ যথাযথ বিনিয়োগের মাধ্যমে নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পারে।”
তিনি আরও বলেন, “আমরা একটি নতুন অ্যান্টি-ক্রাইম টাস্কফোর্স চালু করছি, যা পুলিশের সঙ্গে একসঙ্গে কাজ করবে এবং পুরো বারা জুড়ে দৃশ্যমান উপস্থিতি নিশ্চিত করবে। এটি অপরাধ এবং অসামাজিক কার্যকলাপের বিরুদ্ধে প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা হিসেবে কাজ করবে। টাওয়ার হ্যামলেটসকে সবার জন্য নিরাপদ করা আমার এবং আমার দলের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, এবং আমরা এই লক্ষ্যে যথেষ্ট বিনিয়োগ করছি।”
মেয়র বলেন, “জনগণের অংশগ্রহণ আমাদের নিরাপত্তা কার্যক্রমের মূল কেন্দ্রবিন্দু। প্রতিটি ওয়ার্ডে নারীদের নিরাপত্তা পর্যবেক্ষণ কার্যক্রম চালানো হচ্ছে, পাশাপাশি একটি এনগেজমেন্ট বাসের মাধ্যমে বাইক ও ফোন চুরির মতো সবচেয়ে বেশি সংঘটিত অপরাধগুলো সম্পর্কে সচেতনতা বাড়ানো হচ্ছে। আমাদের মোবাইল ভ্যান সাপ্তাহিকভাবে বিভিন্ন এলাকায় মোতায়েন করা হয়, যা বাসিন্দাদেরকে তাদের স্থানীয় নিরাপত্তা টিমের সঙ্গে যোগাযোগের সুযোগ দেবে, যাতে তারা সমস্যা জানাতে ও প্রয়োজনীয় পরামর্শ পেতে পারেন।”
অ্যান্টি—ক্রাইম টাস্ক ফোর্সের পাশাপাশি, তিনটি সার্ভিস বা পরিষেবা অপরাধ ও সমাজ বিরোধী আচরণ হ্রাসের জন্য আরও কার্যকরভাবে কাজ করবে। এই তিনটি সার্ভিস হলোঃ নয়েজ প্রোটেকশন টিম, পরিবেশগত অপরাধ প্রয়োগকারী দল (এনভায়রনমেন্টাল ক্রাইম এনফোর্সমেন্ট টিম এবং কাউন্সিলের অর্থায়নে নিয়োগপ্রাপ্ত পুলিশ অফিসারগণ।
এই সার্ভিসগুলোর মধ্যে ১৬ জন বিশেষায়িত এএসবি তদন্তকারী অফিসার রয়েছেন যারা বাসিন্দাদের উদ্বেগ নিরসনে কাজ করবেন। এছাড়াও, কাউন্সিল ২০২৫ সালের গ্রীষ্ম থেকে একটি ‘আউট অফ আওয়ার্স’ বাধ্যতামূলক শব্দ নিয়ন্ত্রণ সেবা বা নয়েজ সার্ভিস চালু করবে।
কেবিনেট মেম্বার ফর সেফার কমিউনিটিজ, কাউন্সিলর আবু তালহা চৌধুরী বলেন, “আমাদের কমিউনিটি সেফটি টিমের কাজ সত্যিই প্রশংসনীয়, এবং আজ এই গুরুত্বপূর্ণ পরিষেবার উন্নয়নে বিনিয়োগ ও সম্প্রসারণ ঘোষণা করতে পেরে আমরা গর্বিত।”
তিনি বলেন, “অপরাধ ও অসামাজিক কার্যকলাপ যে কীভাবে আমাদের বাসিন্দাদের জীবনকে দুর্বিষহ করে তোলে, তা আমি সরাসরি প্রত্যক্ষ করি। আমরা অপরাধীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে ও আমাদের রাস্তাগুলোকে নিরাপদ রাখতে কঠোর পরিশ্রম চালিয়ে যাব, যেন কেউ আমাদের রাস্তায় নিরাপত্তাহীনতা অনুভব না করে।”
ডিটেকটিভ সুপারিনটেনডেন্ট, ভিকি স্টানস্টাল

  • সেন্ট্রাল ইস্ট, বলেছেন, “টাওয়ার হ্যামলেটসে অপরাধ এবং অ্যান্টি-সোশ্যাল আচরণ মোকাবেলার জন্য কাউন্সিল যে অতিরিক্ত সহায়তা দিচ্ছে, তার জন্য আমি ধন্যবাদ জানাই। এর মধ্যে রয়েছে অতিরিক্ত পুলিশ সদস্যদের জন্য অর্থায়ন, যা আমাদের নেইবারহুড পুলিশিং টিমে যুক্ত হবে। এই টিমটি সোজাসুজি আমাদের কমিউনিটি গুলোতে প্রভাব ফেলতে পারে এমন অপরাধের প্রতি মনোযোগ দেয়।”
    তিনি আরও বলেন, “গত এক বছরে আমরা যৌথ কর্মের উল্লেখযোগ্য প্রভাব দেখেছি, যার ফলে টাওয়ার হ্যামলেটসে সহিংসতা, ডাকাতি, চুরি কমেছে এবং গৃহস্থালি সহিংসতার মতো গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্রে আরও মামলা বেড়েছে। তবে, আমি জানি যে অনেক মানুষ এখনও নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন এবং আমার কাছে, প্রতিটি অপরাধই অতিরিক্ত অপরাধ। আমি বিশ্বাস করি যে একটি শক্তিশালী অংশীদারিত্বে বিনিয়োগ করে আমরা আরও ভালো করতে পারব, যাতে টাওয়ার হ্যামলেটসে সবাই নিরাপদে বসবাস, কাজ এবং ভ্রমণ করতে পারেন।”
    টাওয়ার হ্যামলেটস যুক্তরাজ্যের ব্যস্ততম স্থান গুলোর মধ্যে একটি।
    স্পিটালফিল্ডস, টাওয়ার অব লন্ডন, ব্রিক লেন, ভিক্টোরিয়া পার্ক এবং ক্যানারি ওয়ার্ফের মত গন্তব্য গুলোর মাধ্যমে দেশের সর্বাধিক দর্শনার্থীর স্থান গুলোর মধ্যে একটি হচ্ছে এই টাওয়ার হ্যামলেটস্।
    এটি দেশের তৃতীয় বৃহত্তম অর্থনৈতিক উৎপাদন কেন্দ্রও, যেখানে ৩,০০,০০০ মানুষ কর্মরত।
    টাওয়ার হ্যামলেটসে অপরাধ মোকাবেলা করতে কাউন্সিল এবং পুলিশ একযোগে কাজ করছে, ২০২৪/২৫ সালের সাম্প্রতিক স্থানীয় পুলিশের তথ্য অনুযায়ী যৌথ প্রচেষ্টার মাধ্যমে যেসকল ক্ষেত্রে অপরাধের হার কমেছে, তার মধ্যে রয়েছেঃ হিংস্রতা ২১% কমেছে, নাইফ ক্রাইম অর্থাৎ ছুরি/চাকু সম্পর্কিত অপরাধ ৮% কমেছে, ছিনতাই ১১% কমেছে, চুরি ৫% কমেছে, গাড়ি অপরাধ ৩% কমেছে।

Similar Posts