কভিড-ভ্যাকসিন কার্যকর শতকরা ৯০ পার্সেন্ট।
ব্রিটেনের বাজারে আসবে খ্রিস্টমাসের পূর্বে ।
মো: রেজাউল করিম মৃধা।
কভিড-১৯ বা করোনাভাইরস মহামারিতি সমগ্র বিশ্ব স্তম্ভিত। অর্থনৈতিক সংকট,জীবন মরণ সমস্যা,বিভিন্ন দেশে চলছে লক ডাউন। এই করোনাভাইরস ২০২১ সালের আগে নিয়নত্রনে আসে সম্ভব হবে কিনা ? এখনো বলতে পারছেন না গবেষকরা। তবে করোনা প্রতিরোধক টিকা বা ভ্যাকসিন সুখবর পেয়ে মানুষের মনে আশার সন্চারনা হয়েছে। ঔষধে যতটা না কাজ হবে তার চেয়ে বেশী কার্যকর হবে মানুষিক শক্তি। মনের বল।অনেক রোগী সুস্থ্য হয়ে উঠবেন সাহস ও মনো বলের কারনে।মানুষিক তৃপ্তি “আমি ভ্যাকসিন দিয়েছি আমি এখন করোনা থেকে মুক্ত”। এই মনো বলের কারনে অনেকে নিজেকে সুস্থ্য মনে করবেন।
ইমের্জান্সি ইনফ্যাকশন ডিজিস এ্যান্ড গ্লোবাল হেল্থ দি ইউনিভার্সিটি অফ অক্সফোর্ড এর প্রফেসর পিটার হরবি বলেন, “ ভ্যাকসিন অবশ্যই কার্যকর হবে।তবে বয়স ভেদে এর পরিমান নির্ধারণ করা হবে। তবে ইনজেকশন টেবলেট বা ক্যাপসুল হিসাবে খাবার ঔষধ ব্যাবহার যোগ্য করার জন্যও প্রকৃয়া চলছে”।
সোমবার ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন সংবাদ সম্মেলনে বলেন,”পাইফাইজার কম্পানির ভ্যাকসিন ব্যাবহার করতে আমরা প্রস্তুত আছি। আমরা যে কোন মূল্যে জনসাধারনের জীবন রক্ষা করতে চাই”। তবে“ভ্যাকসিনই একমাত্র সমাধান নয়।তাই রিলাক্স হওয়ার সুযোগ নেই”।
তিনি সরকারি নিয়ম মেনে চলার প্রতি জনসাধারন সহ সবাইকে আহ্বান জানান। সবাইকে সতর্ক থাকাতে বলেছেন। তিনি বলছেন, বার বার হাত পরিস্কার করুন, মুখে মাক্স ব্যাবহার করুন, সামাজিক দূরুত্ব বজায় চলুন। ঘরে থাকুন, নিজে সুস্থ্য থাকুন অপরকে সুস্থ্য থাকতে সহযোগিতা করুন,”।শুধু ভ্যাকসিন নয়। সবার আগে স্বচেতনতা ও সতর্কতা”।
৯০% কার্যকর প্রমাণিত হওয়ার পর ব্রিটেন ক্রিসমাসে করোনা ভাইরাস ভ্যাকসিনের ১০,০০০,০০০ ডোজ গ্রহণ করতে পারে। পাইফাইজারের চেয়ারম্যান ও সিইও ডাঃ অ্যালবার্ট বাউরালা আজ নিশ্চিত করেছেন যে কোভিড -১৯ ভ্যাকসিন পরীক্ষা বিশেষজ্ঞের প্রত্যাশা ছাড়িয়ে গেছে।
তিনি আরো বলেন,”কভিড-১৯ ভ্যাকসিন শত করা ৯০ ভাগ কার্যকর। ১০০ রোগীর মধ্যে ৯০ জন সুস্থ্য হয়েছেন বলে তিনি দাবী করেন।
বরিস জনসনের একজন মুখপাত্র প্রধানমন্ত্রী সন্ধ্যায় একটি সংবাদ সম্মেলনের আগে ফলাফলকে ‘প্রতিশ্রুতিবদ্ধ’ বলে চিহ্নিত করেছিলেন। তারা আরও বলেছিল: ‘মোট, আমরা পাইফাইজার প্রার্থী ভ্যাকসিনের ৪০,০০,০০০ ডোজ সংগ্রহ করেছি, বছরের মধ্যে দশকের মধ্যে ১০,০০০,০০০ ডোজ প্রস্তুত করা হয়েছে এবং নিয়মিতরা যদি এই ভ্যাকসিন অনুমোদিত হয় তবে ব্রিটেনে কাছে সরবরাহ করা হবে।
ছয়টি দেশে ৪৩,৫০০ জনের উপর ভ্যাকসিন পরীক্ষা করা হয়েছে এবং এখনও পর্যন্ত কোনও সুরক্ষা উদ্বেগ উত্থাপন করা হয়নি। এফটিএসই ১০০ ট্রায়ালের ফলাফল ঘোষণার পরে ৫.৫% এরও বেশি লাফিয়েছে, ৮২,০০০,০০০,০০০ এর শেয়ারের মূল্যে যুক্ত করেছে। বিসির প্রতিবেদন অনুযায়ী, ৬টি দেশের প্রায় ৪৩ হাজার ৫০০ মানুষের ওপর নতুন তৈরি এই টিকা প্রয়োগ করা হয়েছিল। টিকা নেওয়ার পর কারও দেহেই বিরূপ প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়নি।
ভ্যাকসিন টিকাটির পরীক্ষামূলক প্রয়োগ করা হয়েছে যুক্তরাষ্ট্র, জার্মানি, ব্রাজিল, আর্জেন্টিনা, দক্ষিণ আফ্রিকা ও তুরস্কে।
যৌথভাবে ভ্যাকসিনটির উদ্ভাবক কোম্পানি ফাইজার-বায়োএনটেক একে ‘মানবতা ও বিজ্ঞানের জন্য ঐতিহাসিক দিন’ হিসেবে অভিহিত করেছে।
করোনা ভাইরাস মহামারিতে বিশ্বজুড়ে অনেকগুলো টিকা নিয়ে কাজ শুরু হয়। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তথ্য অনুযায়ী, বিশ্বের এখন ১৫০টির বেশি টিকা উন্নয়নের পর্যায়ে রয়েছে। এগুলোর মধ্যে ৪৪টি টিকার ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল চলছে। ১১টি টিকা পরীক্ষার চূড়ান্ত ধাপে রয়েছে। উদ্ভাবিত ভ্যাকসিন ৯০ শতাংশেরও বেশি মানুষকে করোনাভাইরাস থেকে সুরক্ষা দিতে সক্ষম বলে দাবি করেছে ফাইজার ও বায়োনটেক।
ভ্যাকসিনের সুখবর পেয়ে আমেরিকা , ব্রিটেন সহ সারা বিশ্বের মানুষে আশার আলো দেখতে পাচ্ছেন। তবে এই কভিড-১৯ এ পৃথিবীর প্রায় সব দেশের বৈজ্ঞানিকরা ভ্যাকসিন আবিস্কার কে প্রাধান্য দিচ্ছেন। ইতিমধ্যে চীন, ব্রিটেন, ইতালী এমন কি বাংলাদেশ ও ভ্যাকসিন আবিস্কার করে প্রথম, দ্বিতীয় এবং ফাইনাল ধাপে পরীক্ষা করে যাচ্ছেন। যখন এই ভ্যাকসিন সঠিক ভাবে বাজারে আসবে এবং কার্যকর হবে তখন বিশ্বের মানুষ অনেক উপকৃত হবেন।