অক্সফোর্ড-অ্যাসট্রজানিকার ভ্যাকসিন বেশী কার্যকর এবং মে মাসের মধ্যে ৫০ উর্ধ সবাই ভ্যাকসিন পাবেন।

মো: রেজাউল করিম মৃধা।
কভিড-১৯ বা করোনাভাইরস মহামারি থেকে বেঁচে থাকার একমাত্র উপায় হচ্ছে ভ্যাকসিন ।এই ভ্যাকসিন নিয়ে সব চেয়ে বেশী আগ্রহ ব্রিটেনের। ব্রিটেনের জনসাধারনকে রক্ষার জন্য সরকার সবধরনের প্রস্তুতি গ্রহন করেছেন। প্রতিটি ভ্যাকসিন ব্রিটেন থেকে প্রথম প্রয়োগ করা হচ্ছে এবং মিলিয়ন মিলিয়ন ভ্যাকসিন জ্যাব অর্ডার করেছে ব্রিটেন সরকার। সবার আগে করোনা প্রতিরোধ করা এবং জনগনকে সুরক্ষা করার জন্য আন্তরিক ভাবে কাজ করে যাচ্ছে ব্রিটিশ সরকার।
গবেষকদের গবেষনায় উঠে এসেছে অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার ভ্যাকসিন করোনাভাইরাস সংক্রমণ হ্রাস করতে সক্ষম।
বিষয়টিকে “একেবারে দুর্দান্ত”আখ্যা দিয়ে উচ্ছাস প্রকাশ করেছেন বৃটিশ স্বাস্থ্যমন্ত্রী ম্যাট হ্যানকক। তিনি বলেন, গবেষণায় পাওয়া গেছে- মহামারি থেকে মুক্তি পাওয়ার উপায় হচ্ছে ভ্যাকসিন।
খবরে বলা হয়, এই প্রথম বারের মতো প্রমাণ পাওয়া গেলো যে ভ্যাকসিন ভাইরাসের সংক্রমণ কমিয়ে দিতে সক্ষম। এরইমধ্যে প্রায় ৯৬ লাখ বৃটিশকে ভ্যাকসিনের প্রথম ডোজ দেয়া হয়েছে। গবেষণাটিতে জানা গেছে, ভ্যাকসিন ভাইরাস সংক্রমণে ‘উল্লেখযোগ্য’ প্রভাব ফেলতে সক্ষম। এর অর্থ হচ্ছে, ভ্যাকসিন কার্যক্রমের মাধ্যমেই করোনাভাইরাস মহামারি থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব।
ভ্যাকসিন নেয়া ব্যাক্তি শুধু নিজেকেই সুরক্ষিত করছেন না তিনি নিজেও করোনার বহন করে অন্যকে আক্রান্ত করতে পারবেন না।ভ্যাকসিন দেওয়ার ফলে নিজে করোনা থেকে রক্ষা পাচ্ছেন এবং এরপরেও করোনা থেকে রক্ষা করছে এই ভ্যাকসিন ।
বিবিসিকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে ম্যাথ হ্যানকক বলেন” সাম্প্রতিক গবেষকরা আমাদেরকে বলছে, ভ্যাকসিনের মাধ্যমেই আমরা মহামারি থেকে বেড়িয়ে আসতে পারবো।
গবেষণায় আরো জানা যায়, শুধুমাত্র এক ডোজ ভ্যাকসিন প্রয়োগেই তিন মাসের জন্য সুরক্ষা পাওয়া যায় এবং এটি ৭৬ শতাংশ কার্যকর।
দ্বিতীয় ডোজ দেয়ার পর অক্সফোর্ডের ভ্যাকসিন ৮২ শতাংশ কার্যকর বলেও জানানো হয় গবেষকরা।
ডাউনিং স্ট্রিট নিশ্চিত করেছে যে ৫০ বা তার বেশি বয়সের সমস্ত প্রাপ্ত বয়স্কদের মে মাসের মধ্যে একটি করোনাভাইরাস ভ্যাকসিন দেওয়া হবে।
এর আগে মন্ত্রীরা বলেছিলেন যে বসন্তের মধ্যে প্রথম নয়টি অগ্রাধিকার গ্রুপকে টিকা দেওয়া তাদের “উচ্চাকাঙ্ক্ষা” ছিল, তবে মন্ত্রিপরিষদ অফিস শুক্রবার মে মাসে তারিখটি নিশ্চিত করেছে।
বুধবার পর্যন্ত যুক্তরাজ্য ১০.৪ মিলিয়নেরও বেশি লোককে ভ্যাকসিন দেওয়া হয়েছে ।
সরকার বলেছে যে তারা ১৫ ফেব্রুয়ারির মধ্যে প্রথম চারটি অগ্রাধিকার গ্রুপকে টিকা দেওয়ার পথে রয়েছে।
১/ ৭০ এর দশকেরও বেশি বয়সী,
২/ সামনের সারির স্বাস্থ্য বা ফ্রন্ট লাইন ওয়ার্কার।
৩/ যত্ন কর্মী বা ডাক্তার নার্স সহ যারা করোনা রোগীদের সেবা দিয়ে থাকেন। এবং
৪/ ভ্যানারেবল পিউপিল বা শারীরিক ভাবে বেশী দুর্বল।
যুক্তরাজ্যের টিকাদান কর্মসূচি মে মাসের মধ্যেই নয়টি অগ্রাধিকার সংস্থায় পৌঁছানোর পরিকল্পনা করা হয়েছে।
একজন মুখপাত্র বলেছেন যে প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন ১৬ ফেব্রুয়ারি ইংল্যান্ডে লকডাউন বিধিনিষেধ প্রত্যাহারের জন্য সরকারের রোডম্যাপ প্রকাশ করলে টিকা দেওয়ার জন্য একটি “সঠিক সময়সীমা” নির্ধারণ করবেন।
করোনাভাইরাস কেসগুলি ইউকেজুড়ে ছড়িয়ে পড়ার সুস্পষ্ট লক্ষণগুলি দেখিয়েছে, সর্বশেষ পরিসংখ্যানগুলি জানিয়েছে, এবং আর সংখ্যা – কোভিডের সাথে আক্রান্ত ব্যক্তিদের গড় সংখ্যার সংখ্যা কমিয়ে ০.৭ থেকে.১ এর মধ্যে নেমে এসেছে।
অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনিকার ভ্যাকেশন বেশী কার্যকর হওয়া অবশ্য একটি খুশির খবর। এবং মে মাসের মধ্যে ৫০ বৎসরের উর্ধে বয়সীদের ভ্যাকসিন দেওয়ার কর্মসূচীর মাধ্যমে করোনা নিয়ন্ত্রনে আসলে সেটা হবে আরো খুশির খবর।