| | | |

লন্ডন বাংলা প্রেস ক্লাবের নির্বাচন সম্পন্ন।


গত ২৮শে জানুয়ারি ২০২৪ ইস্ট ল্ন্ডনের একটি হলে ব্রিটেনে বাংলা মিডিয়ার সবচেয়ে বড় প্রতিনিধিত্বশীল সংগঠন লন্ডন বাংলা প্রেসক্লাব নির্বাচন অনুস্ঠিত হয়।নির্বাচনে ক্লাবের ৩০ বছরের ইতিহাসে এবারই প্রথম কোন নারী সাংবাদিক সম্পাদকীয় পোষ্টে জয়লাভ করেছেন এবং লন্ডনের বাইরের একজন সাংবাদিক নির্বাহী কমিটিতে স্হান পেয়েছেন।
নির্বাচনে ১৫ টি পদের মাঝে সভাপতি, সাধারণ সম্পাদকসহ ১২ টি পদে বিজয়ী হয়ে নিরঙ্কুশ বিজয় অর্জন করেছে জুবের-তাইসির-মুরাদ এলায়েন্স। আর নাহাস-মুসলেহ-সালেহ এলায়েন্স পেয়েছেন মাত্র ৩টি পদ।
সভাপতি হিসেবে নির্বাচিত হয়েছেন চ্যানেল এস এর সাবেক চীফ রিপোর্টার ও রিয়াল নিউজের ফাউন্ডিং এডিটর মোহাম্মদ জুবায়ের। তিনি ১৪১ টি ভোট পেয়ে সাবেক সভাপতি সৈয়দ নাহাস পাসাকে মাত্র ২ ভোটের ব্যবধানে পরাজিত করে প্রথমবারের মতো সভাপতি নির্বাচিত হয়েছেন। নাহাস পাশা পেয়েছেন ১৩৯ ভোট।
সাধারণ সম্পাদক হিসেবে ২০ ভোটের ব্যবধানে মুসলেহ উদ্দিন আহমদকে পরাজিত করে টানা দ্বিতীয়বারের মতো নির্বাচিত হয়েছেন লন্ডনের জনপ্রিয় সাপ্তাহিক দেশ সম্পাদক তাইসির মাহমুদ। তার প্রাপ্ত ভোটের সংখ্যা ১২৩। তার নিকটতম প্রার্থী মুসলেহ উদ্দিন পেয়েছেন ১০৩ ও জি আর সোহেল পেয়েছেন ৫৭ ভোট।
১৫৭ ভোট পেয়ে দ্বিতীয়বারের মতো ট্রেজারার নির্বাচিত হয়েছেন সালেহ আহমদ।তিনি পরাজিত করেছেন আব্দুল কাদির চৌধুরী মুরাদকে যার প্রাপ্ত ভোট সংখ্যা ১২১।
মোসতাক বাবুলকে পরাজিত করে আবারো সিনিয়র সহ সভাপতি হিসেবে নির্বাচিত হয়েছেন বিশিষ্ট সাংবাদিক ব্যারিস্টার তারেক চৌধুরী। তিনি পেয়েছেন ১৯১ ভোট।
সহ সভাপতি হিসেবে বর্তমান সহসভাপতি রহমত আলীকে পরাজিত করে বিজয়মাল্য পড়েছেন সায়েম চৌধুরী। তার প্রাপ্ত ভোট ১৪৩। নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী রহমত আলী পেয়েছেন ১৩৬ ভোট।
সহ সাধারণ সম্পাদক হিসেবে রেজাউল করিম মৃধা ১৪৩ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন। তার প্রতিদ্ধন্ধী প্রার্থী আব্দুল কাইয়ূম পেয়েছেন ১৩৭ ভোট।
সহ কোষাধক্ষ পদে সারোয়ার হোসেনকে পরাজিত করে নির্বাচিত হয়েছেন ইব্রাহিম খলিল। তিনি পেয়েছেন ১৫৬ ভোট। সারোয়ার হোসেনের ভোট সংখ্যা ছিলো ১০৭।
অর্গানাইজিং এন্ড ট্রেইনিং সেক্রেটারী পদে আকরাম হোসেন ১৬৮ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন। তার প্রতিদ্বন্দ্বি প্রার্থী ছিলেন ইমরান আহমদ। তিনি পেয়েছেন ১১৩ ভোট।
মিডিয়া এন্ড আইটি সেক্রেটারি পদে মোহাম্মদ আবদুল হান্নান ১৯০ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন।
তার প্রতিদ্বন্দ্বি প্রার্থী মাহবুব আলী খানসুর পেয়েছেন ৮৫ ভোট।
ইভেন্ট এন্ড ফ্যাসিলিটিজ সেক্রেটারি পদে এই প্রথমবারের মতো কোন নারী সাংবাদিক নির্বাচিত হয়েছেন যা কোন সম্পাদকীয় পদে ক্লাবের ৩০ বছরের ইতিহাসে এই প্রথম। এই ইতিহাস গড়ার ক্ষেত্রে তিনি শাহ মোস্তাফিজুর রহমান বেলালকে ৭৫ ভোটের ব্যবধানে পরাজিত করেন। কার প্রাপ্ত ভোট ১৭৭ ভোট। বিপরীতে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী পেয়েছেন ১০২ ভোট।
এছাড়া কার্যনির্বাহী সদস্য হিসেবে ১৭৬ ভোট পেয়ে প্রথম সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন বার্মিংহামের সাহিদুর রহমান সুহেল। ক্লাবের ইতিহাসে এই প্রথম ইসি কমিটিতে লন্ডনের বাইরে থেকে কোন প্রার্থী বিজয়ী হয়ে ইতিহাস সৃষ্টি করলেন। অছাড়া ফয়সল মাহমুদ ১৭১ ভোট পেয়ে কনিষ্ঠতম সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন। এদিকে মরিয়ম পলি রহমান ১৫৫, জাকির হোসেন কয়েস ১৩৭ ভোট ও আনোয়ার শাহজাহান ১৩১ ভোট পেয়ে সদস্য নির্বাচিত হন।
এর আগে দিনভর ক্লাবের ২৮৮ জন ভোটার উত্সবমুখর পরিবেশে ভোট প্রদান করেন। নির্বাচনে নির্বাচন কমিশনার হিসেবে উপস্হিত ছিলেন বাংলাদেশ কেটারার্স এসোসিয়েশনের সাবেক প্রেসিডেন্ট বজলুর রশিদ চৌধুরী এমবিই, আব্দুল আজিজ ও ব্যারিস্টার আনোয়ার বাবুল মিয়া।
এদিকে নির্বাচনের পূর্বে বার্মিংহাম, ম্যানচেষ্টার, লিডসসহ যুক্তরাজ্যের বিভিন্ন শহর থেকে আগত প্রেসক্লাব সদস্যদের স্বতঃস্ফুর্ত অংশগ্রহনের মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠিত দ্বি-বার্ষিক সভা ও নির্বাচন ক্লাবের বিদায়ী সভাপতি এমদাদুল হক চৌধুরীর সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক তাইসির মাহমুদের পরিচালনায় বিগত বছরের রিপোর্ট পেশ করা হয়। পরে ক্লাবের সাধারণ সদস্যরা প্রশ্নোত্তর পর্বে অংশগ্রহণ করেন।
দিনব্যাপী এই সমাবেশ দুপুর থেকে শুরু হয় এবং দ্বি-বার্ষিক সভার পর বিকেল আড়াইটা থেকে বিরতিহীন ছয়টা পর্যন্ত ভোট গ্রহণ চলে। তারপর ভোটগ্রহণ শেষে রাত দশটায় ফলাফল ঘোষণা করা হয়। নব নির্বাচিত সভাপতি মুহাম্মদ জুবায়ের সকলের প্রতি ধন্যবাদ জানান এবং তাঁকে ও নতুন কার্যনির্বাহি কমিটিকে সহযোগিতার জন্য সকল সাধারণ সদস্যদের প্রতি অনুরোধ জানান। সন্ধ্যায় ক্লাবের আজীবন সদস্য, বাংলাদেশ হাইকমিশনার সাইয়েদা মুনা তাসনিম, লাইম হাউজ এমপি আফসানা বেগম, ক্যাটারার্স এসোসিয়েশন, চেম্বার্স, বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের শীর্ষ নেতৃবৃন্দ ও বিশিষ্টজনদের নিয়ে ডিনার ও সাংস্কৃতিক পর্ব অনুষ্ঠিত হয়।
সভায় প্রয়াত ক্লাব সদস্য আশরাফ আহমদসহ সকল বিদেহী আত্মার মাগফিরাত কামনা করা হয় এবং তাদের শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জানানো হয়।


Similar Posts