| | |

যথাযোগ্য মর্যাদার সাথে লন্ডন বাংলা প্রেস ক্লাব পালন করলো গৌরবের একুশ


বাংলাদেশের প্রতিটি আন্দোলন শুরু হয়েছে একুশে ফেব্রুয়ারি দিয়ে। ঢাকার পর লন্ডনে বাংলা ভাষার সবচেয়ে বেশি চর্চা হয় যা আর কোন দেশে হয় না। এসব কথা বলেন একুশে পদকপ্রাপ্ত স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের কণ্ঠশিল্পী মাহমুদুর রহমান বেণু। লন্ডন বাংলা প্রেসক্লাব আয়োজিত মহান শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের ‘গৌরবের একুশ’ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে রাখেন তিনি।

২৪ শে ফেব্রুয়ারী, শুক্রবার পূর্ব লণ্ডনের লন্ডন এণ্টরপ্রাইজ একাডেমির মিলনায়তনে এটি অনুষ্ঠিত হয়।

বিলেতে বাংলা সংস্কৃতির চর্চা ও ভবিষ্যৎ নিয়ে আলোকপাত করেন মাহমুদুর রহমান বেণু । তিনি বলেন আমরা যখন লিখি বা বলি সব সময় শুদ্ধ বাংলায় করা উচিত। শুদ্ধ করে কথা বলতে পারাটাও গৌরবের বলে মনে করেন তিনি।

বিলেতের গণমাধ্যমে বাংলা ভাষার শুদ্ধ চর্চা বিষয়ে আলোচনা করেন বিবিসি ওয়ার্ল্ড সার্ভিসের বাংলা বিভাগের সাবেক প্রযোজক উদয় শংকর দাস, চ্যানেল এস-এর জ্যেষ্ঠ সংবাদ পাঠক জাকি রেজওয়ানা আনোয়ার এবং কবি ও সাংবাদিক সারওয়ার-ই আলম।

উদয় শঙ্কর দাস বলেন সব ভাষাতেই বিবর্তন ঘটে এবং অন্য ভাষার প্রবেশ ঠেকানো কঠিন হয়ে যায়। তবে বাংলা ভাষাকে যদি আমরা আরেকটু বেশি ভালোবাসি এতে শুদ্ধচর্চার বিকাশ ঘটবে। এছাড়াও তিনি বাংলা ভাষা নিয়ে কর্মশালার আয়োজনের পরামর্শ দেন।

জৈষ্ঠ সংবাদ পাঠক জাকি রেজওয়ানা আনোয়ার প্রতিনিয়ত ব্যবহৃত বাংলা ভাষার ভুলভ্রান্তি নিয়ে কথা বলেন । বাক্যের মধ্যে ব্যবহৃত বহুবচন, শুদ্ধ উচ্চারণ, বিকৃত শব্দ এই বিষয় নিয়ে তিনি আলোকপাত করেন।

কবি ও সাংবাদিক সারওয়ার-ই আলম তার বক্তব্যে শুদ্ধ উচ্চারণের প্রতি বেশি জোড় দেন। তিনি মনে করেন আমরা ব্যকরণ ঠিকভাবে চর্চা করি না। বাংলা বর্ণমালা শুদ্ধভাবে উচ্চারণ করলে এবং এক/দুই মাস যে কেউ অনুশীলন করলে শুদ্ধভাবে বাংলা উচ্চারণে কারো সমস্যা হওয়ার কথা নয়।

ক্লাবের সেক্রেটারী তাইসির মাহমুদের উপস্থাপনায় অনুষ্ঠানে বক্তৃতা করেন ক্লাবের প্রেসিডেণ্ট মোহাম্মদ জুবায়ের, সাবেক প্রেসিডেণ্ট মোহাম্মদ এমদাদুল হক চৌধুরী, সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেণ্ট তারেক চৌধুরী ও ট্রেজারার সালেহ আহমেদ।

অনুষ্ঠানের শুরুতে ভাষা শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়। মাহমুদুর রহমান বেণুর নেতৃত্বে পরিবেশিত হয় ‘ আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারি, আমি কি ভুলিতে পারি’ গানটি।

প্রয়াত সাংবাদিক আব্দুল গাফফার চৌধুরীর একুশের গান রচনার প্রেক্ষাপট তুলে ধরেন এটিএন বাংলা ইউ কে’র জ্যেষ্ঠ উপস্থাপক উর্মি মাযহার। তিনি আব্দুল গাফফার চৌধুরী লেখা থেকে এই বিষয়টি তুলে ধরেন। আব্দুল গাফফার চৌধুরীকে নিয়ে শিল্পী ফজলুল বারির কণ্ঠে একটি গান প্রদর্শন করা হয় অনুষ্ঠানে।

অনুষ্ঠানে ক্লাবের সদস্য ও চ্যানেল এস এর জ্যেষ্ঠ সংবাদ পাঠক সৈয়দ আফসার উদ্দিন এমবিই কে কমিউনিটিতে বাংলা ভাষা শিক্ষায় অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ আজীবন সম্মাননা প্রদান করা হয়। ক্লাবের প্রেসিডেণ্ট মোহাম্মদ জুবায়ের তাঁর হাতে সম্মাননা স্মারক তুলে দেন।

এ সময় সৈয়দ আফসার উদ্দিন এমবিই লন্ডন বাংলা প্রেস ক্লাবের নেতৃবৃন্দ কে ধন্যবাদ জানান। তার এই সম্মাননাটি মা-বাবার স্ত্রী ও সন্তানদের উৎসর্গ করেন। বিলতে বাংলা ভাষায় অবদান রাখা তাসাদুক আহমেদ এমবিই এর স্মরণে একটি অ্যাওয়ার্ড চালু করার দাবি জানান । এছাড়াও দেশে এবং বিদেশে যারা টেলিভিশনে সংবাদ পাঠ করেন তাদের মধ্য থেকে একুশে পদক দেওয়ার কথাও তুলে ধরেনসৈয়দ আফসার উদ্দিন।

সাংস্কৃতিক পর্বে সঙ্গীত পরিবেশন করেন হিমাংশু গোস্বামী, গৌরী চৌধুরী, শ্রেয়সী দাস, ববি রায়, মোস্তফা কামাল মিলন এবং নৃত্য পরিবেশন করেন সোনিয়া সুলতানা ও নন্দিনী। কবিতা আবৃত্তি করেন মিসবাহ জামাল, কবি দিলু নাসের, শহীদুল ইসলাম সাগর প্রমুখ। সাংস্কৃতিক পর্বটি পরিচালনা করেন ক্লাবের ইভেণ্ট অ্যাণ্ড ফ্যাসিলিটিজ সেক্রেটারী রূপি আমিন ও ইসি মেম্বার পলি রহমান।


Similar Posts