যথাযথ মর্যাদায় জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৬তম শাহাদাত বার্ষিকী ও জাতীয় শোক দিবস পালন করলো বাংলাদেশ হাই কমিশন, লন্ডন।

মো: রেজাউল করিম মৃধা।
গত ১৫ই আগস্ ইস্ট লন্ডনের অরট্রিয়াম হলে যুক্তরাজ্যে নিযুক্ত বাংলাদেশের হাইকমিশনার সাইদা মুনা তাসনীমের সভাপতিত্বে যথাযথ মর্যাদায় জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৬তম শাহাদাত বার্ষিকী ও জাতীয় শোক দিবস পালন করা হয়।
স্মারক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর আন্তর্জাতিক বিষয়ক উপদেষ্টা ড. গওহর রিজভী।সম্মানিত অতিথি হিসেবে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান।
অনুষ্ঠানের শুরুতে বঙ্গবন্ধু ও ১৫ আগস্টের শহীদদের স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানিয়ে এক মিনিট নিরবতা পালন করা হয়। পরে পবিত্র কোরান, গীতা, ত্রিপিটক ও বাইবেল থেকে পাঠ করা হয়। এরপর হাইকমিশনার প্রধান অতিথিদের নিয়ে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন।
অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন লন্ডন টাওয়ার হ্যামলেটস কাউন্সিলের স্পিকার আহবাব আহমেদ ও নির্বাহী মেয়র জন বিগস, বীর মুক্তিযোদ্ধা দেওয়ান গাউস সুলতান, ক্রয়ডন কাউন্সিলের মেয়র শেরওয়ান চৌধুরী, যুক্তরাজ্য আওয়ামীলীগ এর সিনিয়র সহ সভাপতি-জালাল উদ্দিন ও সাধারন সম্পাদক সৈয়দ সাজিদুর রহমান ফারুক।
যুক্তরাজ্যে বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক সফরের স্মৃতি-বিজড়িত ও বাঙ্গালি অধ্যূসিত পূর্ব লন্ডনের একটি মিলনায়তনে এই অনুষ্ঠানে বঙ্গবন্ধুর জীবন ও কমের্র ওপর ব্রিটিশ-বাংলাদেশি শিল্পী এস, এম, আসাদুল্লাহ’র আঁকা ছবি নিয়ে এক চিত্রপ্রদর্শনী তরুণ প্রজন্মের ব্রিটিশ-বাংলাদেশিদের বিশেষভাবে আকর্ষণ করে। বঙ্গবন্ধুর কীর্তিময় জীবন নিয়ে নির্মীত একটি তথ্যচিত্রও প্রদর্শন করা হয়। কভিড সংক্রান্ত বিধি-নিষেধ শিথিলের পর প্রথমবারের মতো প্রত্যক্ষ উপস্থিতিতে আয়োজিত এই অনুষ্ঠানে স্বাস্থ্য-নিরাপত্তা মেনে দুইশতাধিক প্রবাসী বাংলাদেশি জাতির পিতার প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।
স্মারক অনুষ্ঠানে বঙ্গবন্ধুকে উৎসর্গ করে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক মন্ত্রী স্থপতি ও কবি ইয়াফেশ ওসমান-এর স্ব-রচিত কবিতা আবৃত্তির ভিডিও ছিল মর্মস্পর্শী। এছাড়া মাননীয় সংসদ সদস্য, সাবেক সংস্কৃতি মন্ত্রী ও সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব আসাদুজ্জামান নূরের কন্ঠে বঙ্গবন্ধুকে উৎসর্গ করে লেখা কবি মহাদেব সাহার প্রখ্যাত একটি কবিতার হৃদয়গ্রাহী আবৃত্তির আরেকটি ভিডিও সবাইকে অভিভূত করে।
অনুষ্ঠানে হাই কমিশনার সম্মানিত অতিথি ও মিশনের কর্মকর্তাদের নিয়ে শোক দিবস উপলক্ষে প্রকাশিত একটি স্মারক পুস্তিকার মোড়ক উন্মোচন করেন।
বক্তারা বলেন, “ভাষা আন্দোলন থেকেই বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশের স্বাধীনতার সংগ্রাম শুরু করেছিলেন এবং এ বিষয়ে তিনি কখনোই আপোষ করেন নি। আজ যারা নানাভাবে অপপ্রচার চালিয়ে মানুষকে বিভ্রান্ত করার অপচেস্টা করছে তারাই এক সময় বাংলাদেশের স্বাধীনতার বিরোধিতা করে বাংলাদেশকে পাকিস্তানের অংশ হিসেবেই রেখে দিতে চেয়েছিলো। তবে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বঙ্গবন্ধুর দিকনির্দেশনা অনুযায়ী বাংলাদেশকে সোনার বাংলা হিসেবে গড়ে তুলতে সাফল্যের সাথে যেভাবে এগিয়ে চলেছেন তাতে সব ষড়যন্ত্রই মোকাবিলা করা সম্ভব।”
জাতির পিতাসহ ১৫ আগস্টের শহীদদের স্মরণে মহামান্য রাষ্ট্রপতি, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, মাননীয় পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও মাননীয় পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর বাণী পাঠ ও জাতির পিতার ও তাঁর পরিবারের শহীদ সদস্যদের স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন এবং তাঁদের আত্মার মাগফেরাত কামনা করে বিশেষ দোয়া ও মোনাজাত করা হয়।