বাউন্স ব্যাক লোন প্রতারনার সন্দেহ ভাজন ব্যাবসায়ীদের এ্যাকাউন্ড ফ্রিজ করা হচ্ছে।

মো: রেজাউল করিম মৃধা।
কভিড-১৯ বা করোনাভাইরস মহামারি আমাদের মাঝ থেকে কেড়ে নিয়েছে লক্ষ লক্ষ মানুষের প্রাণ।শুধু ব্রিটেনেই এক লক্ষের বেশী মানুষের মৃত্যু হয়েছে এবং যারা কভিড-১৯ আক্রান্ত হয়ে বেঁচে আছেন তাদের কঠিন অবস্থার মধ্য দিয়ে দিন অতিবাহিত করতে হচ্ছে।কভিড-১৯ বা করোনাভাইরস মানুষকে অনেক কিছু শিখিয়েছেন। শিখিয়েছে মানবতা কাকে বলে। একে অপরের সাহায্যে এগিয়ে এসেছে।
অনেকে আবার সুযোগ সন্ধানী। তারাতো তাদের উদ্দেশ্য হাসিল করেছেন।”চোর না শুনে ধর্মের কাহিনী”।কে মরলো কে বাঁচলো কিছুই যায় আসে না। এই করোনাভাইরস মহামারির সুযোগে অনেকেই হয়েছে লালে লাল।
ব্রিটিশ সরকার করোনাভাইরস মহামারি মোকাবেলার জন্য সহজ শর্তে ব্যাবসায়ীদের £২০০০ থেকে £৫০,০০০ পাউন্ড পর্যন্ত বাউন্স ব্যাক লোন দিয়েছে। এই প্রজেক্টে বাজেট £৪৩ বিলিয়ন পাউন্ড।
সম্প্রতি এক জরিপে উঠে এসেছে সহজ শর্তে বাউন্স ব্যাক লোন দেওয়া £৪৩ বিলিয়ন পাউন্ড বাজেট প্রকল্পের £২৯ বিলিয়ন পাউন্ডই এখন প্রশ্নের সম্মুখিন ।
অনেক অসৎ ব্যাবসায়ীরা সহজ শর্তে লোন দেওয়ার ফলে অতি সহজেই লোন পেয়ে বর্তমানে ব্যাবসা বন্ধ করে দিয়েছে। অনেকে আবার টাকা ব্যাবসায় খরচ না করে ব্যাক্তিগত ভাবে খরচ করছেন। কেউ কেউ টাকা অন্য এ্যাকাউন্ডে বা দেশে পাঠিয়ে দিয়েছেন। আবার কেউ কেউ সকাল বিকাল ব্যাংক অ্যাকাউন্ট চেক করতেছেন।টাকা আছে কিনা?
ইতিমধ্যেই এইচএমআরসি এবং ব্যাংক সহ সরকারের সংশ্লিষ্ট বিভাগের কর্মকর্তারা ব্যাপক ভাবে কাজ করে যাচ্ছে। যাদেরই সন্দেহ হচ্ছে তাদের এ্যকাউন্ড ফ্রিজ করা হচ্ছে।এই প্রতারনার সন্দেহে ব্রিটিশ বাংলাদেশী ব্যাবসায়ীদের সংখ্যাও উল্লেখযোগ্য।
এই বাউন্স ব্যাক লোন যে সব ব্যাবসা প্রতিস্ঠান বা ব্যাক্তি নিয়েছেন। কিস্তিতে লোন পরিশোধ করার জন্য ব্যাংকের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে অনেকে এরই মাঝে চিঠি পেয়েছেন আর যারা চিঠি পান নি ধারাবাহিক ভাবে তারাও চিঠি পেয়ে যাবেন। নিয়মিত ভাবে লোনের কিস্তি পরিশোধ করতে পারবেন। যদি না করেন তবে আপনাকে অবশ্যই অপরাধী হিসেবে চিন্হিত করে কঠোর শাস্তির ব্যাবস্থা করবে।
ব্যাবসা প্রতিষ্ঠানকে সহযোগিতার জন্য সরকার বিনা শর্তে £২০০০ পাউন্ড থেকে £৫০,০০০ পাউন্ড করে ব্যাবসায়ীক লোন বা বাউন্স ব্যাক লোন দিয়েছে। লোন গ্রহনের এক বছর পর অর্থাৎ ১২ মাস পর থেকে লোনের কিস্তি পরিশোধের নির্দেশনা থাকলেও বর্তমান করোনাভাইরসের কথা চিন্তা করে লোন পরিশোধের সময় বর্ধিত করা হচ্ছে।
£৫০,০০০ পাউন্ড লোন পরিশোধের জন্য প্রথমে ৬ বৎসর সময় নির্ধারণ করা হলে ও পরবর্তিতে ১০ বছর করা হয়।বাউন্স ব্যাক লোন পরিশোধের জন্য আপনি মাসে £৪৬০ অথবা £৯৪০ পাউন্ড করে ও পরিশোধ করতে পারবেন।
চ্যানচেলর ঋশি সুনাক বলেন,” ব্রিটেনের অর্থনৈতিক চাকা স্বচল রাখতে এবং ব্যাবসা প্রতিস্ঠান কে সহযোগিতার জন্য বিনা শর্তে বাউন্স ব্যাক লোন দেওয়া হয়েছিল। এই লোন সবাইকে অবশ্যই পরিশোধ করতে হবে। তবে ব্যাবসা প্রতিস্ঠান বন্ধ থাকায় এই লোনের কিস্তি ফেক্সিবল করা হয়েছে। ব্যাবসা আবার স্বচল হলে লোনের কিস্তি পরিশোধ শুরু হবে,”।
গত বছর এই লোন দেওয়া হয়েছে সেই হিসেবে ব্যাংক থেকে এরই মধ্যে ৬০০,০০০ বিজনেস বা ব্যাবসা প্রতিস্ঠানকে চিঠি দিয়েছে।
সাধারন শর্তে ১.৪ মিলিয়ন ব্যাবসা প্রতিস্ঠানকে £৪৩ বিলিয়ন পাউন্ড বাউন্স ব্যাক লোন বা বিজনেস লোন দিয়েছে সরকার।
এই লোন নিয়ে অনেক ব্যাবসায়ী ব্যাবসাপ্রতিস্ঠান বন্ধ করে দিলেও তাদের কে আইনের আওতায় আনা হবে বলে মনে করেন সংশ্লিষ্ট অনেকে।
তবে অনেক একাউন্টেন্ট মনে করেন অতি সহজে এবং অতি দ্রুতো লোন দেওয়ার ফলে অনেকেই সুযোগের সৎব্যাবহার করেছেন। লোন তুলে নিয়ে একাউন্ট বন্ধ করে দিলেও তাদের জীবনবৃতান্তের উপর বা জন্ম তারিখের উপর ভিত্তি করেও তাদের আইনের আওতায় এনে শাস্থির ব্যাবস্থা করা হতে পারে।
আবার অনেক একাউন্টেন্ট মনে করেন এই লোন ঐ ব্যাবসায়ী পরিশোধ না করলে সরকার হয়তো এই লোন তুলার জন্য সকল ট্যাক্স পেয়ার থেকে ট্যাক্স বেশী আদায় করা হতে পারে।
ইতিমধ্যেই অনেক ব্রিটিশ বাংলাদেশী ব্যাবসায়ীদের সন্দেহ বসত তাদের ব্যাংক অ্যাকাউন্ট ফ্রিজ করা হয়েছে। এ জন্য অনেক ব্যাবসায়ী রয়েছেন আতংকে।