ছুরিকাঘাতে ব্রিটিশ এমপি স্যার ডেভিড অ্যামিসের মৃত্যু, ব্রিটেন নিরাপত্তাহীনতায় প্রতিটি নাগরিক।

মো: রেজাউল করিম মৃধা।
ব্রিটেন দিন দিন হত্যা কান্ড বেড়েই চলছে। সাধারন মানুষ থেকে পার্লামেন্টের এমপি পর্যন্ত। কেউ যেন নিরাপদ নয়। সামান্য কারনে মন:ক্ষুন্ন কিম্বা কথা কাঁটাকাঁটি অথবা হীন চরিত্র সার্থে একের পর এক হত্যাকান্ড হচ্ছে। আমরা কেউই নিরাপদ নই।
সাবিনা নেছার হত্যাকাণ্ডের রেশ কাঁটতে না কাঁটতেই যুক্তরাজ্যের ক্ষমতাসীন কনজারভেটিভ পার্টির এমপি ডেভিড অ্যামেসকে পূর্ব লন্ডনে তার নির্বাচনী এলাকায় এক বৈঠক চলাকালে ছুরি মেরে হত্যা করা হয়।
এক প্রত্যক্ষদর্শী জানায় অ্যাসেক্সের সাউথহেন্ড ওয়েস্টের জনপ্রতিনিধি ৬৯ বছর বয়সী অ্যামেস শুক্রবার দুপুরে ছুরি হামলার শিকার হন। তাকে একাধিকবার ছুরিকাঘাত করা হয়।
লে-অন-সি মেথোডিস্ট চার্চে ভোটারদের সঙ্গে বৈঠক চলার সময় এক ব্যক্তি ডেভিড অ্যামেসের ওপর হামলা চালায়।
এ ঘটনায় ২৫ বছর বয়সী এক ব্যক্তিকে গ্রেপ্তর করেছে পুলিশ। হামলায় ব্যবহৃত ছুরিটিও উদ্ধার করা হয়েছে।
অ্যাসেক্সের পুলিশ বলছে, দুপুর ১২টা ৫ মিনিটের দিকে তারা হামলার খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে এমপি ডেভিড অ্যামেসকে আহত অবস্থায় পায়। সঙ্গে সঙ্গে জরুরি চিকিৎসা দেওয়া হলেও তাকে বাঁচানো যায়নি।
১৯৮৩ সাল থেকে ব্রিটিশ পার্লামেন্টের সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করে আসা ডেভিড অ্যামেস পাঁচ সন্তানের বাবা।
তার মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করে ব্রিটিশ স্বাস্থ্যমন্ত্রী সাজিদ জাভিদ বলেছেন, “তিনি ছিলেন দারুণ একজন মানুষ, ভালো বন্ধু, ভালো একজন এমপি। নিজের গণতান্ত্রিক দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে তিনি নিহত হলেন।”
তার প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে পার্লান্টে পতাকা অর্ধনমিত রাখা হচ্ছে। ডেভিড অ্যামেস গত পাঁচ বছরের মধ্যে দায়িত্বে থাকা অবস্থায় নিহত হওয়া দ্বিতীয় ব্রিটিশ এমপি।
এর আগে ২০১৬ সালে নিহত হয়েছিলেন লেবার পার্টির এমপি জে কক্স। ওয়েস্ট ইয়র্কশায়ারের ব্রিস্টলে একটি লাইব্রেরির বাইরে তাকে হত্যা করা হয়েছিল। সেখানকার নির্বাচনী এলাকায় একটি বৈঠক করার কথা ছিল।
স্যার ডেভিড অ্যামেসকে ছুরিকাঘাতে হত্যার পর প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন বলেন,” আমাদের সমস্ত হৃদয় ঘা ও বিষাদে ভরা’।যিনি প্রায় ৪০ বছর ধরে এমপি ছিলেন, আজ বিকেলে লে অন সাগরে একটি নির্বাচনী কেন্দ্রে অস্ত্রোপচার করতে গিয়ে নিহত হন।যুক্তরাজ্য ‘একজন ভালো সরকারি কর্মচারী এবং একজন খুব প্রিয় বন্ধু এবং সহকর্মী’ হারিয়েছে । মানুষ এত মর্মাহত ও দুঃখিত হওয়ার কারণ হচ্ছে তিনি রাজনীতিতে একজন দয়ালু, সুন্দর, সবচেয়ে ভদ্র মানুষ ছিলেন,।
সবচেয়ে দুর্বলদের সাহায্য করার জন্য তার আইন পাস করার অসামান্য রেকর্ডও ছিল।আমার মনে হয় প্রত্যেকেই গভীরভাবে মর্মাহত এবং হৃদয়গ্রাহী।’
স্যার ডেভিডকে যে গির্জায় হত্যা করা হয়েছিল সেই গির্জায় হত্যার সন্দেহে ২৫ বছর বয়সী এক ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
এই ট্র্যাজেডির কারণে শুধু এমপিদের নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কা নয় প্রতিটি নাগরিক আজ নিরাপত্তা হীনতায় ভুগছেন।