ইংল্যান্ডে এনএইচএস- কঠিন সময় পার করছে।
আগামী কয়েক সপ্তাহ হবে আরো ভয়াবহ।

মো: রেজাউল করিম মৃধা।
কভিড-১৯ বা করোনাভাইরস মহামারিতে ইংল্যান্ডের এনএইচএস সব চেয়ে কঠিন সময় বা বিপদ জনক পরিস্থিতি পার করছে।এনএইচএস বা হাসপাতাল গুলি প্রতিদিন ৩০ হাজারের ও বেশী রোগীদের সেবা দিচ্ছে। অথচ গত এপ্রিলে সেবা দিয়ে ১৮ হাজার রোগীর । আগামী কয়েক সপ্তাহ পরিস্থিতি হবে আরো ভয়াবহ।
ইংল্যান্ডের প্রধান মেডিকেল অফিসার শতর্ক করে দিয়েছেন, এনএইচএস ‘সবচেয়ে বিপজ্জনক পরিস্থিতির’ মুখোমুখি হয়েছে কারণ মহামারীটি রেকর্ড মৃত্যু এবং হাসপাতালে ভর্তি বৃদ্ধির কারনে এই পরিস্থিতির সৃস্টি হয়েছে । রোগীদের সংখ্যা দিন দিন বেড়েই চলছে। সেবা দিতে হিমশিম খাচ্ছে হাসপাতাল গুলি।
এই সপ্তাহে দেশটি করোনাভাইরাস পরীক্ষা ও টিকা দেওয়ার প্রচেষ্টা অভ্যহত রয়েছে, ক্রিস হুইটি বলেছেন “যে ভাবে করোনা এড়ানো যায় তা রোধ করার একমাত্র উপায় হ’ল জনসাধারণকে যেখানেই সম্ভব বাড়িতে থাকতে হবে”।
হাসপাতালগুলি শীতকালে সর্বদা ব্যস্ত থাকে তবে দেশের কিছু অংশে এনএইচএস বর্তমানে সবচেয়ে বিপজ্জনক পরিস্থিতির মুখোমুখি হচ্ছে ।অধ্যাপক হুইটি বিবিসির সাথে বলেছেন। ‘ভাইরাস যদি এই ট্র্যাজেক্টোরিয়টিতে অব্যাহত থাকে তবে হাসপাতালগুলি সত্যই অসুবিধাগুলির মধ্যে পড়বে, খুব শীঘ্রই। ‘
ইতিমধ্যে প্রসারিত – স্টাফ-থেকে-রোগী অনুপাত এমনকি নিবিড় যত্নেও অগ্রহণযোগ্য হয়ে উঠবে।’ হাসপাতালে কোভিডের রোগীদের সংখ্যা ইংল্যান্ডে রেকর্ড সর্বোচ্চ, যখন যুক্তরাজ্যের জন্য সরকারী করোনাভাইরাস মৃত্যুর সংখ্যা গতকাল ৮০,০০০ পেরিয়েছে এবং ল্যাব – নিশ্চিত হওয়া মামলায় ত্রিশ মিলিয়নেরও বেশি ক্ষতি হয়েছে।
অধ্যাপক হুইটি কোভিডের বিস্তার রোধে তাদের প্রচেষ্টার জন্য জনগণের প্রশংসা করেছেন এবং কভিড-১৯ ভ্যাকসিনের মাধ্যমে আশার কথা উল্লেখ করেছেন, তবে তিনি বলেছিলেন যে জ্যাবরা হাসপাতালে নেওয়া লোকের সংখ্যা হ্রাস করতে বেশ কয়েকটি স্থান নির্ধারণ করেছে সরকার।
নির্ধারিত স্থান গুলি হলো, যথাক্রমে:-
১/মিলিনিয়াম পয়েন্ট , বারমিংহাম ।
২/ আস্টন গেইট , ব্রিস্টল।
৩/ এক্সেল সেন্টার , লন্ডন।
৪/ ম্যানচেস্টার টেনিস এ্যান্ড ফুটবল সেন্টার।
৫/ সেন্টার লাইভ , নিউ ক্যাসেল।
৬/ রোবের্টসন হাউজ, স্টোভেনাস।
৭/ এপসন ডাউন রিসার্চকোর্স সারি।
ভ্যাকসিন মিনিস্টার নাদিম জাহাওয়াই বলেন,”জিপি এবং এনএইচএস এর ড্যাটা অনুযায়ী ধারা বাহিক ভাবে ভ্যাকসিন কার্যকর্ম পরিচালিত হবে। করোনায় সবার জন্য সমান গুরুত্ব পাবে,”।
তিনি আরো বলেন,” ভ্যাকসিন প্রকল্প হচ্ছে এনএইচএস এর সব চেয়ে বৃহৎ প্রজেক্ট ফেব্রুয়ারির মাঝামাঝি বয়স অনুযায়ী ভ্যানেরাবল পিউপিলদের ভ্যাকসিন দেওয়া শেষ হবে,”।
স্বাস্হ্য সচিব ম্যাথ হ্যাংকক বলেন, “আরো ১০ দিন আগে থেকেই কঠিন সময় পার করছে এবং আরো কিছু সময় লাগতে পারে তবে সরকার ,এনএইচএস এবং হাসপাতাল গুলি গুরুত্ব সহকারে কাজ করে যাচ্ছে। কিন্তু হাসপাতাল গুলিতে ইতিমধ্যেই বেড সংকট দেখা দিয়েছে। এই কঠিন সময়ে সকল জনসাধারনের সহযোগিতা আশা করা হচ্ছে। সবাইকে সরকারের দেওয়া বিধিনিষেধ গুলি অবশ্য মানতে হবে,”।
মংগলবার, ৮ই ডিসেম্বর ২০২০ ব্রিটেনের জন্য ছিলো এক ঐতিহাসিক দিন। ঐ দিন ব্রিটেনের ৫৩টি হাসপাতালে এক সাথে কভিড-১৯ এর ভ্যাকসিন দেওয়া শুরু হয় বিশ্বের প্রথম দেশ হিসেবে ব্রিটেনে প্রথম ফাইজার-বায়োনট্যাকের করোনা ভ্যাকসিন।
সোমবার ৪ঠা জানুয়ারী ২০২১ অক্সফোর্ড ভ্যাকসিন দেওয়া শুরু করে ব্রিটেন এবং ৮ই জানুয়ারি অনুমোদন দেওয়া হয় মর্ডেনের ভ্যাকসিন । এর ফলে পর্যাপ্ত পরিমানে ভ্যাকসিন রয়েছে ব্রিটেনে এখন পর্যায়ক্রমে দেওয়া হলেই করোনাভাইরস মহামারিকে প্রতিহত বা নিয়ন্ত্র করা যাবে।
এনএইচএস ইংল্যান্ডের মেডিক্যাল ডিরেক্টর প্রফেসর স্টেফেন পওইস বলেন,”করোনাভাইরস টি অতিদ্রুত ছড়িয়ে যাচ্ছে।ভাইরাস প্রতিহত করতে ঘরে থাকুন সরকারের গাইড লাইন মেনে চলুন। সরকার ভ্যাকসিন দেওয়ার জন্য সব ধরনের প্রস্তুতি নিচ্ছে। যত বেশী মানুষকে ভ্যাকসিন দেওয়া যাবে ততই ভালো।বেশী বেশী ভ্যাকসিন দেওয়ার ব্যাবস্থা করতে হবে। এই ভাইরাস থেকে রক্ষার জন্য ভ্যাকসিনের বিকল্প নেই,”।
তিনি আরো বলেন,” ভ্যাকসিন নেওয়ার জন্য কেউ হাসপাতাল ফোন করবেন না।জিপি এবং এনএইচএস এর ড্যাটা অনুযায়ী আমরাই আপনাদের সাথে যোগাযোগ করবো। ঘরে থাকুন নিরাপদে থাকুন”।