আফগানিস্তানের ২০,০০০ জন শ্মরনার্থীকে ধারাবাহিক ভাবে আশ্রয় দিবে সরকার। আতংকিত বৃটেনবাসী।

মো: রেজাউল করিম মৃধা।
বিশ্বের সবার দৃস্টি এখন আফগানিস্তানের দিকে। নাটকীয় ভাবে ঘটে গেলো আফগানিস্তানের রাজনৈতিক পরিবর্তন। আফগানিস্তান থেকে বিদেশী সৈন্যদের বিদায়ের পর তালেবানের অগ্রাভিযান চলতে থাকে অতি দ্রুতগতিতে।
দেড় মাসেরও কম সময়ের এক ঝটিকা অভিযানে তারা প্রায় পুরো দেশের ওপর তাদের নিয়ন্ত্রণ কায়েম করে।
তালেবানের কাছে কাবুলের পতনের পর আফগান শরণার্থীদের জন্য সীমান্ত আইন শিথিল করতে যাচ্ছে ব্রিটেন। দেশটির প্রতিরক্ষামন্ত্রী ঘোষণা দিয়েছেন, আফগানিস্তান থেকে পালানো শরণার্থীদের পাসপোর্ট ছাড়াই গ্রহণ করা হবে।
ব্রিটিশ প্রতিরক্ষামন্ত্রী বেন ওয়ালেস জানান, পশ্চিমাদের সহযোগিতা করা আফগান দোভাষী ও ঠিকাদারদের যুক্তরাজ্যে আশ্রয় দেওয়া সহজ করতে চায় সরকার। আফগানদের দেশ ছাড়তে সহযোগিতা করা হচ্ছে। তিনি বলেন, যতটা সম্ভব তাড়াতাড়ি তাদের দেশ ছাড়ার ব্যবস্থা করা হচ্ছে। যেখানে আইন পরিবর্তন করা দরকার আমরা তা বদলাচ্ছি।
পর্যায়ক্রমে শিশু , নারী সহ ২০,০০০ শ্মরনার্থীকে ৫বৎসরে নির্দিষ্ট আইনের মাধ্যমে আশ্রয় দিবে বলে জানিয়েছেন হোম সেক্রেটারি প্রিতি প্যাটেল। তিনি বলেন,” আফগানের যুদ্ধ বিধ্বস্তের পর রিফিজি শিশু ও নরীদের পর্যায়ক্রমে ৫ বৎসর মেয়াদে একটি পরিকল্পনা গ্রহন করা হয়েছে,”।
দেশটি নতুন একটি পুনর্বাসন প্রোগ্রামের আওতায় ২০ হাজারের অধিক আফগান শরণার্থীকে আশ্রয় দেবে। এ প্রক্রিয়ায় অগ্রাধিকার পাবেন নারী, কিশোরী, ধর্মীয় ও অন্যান্য সংখ্যালঘু। শ্মরনার্থীদের আশ্রয় দেওয়ার ঘোষনায় আতংকিত বৃটেন বাসী।
হোম সেক্রেটারি প্রীতি প্যাটেল আরো বলেন, “আমি নিশ্চিত করতে চাই যে, একটি জাতি হিসেবে আমরা আফগানিস্তান থেকে পালিয়ে আসা সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ ব্যক্তিদের সহায়তা দেওয়ার জন্য যথাসাধ্য চেষ্টা করি, যাতে তারা যুক্তরাজ্যে নিরাপদে নতুন জীবন শুরু করতে পারে”।
একই ধরনের আরো একটি প্রকল্প বাস্তবায়ন করেছে ২০১৪ সালে সিরিয়া রিফিউজিদের জন্য। আফগানিস্তানের রিফিউজিদের জন্য সেই ভাবেই পরিকল্পনা গ্রহন করা হবে।
তালেবান মুখপাত্র বলেছেন, তারা শরিয়া আইনে নারীদের অধিকারের প্রতি অঙ্গীকারবদ্ধ।
শরিয়া আইন হল ইসলামের আইনি ব্যবস্থা। এটি কোরান, ইসলামের কেন্দ্রীয় পাঠ্য এবং ফতোয়া – ইসলামী পণ্ডিতদের বিধি -বিধান থেকে প্রাপ্ত।
শরিয়ার আক্ষরিক অর্থ ” সুগঠিত পথ”।
শরিয়া আইন জীবন যাপনের জন্য একটি কোড হিসাবে কাজ করে যা সকল মুসলমানদের মেনে চলতে হবে, যার মধ্যে প্রার্থনা, রোজা এবং দরিদ্রদের অনুদান অন্তর্ভুক্ত।
শরিয়া পারিবারিক আইন, অর্থ ও ব্যবসাসহ একজন মুসলমানের জন্য দৈনন্দিন জীবনের প্রতিটি বিষয় অবহিত করতে পারে।
আইনে কিছু কঠিন শাস্তিও হতে পারে।
উদাহরণস্বরূপ, চুরি করলে অপরাধীর হাত কেটে দিয়ে শাস্তিযোগ্য হতে পারে, ব্যভিচারকে পাথর মেরে মৃত্যুর শাস্তি বহন করতে হতে পারে।
তালিবান দলের মুখপাত্র বলেন,‘’আমাদের জাতিকে আমরা সবচেয়ে ভাল সেবা দেবো, পুরো জাতির জন্য প্রশান্তি নিয়ে আসবো, তাদের জীবনমানের উন্নয়নের জন্য যতদূর যা করা দরকার, আমরা তাই করবো।‘’
তালেবানের মুখপাত্র জাবিউল্লাহ মুজাহিদ আরো বলেন,“বিশ বছরের সংগ্রামের পর আমরা (দেশকে) মুক্ত করেছি এবং বিদেশিদের বহিষ্কার করেছি”।
“গোটা জাতির জন্য এটা গর্বের মুহূর্ত,”
”আফগানিস্তান যাতে একটা যুদ্ধ ক্ষেত্র বা সংঘাতের দেশ না হয় সেটা আমরা নিশ্চিত করতে চাই।”
তালেবান সরকারের ভয়ে দেশ ছেড়েছেন প্রেসিডেন্ট আশরাফ গানি। তিনি বলেন,”কাবুল ও বাসিন্দাদের ওপর হামলা এবং রক্তপাত এড়াতে দেশ ছেড়ে যাওয়া ভালো হবে বলে আমি মনে করেছি,’’।